ইমেইল ছাড়া আমরা একদিনও চলতে পারি না। সকল প্রয়োজনীয় কাজকর্মের ভান্ডার। কিন্তু, সেই ইমেইলটা যদি হ্যাক হয় বা ইমেইল খুলতে সমস্যা হয়,আমাদের তো মাথায় হাত। তাই এই অপ্রত্যাশিত ঝুকিঁ এড়াতে আমাদের কিছু জিনিস মাথায় রাখতে হবে সবসময়-
আমাদের খেয়াল রাখতে হবে অনলাইনে অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে, যেগুলোর হোমপেইজ দেখতে হুবহু ইয়াহু, জি-মেইল বা হটমেইলের হোমপেইজের মতো। এসব সাইট থেকে প্রথমে আপনাকে হয়তো মেইল করবে এবং সেটিংস পরিবর্তন করতে বা কোনো সেবা লগইন করতে বলবে।
অনেকেই বুঝতে পারেন না যে তিনি যে সাইটটিতে লগইন করছেন সেটি আসলে ই-মেইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের (যেমন জি-মেইল) মূল ওয়েবসাইট নয়। এসব সাইট হ্যাকাররা তাদের সার্ভারে হোস্ট করে থাকে এবং কিছু স্ক্রিপ্ট ইনস্টলও করে থাকে। এতে আপনি যখনই লগইন করার চেষ্টা করবেন, আপনার ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড হ্যাকারদের হাতে চলে যাবে। তাই লগইন করার আগে সব সময় ঠিকানাটি সতর্কভাবে দেখে নেয়া উচিত।
শক্ত পাসওয়ার্ড দিন
ই-মেইল খোলার সময় পাসওয়ার্ড নিয়ে অনেকেই দ্বন্দ্বে পড়েন আর এই কারণে সস্তা মানের সহজ পাসওয়ার্ড দিয়ে অনেকে খুলে ফেলেন তার ই-মেইল অ্যাকাউন্ট। তবে জেনে রাখা ভালো আপনি পরবর্তীতে ইচ্ছা করলেই আপনার সহজ পাসওয়ার্ড বদল করে শক্ত কোনো পাসওয়ার্ড দিতে পারেন। আর তাই সহজ কোনো পাসওয়ার্ড যেমন আপনার নাম, পরিবারের কারো নাম, জন্ম তারিখ, বাসার নম্বর ইত্যাদি ই-মেইলের পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করবেন না।
এছাড়া সহজে বোঝা যায় বা যে শব্দ ডিকশনারিতে আছে এমন শব্দও পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করা নিরাপদ নয়। কেননা হ্যাকারদের সফটওয়্যারে এমন লাখ লাখ শব্দ আছে যেগুলো দিয়ে আপনার অ্যাকাউন্টে ঢোকার চেষ্টা করা হতে পারে। অতএব, অক্ষর ও সংখ্যার এলোমেলো সংমিশ্রণে কেবল আপনার মনে থাকবে এমন পাসওয়ার্ড দিন। সম্ভব হলে মাঝেমধ্যে পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করুন।
তথ্য গোপন রাখুন
সামাজিক যোগাযোগের সাইট বা অন্য কোথাও নিজের একান্ত ব্যক্তিগত তথ্য যেমন জন্ম তারিখ, জন্মস্থান ইত্যাদি প্রকাশ করা উচিত নয়। ই-মেইল ঠিকানা নিবন্ধনের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা প্রশ্ন হিসেবে অনেকে এ ধরনের তথ্য দিয়ে থাকেন, যেগুলো ব্যবহারকারীর সামাজিক যোগাযোগ সাইটে খোঁজ করলেই পাওয়া যায়। ফলে হ্যাকাররাও সহজেই ওই ই-মেইল ঠিকানা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেন।
অন্যের কম্পিউটার ব্যবহার বাদ দিন
তাই নিজের কম্পিউটার ছাড়া অন্য কোনো কম্পিউটার থেকে ই-মেইলে লগইন করা নিরাপদ নয়। আর যদি সাইবার ক্যাফে বা পাবলিক প্লেসের কোনো কম্পিউটার হয়, তাহলে তো ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। পারতোপক্ষে আপনার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ই- মেইল অ্যাকাউন্টটি অন্যের কম্পিউটার থেকে লগইন করা থেকে বিরত থাকুন। কারণ কম্পিউটারে এমন অনেক সফটওয়্যার আছে, যেগুলো ব্যবহারকারী কিছু টাইপ করার সঙ্গে সঙ্গেই নির্দিষ্ট ড্রাইভে সেভ করে রাখে। ব্যবহারকারী তার ই-মেইল ঠিকানা এবং পাসওয়ার্ড লেখার সঙ্গে সঙ্গে সেটিও সেভ হয়ে যায়। এ জন্য নিজের কম্পিউটার ছাড়া অন্য কম্পিউটার থেকে লগইন না করাই উত্তম।
অ্যাটাচ ফাইল বুঝে-শুনে ডাউনলোড
ই-মেইল অ্যাকাউন্ট হ্যাক করার অন্যতম মাধ্যম হলো কম্পিউটারে ক্ষতিকর অ্যাপ্লিকেশন ঢুকিয়ে পাসওয়ার্ডসহ অন্যান্য তথ্য চুরি করা। এ ধরনের পদ্ধতিতে অ্যাকাউন্ট হ্যাক করার জন্য প্রথমে ব্যবহারকারীর মেইল ঠিকানায় ‘অ্যাটাচ ফাইলসহ বেশ কিছু বার্তা লিখে পাঠানো হয়।
অ্যাটাচ ফাইলটিকে জরুরি কোনো ডকুমেন্ট হিসেবে হয়তো দেখানো হয়। ব্যবহারকারীরা কিছু না বুঝেই এটি ডাউনলোড করেন। ফাইল ডাউনলোড হওয়ার পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে এটি রান হতে পারে এবং কম্পিউটারের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচার করতে পারে। এ জন্য অপরিচিত কোনো মেইল অ্যাকাউন্ট থেকে অ্যাটাচ ফাইল এলে সেটি অনেক বুঝে-শুনে ডাউনলোড করতে হবে।
পর্ণো থেকে সাবধান
আপনি ই-মেইল করেননি এমন কারো কাছ থেকে যখন ই-মেইল পাবেন তখন সেখানকার তথ্য সতর্কতার সঙ্গে বাছাই করুন। কোনো লিংক অথবা ফাইল থাকলে তা খোলার আগে নিরাপত্তার কথা ভাবুন। কোনো চটকদার বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হবেন না। অনেক সময় লিংক দিয়ে বিভিন্ন পুরস্কার বা ‘হট ছবি/ভিডিও’র কথা বলা হয়। এগুলো মূলত হ্যাকারদের পাতা ফাঁদ।
জি-মেইলের ‘অ্যাকটিভিটি মনিটর’
আপনার মেইল কখন কোথায় কিভাবে লগইন হচ্ছে সেটি মনিটর করার সুযোগ দেয় জি-মেইল। এ জন্য জি-মেইলে লগইন থাকা অবস্থায় পৃষ্ঠার একেবারে নিচে ‘লাস্ট অ্যাকাউন্ট অ্যাকটিভিটি’ লেখার পর ‘ডিটেইলস’ বাটনটিতে ক্লিক করুন। পপ-আপ উইন্ডো আসবে যেখানে সর্বশেষ কয়েকটি আইপি ঠিকানা থাকবে, যেগুলো থেকে আপনার জি-মেইলে ঢোকা হয়েছে। যদি আনকোরা নতুন কোনো আইপি থেকে লগইন করা হয়, তাহলে তা লাল রঙে মার্ক করা থাকবে। এছাড়া একই সময় যদি অন্য কেউ আপনার অ্যাকাউন্টে লগইন করে থাকেন, তার আইপিও আপনি দেখতে পারবেন এবং তাকে সাইন আউট করাতে পারবেন। অ্যাকটিভিটিতে অন্য কারো অনুপ্রবেশ দেখতে পেলে অবিলম্বে পাসওয়ার্ড বদলে ফেলুন।
https://bangla-bnb.saturnwp.link/%e0%a6%87%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%9f%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a6%a8%e0%a7%87%e0%a6%9f-%e0%a6%85%e0%a6%ab-%e0%a6%a5%e0%a6%bf%e0%a6%82%e0%a6%b8-iot-%e0%a6%93-%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%b0/
স্প্যাম থেকে নিরাপদ
স্প্যামাররা বহুভাবেই আপনার মেইল ঠিকানা পেতে পারে। ইন্টারনেটে এমন অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে, যাদের কাজ হচ্ছে ই-মেইল ঠিকানা কেনাবেচা করা। অনলাইন ফোরাম বা ওয়েবসাইটে যখন ই-মেইল ঠিকানা লেখা হয় তখন ‘ই-মেইল হান্টার’ সফটওয়্যার এসব ই-মেইল ঠিকানা সংগ্রহ করে এবং অন্যদের কাছে পাচার করে। এ জন্য যেখানে-সেখানে ই-মেইল ঠিকানা প্রকাশ করা উচিত নয়।