ময়মনসিংহ নগরে ফিলিং স্টেশনে বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ ব্যবসায়ী কামরুল হাসান বাবুর (৩২) মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (১১ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন থেকে তিনি মারা যান। এ নিয়ে বিস্ফোরণের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৫ জনে।
কামরুল হাসান নগরের খাগডহর মধ্যপাড়া গ্রামের আবদুল হাকিমের ছেলে। তিনি ফিলিং স্টেশনে এলাকার হোটেল ব্যবসায়ী ছিলেন। এ ঘটনায় কামরুলের স্ত্রী সুমি আক্তারও (৩০) দগ্ধ হয়েছেন বলে জানান কামরুলের বাবা আবদুল হাকিম।
জানা যায়, গত ৪ নভেম্বর দুপুর পৌনে ৩টার দিকে ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল সড়কে রহমতপুর বাইপাস এলাকায় আজহার ফিলিং স্টেশনে বিস্ফোরণ থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে সাতটি গাড়ি পুড়ে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিট ২ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
ঘটনাস্থলেই প্রাইভেটকার চালক হিমেল আহমেদ (৩২) মারা যান। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থেকে কিসমত গ্রামের বৃদ্ধ আবদুল কদ্দুস (৮৫) ও ঢাকায় নেয়ার পথে হারগুজিরপাড় গ্রামের ব্যবসায়ী আবুল হোসেনের (৪৫) মৃত্যু হয়।
এরপর গত ৬ নভেম্বর সকালে ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন থেকে মারা যান তোফাজ্জল হোসেন (৪৫)।
এ ঘটনায় ৬ নভেম্বর হিমেল আহমেদের মা ইয়াসমিন হেনা বাদী হয়ে ফিলিং স্টেশনটির মালিক আজহারুল ইসলামসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা অপর ছয়জনকে আসামি করে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার মামলা করেন।
ময়মনসিংহের কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম খান বলেন, সোমবার দুপুর পর্যন্ত কোনো আসামিকে গ্রেফতার করা যায়নি।
এ দিকে এ ঘটনায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার কথা বলা হয়। সে অনুযায়ী গত বৃহস্পতিবার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু ঘটনাস্থলে নিষেধাজ্ঞা থাকায় তদন্ত কমিটি কাজ করতে না পারায় আরও পাঁচ কর্মদিবস তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার সময় বাড়ানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মুফিদুল বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ দিকে ফিলিং স্টেশনে বিস্ফোরণের নিহত ও আহত এবং ক্ষতিগ্রস্তদের অর্থ সহায়তা দেয়া হয়। ইন্ট্রাকো এলপিজি লিমিটেডের পক্ষ থেকে সোমবার দুপুরে দুজন নিহত ও ক্ষতিগ্রস্ত এক ব্যবসায়ীকে অর্থ সহায়তা দেয়া হয়।
ইন্ট্রাকো এলপিজি লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার মো. মুকুল আহমেদ বলেন, নগরের কাঠগোলা এলাকার একটি বাসায় দুর্ঘটনায় নিহতদের স্বজনদের ডাকা হয়। এর মধ্যে তোফাজ্জল হোসেনের স্ত্রী ফারহানা আক্তার ও আবুল হোসেনের স্ত্রী লাভলী বেগমকে এক লাখ টাকা করে সহায়তা দেয়া হয়। এ সময় বিস্ফোরণে মুদি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আজিজুল হক নামে এক ব্যবসায়ীকেও ৫০ হাজার টাকা সহায়তা দেয়া হয়। ক্ষতিগ্রস্ত সব পরিবারকে সহায়তা দেয়া হবে বলে জানান তিনি।