গুগল সার্চের খারাপ ব্যবহারের পরিণতি হতে পারে মারাত্মক। খোয়াতে হতে পারে সর্বস্ব। এমনকি হাজতবাসও হতে পারে। তাই এই বিষয়ে আমাদের প্রত্যেকের সতর্ক থাকা প্রয়োজন। জেনে নিন বিশদে।
গুগল সার্চ মানেই সব সমস্যার মুশকিল আসান। এই একটি স্থানে আসলেই মেলে সব প্রশ্নের উত্তর। সত্যি বলতে, আমাদের সকলের জীবনের সঙ্গে যেন জড়িয়ে গিয়েছে এই সার্চ ইঞ্জিন। আর তাই গুগলের বিভিন্ন দিক আরও বেশি করে আমাদের জেনে রাখা প্রয়োজন।
কোনও এক সুপারহিরো সিনেমায় বলা হয়েছিল, অনেক বেশি শক্তি থাকলে, অনেক বেশি দায়িত্বও এসে যায়। কিন্তু সত্যি বলতে, গুগলের এই ক্ষমতার অপব্যবহারও করেন অনেকে। আবার অনেকে এই প্রযুক্তিগত শক্তির ভুল ব্যবহার করে ফেলেন।
এই ধরণের ব্যবহারের পরিণতি হতে পারে মারাত্মক। খোয়াতে হতে পারে সর্বস্ব। এমনকি হাজতবাসও হতে পারে। তাই এই বিষয়ে আমাদের প্রত্যেকের সতর্ক থাকা প্রয়োজন। তাই আজ থেকে অবশ্যই জেনে রাখুন এই বিষয়গুলি। Google-এ ভুলেও এই ৮টি বিষয়ে কখনও সার্চ করবেন না। নয় তো ভয়ঙ্কর পরিণতি হতে পারে।
১. কাস্টমার কেয়ার নম্বর : অনলাইনে কোনও ই-কমার্স সাইট থেকে কোনও জিনিস কিনেছেন। সেটি রিটার্ন করেছেন। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রিফান্ড পাওয়ার কথা। কিন্তু টাকা ফেরত আসেনি। এমন অবস্থায় কাস্টমার কেয়ারে ফোন করাটাই একমাত্র অপশন। কিন্তু সেই নম্বর পাবেন কোথায়?
এমন অবস্থায় গুগল সার্চ করে কাস্টমার কেয়ার নম্বর খোঁজেন অনেকে। কিন্তু সেটা যে কতটা বিপদজনক হতে পারে, তা কল্পনাও করতে পারবেন না। ই-কমার্স সংস্থার আদলেই নকল ওয়েবসাইট খোলে প্রতারকরা। সেখানে থাকে ভুয়ো নম্বর। এদিকে সেটাই কাস্টমার কেয়ারের নম্বর হিসাবে ফোন করে ফেলেন অনেকে। আর তাতেই প্রতারকদের কেল্লা ফলে। কাস্টমার কেয়ার এক্সিকিউটিভের পরিচয় দিয়ে ব্যাঙ্ক ডিটেইলস চেয়ে নেওয়া হয়। আর সেই ফাঁদ পেতেই ফাঁকা করে দিচ্ছে অ্যাকাউন্ট। ফলে গুগলে কখনই কাস্টমার কেয়ার নম্বর সার্চ করবেন না।
২. পর্নোগ্রাফি : অনলাইনে চাইল্ড, মাইনর পর্নোগ্রাফির বিরুদ্ধে কড়া আইন আছে ভারতে। ফলে এই ধরনের ঘৃণ্য সার্চ অপরাধপ্রবণ মানসিকতা হিসাবে গণ্য করা হয়।
৩. ওষুধ ও চিকিত্সা : আর যা-ই হোক, গুগল সার্চ করে ডাক্তারি করতে যাবেন না। একটি সামান্য ওষুধ প্রেসক্রাইব করার পেছনে চিকিত্সকদের বছরের পর বছরের পড়াশোনা ও অভিজ্ঞতা থাকে। তাই ব্যাপারটা এতটা সহজ নয়। অল্প শরীর খারাপের ক্ষেত্রে সুশ্রষা, প্রাথমিক চিকিত্সা, পথ্য- ইত্যাদি জানতেই পারেন। কিন্তু গুগল সার্চ করে ওষুধ, সাপ্লিমেন্ট কেনা মোটেও বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
৪. ব্যাঙ্কিং : ব্যাঙ্কের ওয়েবসাইট সবসময়ে সঠিক URL টাইপ করে খোলাই ভাল। গুগলে সার্চ করে ব্যাঙ্কের ওয়েবসাইট খোলা মোটেও নিরাপদ নয়। প্রতারকরা অনেক সময় ব্যাঙ্কের ওয়েবসাইটে হুবহু প্রতিলিপির মতো একটি নকল ওয়েবসাইট বানিয়ে রাখে। সেখানে গিয়ে সমস্ত তথ্য দিয়ে লগ ইন করতে গেলেই তারা আইডি, পাসওয়ার্ড পেয়ে যায়। তারপর অ্যাকাউন্ট থেকে সর্বস্ব হাতিয়ে নেয়।
৫. কোনও সন্ত্রাসবাদী সংগঠনে যোগদানের পদ্ধতি : কোন সন্ত্রাসবাদী সংগঠনে যোগদানের পদ্ধতি ভুলেও গুগল সার্চ করবেন না। এর ফলেও সরকারি নিরাপত্তা সংস্থার নজরে আসতে পারেন।
৬. অ্যাপ ও সফটওয়্যার : গুগল সার্চ করে কোনও অজানা ওয়েবসাইট থেকে অ্যাপ ও সফটওয়্যার ইনস্টল না করাই ভাল। অজানা apk ফাইল ডাউনলোড করা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ একটি বিষয়। অ্যাপের রূপে ফোনে ঢুকে পড়তে পারে ম্যালওয়্যার। ফোন স্লো হয়ে যাবে। সেই সঙ্গে আপনার ব্যক্তিগত তথ্যও হাতিয়ে নেওয়া হতে পারে।
৭. বোমা তৈরি : বোমা তৈরির পদ্ধতি গুগলে সার্চ করলে তার খবর যেতে পারে সরকারি নিরাপত্তা সংস্থার কাছে।
৮. শেয়ার বাজার, ট্রেডিং-এর পরামর্শ : অনলাইনে অনেকেই শেয়ার বাজার সংক্রান্ত নানা ‘বুদ্ধি’ দেন। গুগলে সার্চ করলে এমন হাজারো ওয়েবসাইট পাবেন। কিন্তু সেগুলি অন্ধ বিশ্বাস না করাই ভাল। বিভিন্ন ভুয়ো সংস্থা ক্রিপ্টোকারেন্সি, ট্রেডিংয়ের নাম করে প্রতারণার ফাঁদ পাতে। ফলে সেগুলিতে সর্বস্ব হারাতে পারেন। কেবলমাত্র সুপরিচিত বিশ্বাসযোগ্য সাইট থেকে শেয়ার বাজার সংক্রান্ত তথ্য নিন। সিদ্ধান্ত নিজে বা আপনার পরামর্শদাতার সঙ্গে আলোচনা করে নেবেন।