জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন দেশটির প্রবীণ আইনপ্রণেতা ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী শিগেরু ইশিবা। জাপানের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এলডিপি) শুক্রবার তাকে নতুন নেতা হিসেবে বেছে নিয়েছে। এলডিপি পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হওয়ায় এই দলের নেতা হিসেবে যিনি নির্বাচিত হন, তিনিই হন দেশের প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার স্থলাভিষিক্ত হবেন নতুন নেতা। জাপানে দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকা এলডিপির নেতৃত্ব দেবেন তিনি।
ইশিবা রান-অফ (দ্বিতীয় দফা) ভোটে কট্টর জাতীয়তাবাদী সানায়ে তাকাইচিকে পরাজিত করে জয় পান। প্রায় ৯ জন পদপ্রার্থী ছিলেন লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) শীর্ষ নেতা হওয়ার দৌড়ে। কয়েক দশকের মধ্যে রেকর্ড প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এই নির্বাচনকে সবচেয়ে অনিশ্চিত এক নির্বাচন বলেই গণ্য করা হয়েছিল।
এলডিপির প্রধান কার্যালয় টোকিওয় শুক্রবার নতুন নেতা নির্বাচনে ভোট দেন দলটির আইনপ্রণেতা ও আঞ্চলিক নেতারা। ইশিবার পক্ষে পড়ে ২১৫ ভোট। আর তার প্রতিপক্ষ তাকাইচি পান ১৯৪ ভোট। বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা দলের তহবিল কেলেঙ্কারি এবং জনপ্রিয়তায় ধসের মুখে গত অগাস্টে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিলেন। ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) নেতা হিসেবে তিনি পুনর্নির্বাচিত হওয়ার চেষ্টা করবেন না বলেও জানিয়েছিলেন।
তার সরে যাওয়ার ঘোষণায় এলডিপি পার্টিতে নতুন দলীয় প্রধান ও এর ধারাবাহিকতায় দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রতিযোগিতা শুরু হয় তখন থেকেই। রয়টার্স তখন জানিয়েছিল, সেপ্টেম্বরে এলডিপির নতুন একজন নেতা নির্বাচিত হওয়ার পর কিশিদা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যাবেন। মূলত দুর্নীতির কেলেঙ্কারিতে এলডিপির জড়িয়ে পড়া, বাড়তে থাকা জীবনযাত্রা ব্যয় ও ইয়েনের মান পড়ে যাওয়ার মতো কয়েকটি কারণে কিশিদার জনসমর্থন তলনীতে নেমেছে। গত মে মাসে তার পক্ষে জনসমর্থন নেমে মাত্র ১৫ দশমিক ৫ শতাংশে দাঁড়ায়। এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে জাপানে কোনো প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সর্বনিম্ন জনসমর্থন এটি।
তার জায়গায় আসতে চলা নতুন নেতা শিগেরু ইশিবা এর আগে ২০১২ সালেও প্রধানমন্ত্রিত্বের জন্য লড়েছিলেন। সেবার জাতীয়তাবাদী নেতা শিনজো আবের কাছে তিনি পরাজিত হন। সবচেয়ে দীর্ঘ সময় জাপানের নেতৃত্ব দেয়ার পর আততায়ীর হাতে নিহত হন আবে। ইশিবা দাবি করেছেন, কৃষি খাতের সংস্কারসহ আরো জটিল সামাজিক সমস্যার সমাধান করে তিনি নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন। ইশিবা নতুন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার পর তাকে চীনের কাছ থেকে আসা আঞ্চলিক নিরাপত্তা হুমকির মুখোমুখি হতে হবে। পাশাপাশি জাপানের অর্থনীতিতে নতুন করে প্রাণ ফিরিয়ে আনার দুরূহ দায়িত্ব বর্তাবে তার ওপর।