রং ফর্সা করার কথিত ক্রিম ‘ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি’ থেকে ‘ফেয়ার’ শব্দটি বাদ পড়েছে। এই খবরে বিপাশা বসু, রিচা চাড্ডাসহ বলিউডের ‘কালো মেয়ে’রা আবেগে ভেসেছিলেন। তবে নেটিজেনদের কেউ কেউ আড়ালে মুখ টিপে হেসেছিলেন।
এর কারণ কী? জবাব হলো, কালো থেকে ফর্সা হতে ভারতীয় অনেক তারকাই যে স্ক্রিন লাইটেনিং অপারেশন করিয়েছেন, তা সবারই জানা। বিশেষ করে বলিউডে গায়ের রং যোগ্যতার মাপকাঠি কি-না সেই প্রশ্নও তুলেছেন অনেকে।
তাহলে এক নজরে দেখে নেয়া যাক, কালো থেকে ফর্সা হওয়ার দৌড়ে নাম লিখিয়েছিলেন কোন কোন তারকা।
শ্রীদেবী
বলিউডের প্রথম সুপারস্টার নায়িকা বলা হয় তাকে। জলবায়ুগত কারণেই দুধে আলতা রং ছিল না শ্রীদেবীর। তার কেরিয়ারের প্রথম দিকের ছবিগুলো দেখলেই খানিক ঠাওর করা যায়। যত দিন এগিয়েছে শ্রীদেবীর গায়ের রংও বদলেছে। শোনা যায়, ফর্সা হওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে গেছেন তিনিও। যদিও শ্রীদেবী নিজে কখনো তা স্বীকার করেননি।
রেখা
পুরুষ হৃদয়ে হিল্লোল তোলা এই অভিনেত্রী এভারগ্রিন। তার কারিশমায় মুগ্ধ আট থেকে আশি। কিন্তু ইন্ডাস্ট্রির অন্দরের খবর, ফর্সা হওয়ার অমোঘ আকর্ষণ নাকি উপেক্ষা করতে পারেননি তিনিও! রেখার প্রথম দিকের ছবি এবং পরের ছবিগুলোর তুলনা করলে স্পষ্টতই গায়ের রঙের পার্থক্য চোখে পড়বে। নিজের আসল গায়ের রং ঢাকতে নিতে হয়েছিল চিকিৎসা বিজ্ঞানের সাহায্য। এ নিয়ে মুখ খোলেননি রেখা। তবু চোখকে তো আর অবিশ্বাস করা যায় না।
কাজল
ফিল্মি পরিবার থেকে উঠে আসা কাজল নিজের অভিনয়ের দক্ষতার জোরে খুব সহজেই ভক্তদের মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন। কালো রং, জোড়া ভুরু আর সাবলীল অভিনয়ই ছিল তার ইউএসপি।
কিন্ত ‘কাভি খুশি কাভি গম’ ছবি থেকেই কাজলকে দেখা যায় আগের থেকে অনেকটাই ফর্সা হয়ে গেছেন! কীভাবে? তিনিও কি তবে…? কাজল বলেছিলেন, একেবারেই নয়। মেকআপের জন্য এমনটা মনে হয়েছে। কাজলের কামব্যাক ছবি ‘দিলওয়ালে’তে তার লুক কিন্তু বলেছিল অন্য কথা।
দীপিকা পাড়ুকোন
বলিউডে নায়িকাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পান তিনিই। তার ফ্যান-ফলোয়ারের সংখ্যা আকাশছোঁয়া। বারেবারেই নিজেকে সুদক্ষ অভিনেত্রী হিসেবে প্রমাণ করেছেন তিনি। কিন্তু বলিপাড়ার অন্দরের গুঞ্জন, সিনিয়রদের পথেই নাকি হেঁটেছেন এই সুন্দরী।
দীপিকা মানতে চাননি, তবে তার মডেলিং জীবনের ছবি আর এখনকার ছবির মধ্যে রয়েছে বিস্তর ফারাক। নিজের বক্তব্যকে স্পষ্টভাবে তুলে ধরা দীপিকাও কী করে এই ফর্সা হওয়ার মোহ থেকে বেরতে পারলেন না, প্রশ্ন অনুরাগীদের।
বিপাশা বসু
ইনস্টাগ্রামে ‘ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি’ ক্রিম থেকে ‘ফেয়ার’ কথাটি উঠে গেছে দেখে আবেগতাড়িত হয়ে একটি পোস্ট করেছেন বিপাশা। কীভাবে তার সেক্সিনেসকে রঙের সঙ্গে জুড়ে দিয়ে বলিউড তার গায়ে ‘ডাস্কি’ লেবেল সেঁটে দিয়েছিল, তা নিয়ে সরব হয়েছেন তিনিও। কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার হলো, বিপাশা নিজেও কিন্তু বলিউডের এই দ্বিচারিতার শিকার। ফর্সা হতে স্কিন লাইটেনিং করিয়েছেন তিনিও।
প্রিয়াঙ্কা চোপড়া
সারা বিশ্ব আজ তাকে চেনে। একদা মিস ওয়ার্ল্ড প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার এখনকার লুক আর আগের লুকের মধ্যে আকাশ-পাতাল ফারাক। অনেকেই বলেন, নোজ জব করিয়েছেন তিনি। আর স্কিন লাইটনিং? সেদিকেও নাকি হাত বাড়িয়েছেন এই অভিনেত্রী।
ফর্সা হওয়ার এই পন্থা বেছে নিতে নায়িকাদের সঙ্গে রয়েছেন বেশ কিছু নায়কও। দক্ষিণী তারকা রজনীকান্ত, নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকীও নাকি হেঁটেছেন এই পথে। ‘ফেয়ার’ কথাটা ক্রিম থেকে উঠলেও বলিউডে সৌন্দর্যের সংজ্ঞাও কি বদলে গেছে?