দেশকে আওয়ামী লীগ শ্মশানে পরিণত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইমলামীর আমির শফিকুর রহমান। ক্ষমতায় গেলে একটি বৈষম্যবিরোধী দেশ গঠন করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। রাষ্ট্রে ইনসাফ কায়েম হলে নারীরা ঘরবন্দি হয়ে থাকবে না বলেও মন্তব্য করেছেন জামায়াত আমির।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে ঝিনাইদহ শহরের ওয়াজির আলী স্কুল মাঠে দলের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেছেন, ‘ছাত্র জনতার গণআন্দোলনে হাসিনা ও তার দোসররা পালিয়ে গেলেও ষড়যন্ত্র থেমে নেই। পর্দার আড়াল থেকে হাসিনা ও তার দোসররা দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চালাচ্ছে।’
জামায়াত আমির বলেন, ‘যে আল্লাহ দেশ থেকে স্বৈরাচার হাসিনাকে সরিয়ে দিয়েছে, সেই আল্লাহই তাদের ষড়যন্ত্র রুখে দেবে। সাড়ে ১৫ বছর আমরা দুঃশাসনের যাতাকলে পিষ্ট হয়ে বাসায় ঘুমাতে পারিনি, অফিসে বসতে পারিনি, আদালতে ন্যায়ের কথা বলতে পারিনি, খুন-গুমের শিকার হয়েছি।
কখনো মাঠে কখনো খালে বিলে নদীতে ঘুমাতে হয়েছে। স্বৈরাচার সরকারের জুলুমের পানি এক হয়ে এক একটা বঙ্গপোসাগরে পরিণত হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের বার্তা স্পষ্ট। আমরা এমন এক সমাজ চাই, যে সমাজে কোনো বৈষম্য থাকবে না।
তিনি বলেন আমাদের সন্তনরা রাস্তায় নেমেছিল। তারা বলেছিল উই ওয়ান্ট জাস্টিস। আল্লাহ যদি আমাদের দায়িত্ব দেন, তবে আমরা তাদের কথা রাখবো। আমরা ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গড়বো, যেখানে কোনো যুবকের হাত খালি থাকবে না। সবাই পড়ালেখা শেষ করে চাকরি পাবেন। নৈতিক শিক্ষা বিস্তারে ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। আমরা তরুণদের হাতেই বাংলাদেশকে তুলে দেব।’
শফিকুর রহমান আরো বলেন, ‘দেশে যদি ইনসাফ ও মর্যাদাশীল রাষ্ট্র কায়েম হয়, তবে নারীদের সমাজ উন্নয়নে ভূমিকা রাখার সুযোগ করে দেওয়া হবে। তারা কখনোই ঘরবন্দি থাকবেন না।’
জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক আলী আজম মো. আবু বকরের সভাপতিত্বে সমাবেশে কেন্দ্রীয় নেতা মোবারক হুসাইন, মাওলানা আজিজুর রহমান, ড. মাওলানা মুজাম্মেল হক, অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল হাই, আব্দুল আলীম, আবু তালিব, ড. মাওলানা হাবিবুর রহমান, ছাত্র শিবিরের ঝিনাইদহ জেলা সভাপতি মনিরুজ্জামান, মেহেদী হাসান রাজু ও এইচ এম আবু মুসাসহ জেলা উপজেলার জামায়াত নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
এর আগে মাগুরায় এক পথসভায় বক্তব্য দেন জামায়াত আমির। মাগুরা শহরের ভায়না মোড়ে পথসভায় দেওয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতি ইসলামী এমন একটি দেশ চায়, এমন একটি রাষ্ট্র চায় যেখানে আল্লাহ তায়ালার বিধান অনুযায়ী সামাজিক সুবিচার কায়েম হবে। সেখানে মানুষের মধ্যে কোনো বৈষম্য থাকবে না। যে যার ন্যায্য পাওনা হাতে পেয়ে যাবে। যুবকদের হাতে কাজ তুলে দেওয়া হবে। জাতি গঠনে যুবকরা ভূমিকা রাখবে।
বেকারত্বের অভিশাপে আর একটি যুবককেও আত্মহত্যা করতে হবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, চাকরি পাওয়ার জন্য কোনো দুষ্ট লোকের কাছে ঘুষ দিতে হবে না। বিচারের জন্য কাউকে কারো দয়ার জন্য তাকিয়ে থাকতে হবে না। বাজারে গেলে কাউকে মাথায় হাত দিতে হবে না এমন একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্র আমরা গড়ে তুলতে চাই।