একসময় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ক্ষমতা সেখানকার রাজাদের হাতে থাকতো। তবে রাজার অকাল মৃত্যু হলে সেই রাজ পরিবারের জ্যেষ্ঠ পুত্র বা জ্যেষ্ঠ কন্যা সিংহাসন দখলের সুযোগ পেতেন। কিন্তু ইতিহাসে এমনই এক রানী ছিলেন, যিনি তার প্রজা ও রাষ্ট্রের চেয়ে নিজেকে নিয়ে বেশি চিন্তিত ছিলেন। এই রানী নিজের সৌন্দর্য ও যৌবন ধরে রাখতে গাধার দুধ দিয়ে স্নান করতেন।
এখানে মিশরের রানী ক্লিওপেট্রার কথা বলা হয়েছে। তাকে ইতিহাসের সবচেয়ে চতুর, বুদ্ধিমান এবং সুন্দরী রানী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যিনি ৫১ খ্রিস্টপূর্ব থেকে ৩০ খ্রিস্টপূর্ব পর্যন্ত রাজত্ব করেছিলেন। ক্লিওপেট্রা তার বিচক্ষণ ও কৌশল দিয়ে মিশরকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যান। দেশের পাশাপাশি বিদেশেও তার রাজনীতি নিয়ে আলোচিত হয়।
ক্লিওপেট্রা শুধু একজন ভালো শাসকই ছিলেন না, তিনি একজন সুন্দরী ও আকর্ষণীয় মহিলাও ছিলেন। রানী ক্লিওপেট্রা তার সৌন্দর্য ধরে রাখতে প্রতিদিন ৭০০টি গাধার দুধে স্নান করতেন। এটি ত্বকের জন্য খুবই উপকারী বলে মনে করা হয়। ক্লিওপেট্রা তার মুখে বিভিন্ন ধরনের ভেষজের পেস্ট লাগাতেন, যা তার ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে দেয়।
সুন্দরী হওয়ার পাশাপাশি রানী ক্লিওপেট্রা এত বুদ্ধিমান ছিলেন যে গ্রিক ছাড়াও তার ৮টি ভাষায় জ্ঞান ছিল। রানী ক্লিওপেট্রার ইথিওপিয়ান, হিব্রু, আরামিক, আরবী, সিরিয়াক, মিডিয়ান, পার্থিয়ান এবং ল্যাটিন ভাষায় ভালো জ্ঞান ছিল। যার ভিত্তিতে তিনি বিভিন্ন দেশের সাথে সুসম্পর্ক করতে পেরেছিলেন।
রাজা তৃতীয় টলেমির মৃত্যুর পর তার কন্যা ক্লিওপেট্রা মাত্র ১৮ বছর বয়সে মিশরের সিংহাসন গ্রহণ করেছিলেন এবং শিল্প ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে দেশটিকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যান। রানী ক্লিওপেট্রা প্রাচীন বিশ্বের একমাত্র শক্তিশালী নারী শাসক হিসেবে পরিচিত।
রানী ক্লিওপেট্রা এতটাই ধূর্ত ছিলেন যে তিনি প্রায়ই অন্যান্য দেশের গোপনীয়তা জানতে এবং তার সেনাবাহিনীর মধ্যে বিশ্বাসঘাতকদের খুঁজে বের করতে অন্যান্য পুরুষদের সাথে সম্পর্ক করতেন। এর ফলে ওই পুরুষদের কাছ থেকে তিনি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতেন। তবে ক্লিওপেট্রা ৩৯ বছর বয়সে রহস্যজনকভাবে মারা যান। কথিত আছে, এক বিষধর সাপের দংশনে তিনি নিজের মৃত্যু ঘটান।