বর্তমান সমাজে মানুষজন নানা দুশ্চিন্তায় হাবুডুবু খাচ্ছে। অফিসে কাজের চাপ, সাংসারিক ঝুটঝামেলা, সন্তান নিয়ে মহাচিন্তা, ব্যক্তিগত জীবনে অনেক কিছু না পাওয়া- এ ধরনের হাজার রকম কারণ রয়েছে টেনশনের বা দুশ্চিন্তার। এই দুশ্চিন্তা উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগে আক্রান্তের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। তাই চিকিৎসকরা টেনশন থেকে মুক্ত থাকার পরামর্শ প্রায়ই দিয়ে থাকেন। কিন্তু দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত থাকা ততটাই সহজ নয়।
একটু সচেতন হলে এবং আবেগের পাশাপাশি যুক্তি মেনে চললে দুশ্চিন্তা কাটানো খুব কঠিন কিছু নয়৷ এর জন্য নিজের মনের জোর অবশ্য থাকতে হবে, সঙ্গে সঙ্গে আরও কিছু পদক্ষেপও নিতে হবে।
মনোবিদদের মতে, অতিরিক্ত চাহিদাই যত অশান্তির কারণ৷ এ থেকেই মনে চাপ সৃষ্টি হয়। আস্তে আস্তে দুশ্চিন্তায় রূপান্তরিত হয়ে থাকে।
এখন জেনে নিন কি কি উপায়ে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত থাকা যায় :
* কোনও বিশেষ কিছু নিয়ে টেনশন হলে অস্থির হবেন না৷ যে কোনও সমস্যার গুরুত্বই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কমে থাকে৷ কাজেই এই ঘটনার গুরুত্বও কমবে৷
* নিজের কাজ করে যান৷ ফলাফল সব সময় আশানুরূপ নাও হতে পারে৷ তাই তা নিয়ে ভেঙে না পড়াই ভাল। ভাবতে থাকুন এর পরের বার ফলাফল অবশ্যই ভাল হবে।
* অনেক কিছুই আমাদের হাতে নেই৷ যে কোনও মুহূর্তে যা খুশি ঘটতে পারে৷ ওলটপালট হয়ে যেতে পারে সব৷ মনকে সেভাবে তৈরি রাখুন৷
* সবার সঙ্গে ভাল ব্যবহার করুন৷ অন্যের দুঃখে দুঃখী হওয়া, অন্যকে সম্মান করা ইত্যাদি অভ্যাস রপ্ত করতে পারলে, নিজের চেয়ে অন্যকে বেশি সময় দিলে ব্যক্তিগত দুশ্চিন্তা কম হবে।
* কী পাননি তার হিসেব না করে কী পেয়েছেন তার হিসেব করুন৷
* আদর্শ হিসেবে কাউকে বেছে নিন৷ যার জীবন যাপন, লড়াই করার ক্ষমতা, বিপদে অবিচল থাকার শক্তি আপনাকে সাহস জোগাবে৷ দুশ্চিন্তা মুহূর্তে তার সঙ্গ লাভ করুন বা তার সঙ্গে সময় কাটান।
* কেউ কিছু বলেছে শুনলেই ব্যাকুল হবেন না৷ নিজের দোষ খুঁজে তা শোধরানোর মতো হলে শুধরে নিন৷
* কিছুটা দূরত্ব রেখে মিশলে অশান্তি কম হয়৷ সম্ভব না হলে যে সম্পর্ক থেকে বা যে কারণে অশান্তি হচ্ছে সেই বিষয়টা এড়িয়ে চলুন৷
* ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে টেনশন তৈরি হলে তাকে পুরনো হতে দেবেন না৷ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সমাধানের চেষ্টা করুন৷ শান্ত থেকে কথা বলুন।
* ঈর্ষা দুশ্চিন্তার বড় কারণ৷ অনেক সময় চাহিদার কারণে ঈর্ষা চলে আসতে পারে৷ একজন কিছু পেয়েছে যা আপনি পাননি৷ কাজেই কী পাননি সেই হিসেবে না গিয়ে কী পেয়েছেন তার তালিকা বানান এবং আরও কী কী পেতে চলেছেন তার ছবি সামনে রেখে এগিয়ে চলুন৷
* কোনও ভাবনা কষ্ট দিলে তাকে কাটাছেঁড়া করুন৷ কষ্টের ব্যাপার হলে কষ্ট হবে৷ তা মেনেও নিতে হবে। যা মানতেই হবে, তার জন্য আগে থেকে ভুল ভেবে কষ্ট পেয়ে কী লাভ?
* সমাজে বা পরিবারে অন্যদের ব্যঙ্গ–বিদ্রূপ করে আনন্দ পান এমন অনেক মানুষ পাবেন। তেমন মানুষকে এড়িয়ে চলুন বা উপেক্ষা করতে শিখুন।
* রাগ পুষে রাখার অভ্যাস ছাড়তে হবে৷ কারণ এ ক্ষেত্রে ক্ষতিটা কিন্তু আপনারই৷
* পৃথিবীতে মজার জিনিস প্রচুর আছে৷ জীবনকে একটু সহজভাবে নিতে শিখলে রাগের বদলে মজা পাওয়ারই কথা৷
https://bangla-bnb.saturnwp.link/sun-skin-use/
* নিজের উপর বিশ্বাস হারাবেন না কোন ভাবেই৷ কোন মন্দ পরিস্থিতিকে বদলে দিয়ে ভাল করা যায় কি না ভাবুন, কিন্তু তা সম্ভব না হলে অকারণে সেই মন্দ পরিস্থিতির পরিণতি নিয়ে ভাববেন না। জীবন জীবনের নিয়মেই এগুবে, তাই তা নিয়ে অযথা দুশ্চিন্তা করবেন না।