মার্কিনের জনপ্রিয় প্রয়াত সংগীতশিল্পী মাইকেল জ্যাকসন। যার গানে আজও বুঁদ হয়ে আছেন শ্রোতা-দর্শকরা। ব্যক্তিজীবনে বিতর্কিত পপসম্রাট বিভিন্ন ঘটনার প্রেক্ষাপটে চার দশকেরও বেশি সময় সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বৈশ্বিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে দাপট চালিয়েছেন। ১৯৮০’র দশকে তার জনপ্রিয়তা ছিল আকাশ ছোঁয়া। পপসাম্রাজ্যের বাদশাহ মাইকেল জ্যাকসন গান, নাচ ও ফ্যাশনে অপ্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। সবার কাছে জ্যাকশন মানেই ছিল এক আইডল। প্রয়াত এই পপ তারকার বায়োপিক তৈরি হচ্ছে। এরইমধ্যে ‘মাইকেল’ শিরোনামের এই ছবিতে মাইকেলের ফার্স্টলুক এবার প্রকাশ্যে এল।
ছবিতে মাইকেলের ভূমিকায় অভিনয় করছেন শিল্পীর ভাইয়ের ছেলে জাফর জ্যাকসন। আগামী সপ্তাহ থেকে বায়োপিকের শুটিং শুরু হতে চলেছে।
সামাজিক মাধ্যমে ফার্স্টলুক প্রকাশ করেছেন জাফর। সাদাকালো সেই ছবিতে দূর থেকে মাইকেলকে দেখা যাচ্ছে। মাইকেলের জনপ্রিয় নাচের মুদ্রার মধ্যে ‘মুন ওয়াক’ এবং ‘টো স্ট্যান্ডিং’ রয়েছে। ফার্স্টলুকে ‘টো স্ট্যান্ডিং’ করতে দেখা গেছে জাফরকে।
ইনস্টাগ্রামে ছবিটি পোস্ট করে জাফর লিখেছেন, আগামী সোমবার থেকে যাত্রা শুরু হবে।’ মাইকেলের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টেও এই একই ছবি পোস্ট করে লেখা হয়েছে, ‘ছবির জন্য তিনি প্রস্তুত।
মাইকেলের বায়োপিকে শিল্পীর জীবনের কোন কোন অংশ দেখানো হবে তা জানাননি নির্মাতারা। ছবিটি পরিচালনা করবেন পরিচালক আঁতোয়া ফুকুয়া। ছবির চিত্রনাট্য লিখেছেন ‘গ্ল্যাডিয়েটর’ ছবির অন্যতম চিত্রনাট্যকার জন লোগান।
প্রসঙ্গত, ১৯৫৮ সালের ২৯ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রে জন্মেছিলেন মাইকেল জোসেফ জ্যাকসন। পরিবারের অষ্টম সন্তান ছিলেন তিনি। সংগীত পরিবারে জন্ম ও বেড়ে ওঠা। তাই মাত্র ৫ বছর বয়সেই স্টেজে গান শুরু করেন মাইকেল। তবে তার খ্যাতি আসে সত্তরের দশকের শেষ ও আশির দশকে।
জ্যাকসনের গাওয়া পাঁচটি সংগীত অ্যালবাম বিশ্বের সর্বাধিক বিক্রিত রেকর্ডের মধ্যে রয়েছে। সেগুলো হলো ‘অব দ্য ওয়াল (১৯৭৯), থ্রিলার (১৯৮২), ব্যাড (১৯৮৭), ডেঞ্জারাস (১৯৯১) এবং হিস্টরি (১৯৯৫)। এর মধ্যে ‘থ্রিলার’ আজ পর্যন্ত ১১২ মিলিয়নের উপর বিক্রি হয়েছে, যা সর্বোচ্চ বিক্রিত হওয়া অ্যালবাম।
সংগীতের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৮৪ সালে আটটি গ্র্যামি পুরস্কার অর্জন করে রেকর্ড গড়েছিলেন ‘পপ কিং’ মাইকেল জ্যাকসন। এক আসরে এতগুলো গ্র্যামি পুরস্কার ঝুলিতে ভরার রেকর্ড এত বছরেও ভাঙতে পারেননি আর কোনো সংগীতশিল্পী।
জীবদ্দশায় মোট ১৩টি গ্র্যামি পুরস্কার পেয়েছিলেন জ্যাকসন। তিনিই সবচেয়ে বেশি অ্যাওয়ার্ড ও নমিনেশন পাওয়া তারকা। এ জন্য হলিউড ওয়াক অব ফেমে ঠাঁই পেয়েছে তার নামে দুটি তারা। একটি তার নিজের জন্য। আরেকটি জ্যাকসন ফাইভ ব্যান্ডের সদস্য হিসেবে।
বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করা এই রকস্টার চলে যান ২০০৯ সালের ২৫ জুন। মাত্রাতিরিক্ত প্রপোফল সেবনে ৫০ বছর বয়সে মৃত্যু হয় জ্যাকসনের। তার মৃত্যুতে সারা পৃথিবীতে শোরগোল পড়ে যায়। ভেঙে পড়ে ছিল ইন্টারনেট ব্যবস্থা।