ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি বা ভিএআর ফুটবল বিশ্বের অন্যতম আলোচিত প্রযুক্তির একটি। এটি যেমন ফুটবল ম্যাচে কোনো সংশয়পূর্ণ বিষয়ে নির্ভুল সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করে, তেমনি ভিএআর নিয়ে বিতর্কও রয়েছে। সে কারণে এই প্রযুক্তি বাতিলের দাবিও উঠেছে বিভিন্ন দেশে। তারই ধারাবাহিকতায় বিশ্বের প্রথম কোনো দেশ হিসেবে ভিএআর প্রযুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নরওয়ে।
গতকাল (বুধবার) ভিএআর রাখা নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে ভোট দিয়েছে দেশটির প্রথম দুই বিভাগের ক্লাবগুলো। যেখানে ৩২টির মধ্যে ১৯টি ক্লাবই এই প্রযুক্তির বিপক্ষে ভোট দেয়। এর আগে প্রায় ৪ মাস নরওয়েজিয়ান ফুটবল ফেডারেশন (এনএফএফ) স্বদেশি ক্লাব, ফুটবলার ও সমর্থকগোষ্ঠীর সঙ্গে বিবাদমান বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করে। পরবর্তী ক্লাবগুলোর অংশগ্রহণে নেওয়া হয় ভিএআর রাখার পক্ষে-বিপক্ষে ভোট।
তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে আর মাস দুয়েক অপেক্ষা করতে হবে দেশটিকে। সূত্রের বরাতে ইএসপিএন জানিয়েছে, এনএফএফ আগামী মার্চে ভিএআর নিয়ে চূড়ান্ত নিতে পারে। এ ছাড়া ফেডারেশনের গভর্নিং বডি চাইলে এখনও বাতিল করতে পারে সেই ভোট। নরওয়ের প্রথম বিভাগ ‘এলিটসারিন’ ২০২৩ সাল থেকে ভিএআর প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসছে। কিন্তু দেশজুড়ে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে ফুটবলভক্তরা। এমনকি ম্যাচ চলাকালে টেনিস বল, কেক ছুড়ে মেরেও তারা ভিএআরের বিরুদ্ধে অবস্থানের কথা জানান দেয়।
চলতি মৌসুমের শুরুতে রোসেবার্গ বনাম লিলেস্ট্রমের মধ্যকার একটি ম্যাচ বাতিল হয়ে যায় দর্শকরা মাঠে মাছের তৈরি কেক ছুড়ে মারলে। আরেকটি ম্যাচে বিঘ্ন ঘটে শ্যাম্পেনের মুখ, এক ধরনের রুটি এবং টেনিস বলের নিক্ষেপের কারণে। পরবর্তীতে তাদের সঙ্গে ভিএআর নিয়ে যোগাযোগ চালিয়ে যায় নরওয়ের ফুটবল কর্তৃপক্ষ।
এর আগে একই দাবিতে গত বছরের জুনে ভিএআরের পক্ষে-বিপক্ষে ভোটের আয়োজন করেছিল ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব উলভস। তবে সেই ভোটে ১৯-১ ব্যবধানে জয়ী হয় ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি। ফলে উলভসেরও প্রত্যাশা পূরণ হয়নি।
চার মাস পর আন্তর্জাতিক ম্যাচে আমিরাতের বিপক্ষে মাঠে নামবেন সাবিনারা
এর আগে ক্লাব, সমর্থক, রেফারি থেকে শুরু করে সাধারণ দর্শক—সবার কাছে রেফারির সিদ্ধান্ত যতটা সম্ভব গ্রহণযোগ্য করে তুলতে ফুটবলে ভিএআর ব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল। ফুটবলের আইন ও বিধি প্রণয়নের দায়িত্বে থাকা ইন্টারন্যাশনাল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন বোর্ড (আইএফএবি) এটিকে ফুটবল আইনে যুক্ত করে ২০১৮ সালে। কিন্তু অর্ধযুগের পথচলায় ভিএআরের আওতা ও ব্যবহার বাড়লেও রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক কমেনি। বরং ভিএআর সংযোজনের পর ভুলের সংখ্যা যতটা না কমেছে, তার চেয়ে বেশি এর ভুল ও অসংগতি নিয়ে সমালোচনা বেড়েছে।