গর্ভাবস্থায় নারীদের অনেক সচেতন থাকতে হয়। কারণ এ সময়ে তার সঙ্গে জড়িত আরেকটি জীবন। তাই নিজের স্বাস্থ্যের সঙ্গে চিন্তা করতে হয় অনাগতেরও। এই সময়ে অতিরিক্ত তেল-চর্বি ও চিনিযুক্ত খাবার খাওয়া ঠিক নয়। এগুলোতে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানের অভাব থাকে। অন্যদিকে এতে স্যাচুরেটেড বা ক্ষতিকর ফ্যাট থাকতে পারে।
এসব খাবার বেশি খেলে ওজন বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি হার্টের নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। এ ছাড়া অতিরিক্ত চিনিজাতীয় খাবার খেলে দাঁত ক্ষয় হয়।
তাই এ সময় কিছু খাবার খাওয়া বন্ধ করতে হবে। সেগুলো হচ্ছে–
মাখন
ঘি-ডালডা
ক্রিম
চকোলেট
ভাজাপোড়া
চিপস
বিস্কুট
কেক
পেস্ট্রি
আইসক্রিম
পুডিং
কোমল পানীয়
এ ছাড়া এগুলো সাধারণত ক্যালরিবহুল হয়। ফলে একদিকে যেমন প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাব দেখা দিতে পারে, তেমনি অন্যদিকে ওজন বেড়ে গিয়ে গর্ভকালীন ডায়াবেটিসসহ আপনার ও গর্ভের শিশুর স্বাস্থ্যের মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।
গর্ভাবস্থায় এই ধরনের খাবার যতটুকু না খেলেই নয়, ঠিক ততটুকুই খাবেন। এগুলোর পরিবর্তে পর্যাপ্ত ফাইবার সমৃদ্ধ শর্করা বেছে নিন। যেমন : লাল আটার রুটি ও লাল চালের ভাত। সেই সঙ্গে খাবারের তালিকায় কিছু পরিমাণে স্বাস্থ্যকর তেলযুক্ত খাবার রাখবেন। যেমন : অলিভ অয়েল, বিভিন্ন ধরনের বাদাম এবং ইলিশ, পুঁটি ও চাপিলার মতো তৈলাক্ত মাছ।
এ সময়ে কিছু কিছু খাবার খাওয়া পুরোপুরিভাবে বাদ দিতে হবে। কেননা এসব খাবার আপনার গর্ভের শিশুর ক্ষতি করতে পারে। যেমন—
গরু, ছাগল ও ভেড়ার অপাস্তুরিত দুধ
অপাস্তুরিত দুধ দিয়ে তৈরি সব ধরনের খাবার
কাঁচা অথবা ভালোভাবে সিদ্ধ না হওয়া মাছ, মাংস, ডিম ও দুধ
কাঁচা অথবা অর্ধসিদ্ধ সামুদ্রিক মাছ দিয়ে তৈরি খাবার।
ভালোভাবে সিদ্ধ না হওয়া ফ্রোজেন বা প্রক্রিয়াজাত মাংস। যেমন : সসেজ, সালামি ও পেপারনি
চা-কফি
এনার্জি ড্রিংক ও ক্যাফেইনযুক্ত কোমল পানীয়
অ্যালকোহল জাতীয় পানীয়
অ্যালার্জি হয় এমন কোনো খাবার। যেমন : চিনাবাদাম
হারবাল বা ভেষজ ওষুধ
চিকিৎসকদের মতে, গর্ভাবস্থায় বেশি কলিজা খাওয়া এড়িয়ে চলবেন। কেননা কলিজাতে অনেক ভিটামিন ‘এ’ থাকে। আর অতিরিক্ত ভিটামিন ‘এ’ গর্ভের শিশুর জন্য ক্ষতিকর। তবে মাঝেমধ্যে ৫০-৭০ গ্রাম রান্না করা কলিজা খাওয়া যেতে পারে। এই পরিমাণে কলিজা খাওয়া গর্ভের শিশুর জন্য তেমন ঝুঁকির কারণ নয়। কলিজা গর্ভাবস্থার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ফলিক এসিড ও আয়রনের ভালো উৎস।