ইরান মঙ্গলবার রাতে ইসরাইলে ১৮১টি রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে ইসরাইলের প্রায় এক কোটি লোক বোমা আশ্রয়কেন্দ্রে চলে গেছ। তবে ইসরাইল দাবি করেছে, বেশিভাগ ক্ষেপণাস্ত্র আকাশেই বিধ্বস্ত করা হয়েছে। একইসাথে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু প্রতিশোধ গ্রহণের হুঙ্কার দিয়েছেন। তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, জাপানসহ বেশ কয়েকটি দেশ ইসরাইলের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেছে।
হামলার পরপরই নেতানিয়াহু তেহরানকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন যে সে ‘একটি বড় ভুল’ করেছে এবং তাকে ‘এর মূল্য চোকাতে হবে।’
তিনি বলেন, ইরানের শাসকরা নিজেদের আত্মরক্ষা করার এবং আমাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ গ্রহণেরর ব্যাপারে আমাদের দৃঢ়প্রত্যয় বোঝেনি। হামাস নেতা সিনওয়ার আর কমান্ডার মোহাম্মদ দেউফও বোঝেনি। হিজবুল্লাহ নেতা নাসরুল্লাহ আর কমান্ডার শুকরও বোঝেনি। আর সম্ভবত তেহরানের ওই লোকগুলোও বোঝেনি।
তিনি বলেন, তারা এবার বুঝবে। আমাদের ওপর যেই আক্রমণ করবে, আমরা তাদের ওপর হামলা করব।
ইসরাইলি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইরান প্রায় ১৮১টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। তারা এগুলোর একটি বড় অংশকে আটকে দিয়েছে।
ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ থেকে পশ্চিম তীরে এক ফিলিস্তিনি নিহত এবং দুই ইসরাইলি আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
হামলার শব্দ জেরুসালেম থেকে জর্ডান উপত্যকা পর্যন্ত ইসরাইলের বেশিভাগ অংশজুড়ে শোনা গেছে। লাইভ সম্প্রচারের সময় রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের সাংবাদিকরা শুয়ে পড়েন।
একটি রকেট মধ্য ইসরাইলের একটি স্কুলে আাত হানে। ছবিতে দেখা যায়, এতে স্কুলটির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
ইরান জানিয়েছে, তারা হিজবুল্লাহ, হামাস ও ইরানি সামরিক কর্মকর্তাদের হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে এই হামলা চালিয়েছে। তারা হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহ এবং ইরানি রেভ্যুলশনারি গার্ডের জেনারেল আব্বাস নিলফোরুশানের কথা উল্লেখ করেন। উভয়ে গত সপ্তাহে বৈরুতে ইসরাইলি বিমান হামলায় নিহত হন। এতে জুলাই মাসে তেহরানে হামাসের শীর্ষ নেতা ইসমাইল হানিয়ার হত্যার কথাও উল্লেখ করে।
ইরানের রেভ্যুলশনারি গার্ড জানিয়েছে, তারা ইসরাইলের তিনটি সামিরক ঘাঁটিকে টার্গেট করেছে।
ইরানের এক সিনিয়র কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়তুল্লাহ আলী খামেনির নির্দেশে এই হামলা চালানো হয়। আর খামেনি এখন নিরাপদ অবস্থানে রয়েছেন।
গত এপ্রিলে প্রথমবারের মতো ইরান থেকে ইসরাইলে হামলা চালানো হয়েছিল। তাতে ৩০০ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন নিক্ষেপ করা হয়েছিল। তবে মার্কিন সামরিক বাহিনী ও তাদের মিত্রদের সহায়তায় বেশিভাগকে থামিয়ে দেয়া হয়েছিল। ওইবারও ইসরাইল প্রতিশোধ নিয়েছিল। তবে তা প্রতীকী ছিল। ফলে বৃহত্তর উত্তেজনা প্রশমিত হয়েছিল।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইরানি হামলা মোকাবেলায় ইসরাইলের প্রতিরক্ষায় সহায়তা করার জন্য মার্কিন সামরিক বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন।
বাইডেন এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস হোয়াইট হাউসের সিচুয়েশন রুম থেকে হামলা পর্যবেক্ষণ করেন।