নিয়মিত জন্মবিরতিকরণ পিল খাওয়া কিছুটা ঝামেলার বিষয়। তাই ইমার্জেন্সি পিলের ওপর নির্ভর করেছিলাম। কিন্তু তাতে কাজ তো হলোই না, উল্টো লম্বা সময়ের জন্য অসুস্থতার মধ্যে পড়লাম।’ কথাগুলো বলছিলেন বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সাদিয়া আফরিন। তিনি জানান, অযাচিত গর্ভধারণ এড়াতে ২০২১ সালে পাঁচ মাসের ব্যবধানে দুবার তিনি ইমার্জেন্সি কন্ট্রাসেপটিভ পিল ব্যবহার করেন। কিন্তু পিল খাওয়ার পরেও তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। তবে নানা জটিলতায় গর্ভপাত হয় তাঁর।
পরিবার পরিকল্পনাকর্মী এবং স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাদিয়ার মতো অনেক নারী নিয়মিত জন্মবিরতিকরণ পিলের পরিবর্তে ইমার্জেন্সি পিলের দিকে ঝুঁকছেন। আর এই পিলের ভুল ব্যবহারের ফলে তাঁদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। এমন প্রেক্ষাপটে আজ ২৬ সেপ্টেম্বর পালিত হচ্ছে বিশ্ব জন্মনিরোধ দিবস। পরিকল্পিত পরিবার গঠন ও জন্মনিয়ন্ত্রণসামগ্রী ব্যবহারে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০০৭ সাল থেকে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘বিকল্পের শক্তি’ (দ্য পাওয়ার অব অপশনস)।
অবসটেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশের (ওজিএসবি) সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. ফেরদৌসী বেগম বলেন, ‘বেশ কয়েক বছর ধরেই দেশে ইমার্জেন্সি কন্ট্রাসেপটিভ পিলের ব্যবহার বাড়ছে। দেশে অযাচিত গর্ভধারণের হার অনেক বেশি। প্রতি তিনটির মধ্যে একটি অযাচিত গর্ভধারণের ঘটনা ঘটে। এ অবস্থায় ইমার্জেন্সি কন্ট্রাসেপটিভ পিলকে আমরা নিরুৎসাহিত করতে পারি না। তবে এই পিলের ব্যবহারে সচেতন হওয়া প্রয়োজন।’
কারণ পিলের ভুল ব্যবহার অনিয়মিত মাসিক, লিভারের সমস্যাসহ নানা ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হতে পারে। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সরকারি ও বেসরকারিভাবে বাংলাদেশে বর্তমানে জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবহৃত হয় কন্ট্রাসেপটিভ পিল, কনডম, দীর্ঘমেয়াদি পদ্ধতির ইনজেকশন, ইন্ট্রাইউটেরিন ডিভাইস (আইডি) বা কপার টি, ইমপ্ল্যান্ট, স্থায়ী পদ্ধতি ও ইমার্জেন্সি কন্ট্রাসেপটিভ পিল। এর মধ্যে অন্যান্য পদ্ধতির তুলনায় ইমার্জেন্সি পিলের ব্যবহার বাড়ছে বলে জানান পরিবার পরিকল্পনাকর্মীরা। তবে এ-সংক্রান্ত বিশদ কোনো তথ্য সরকারি বা বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছেই পাওয়া যায়নি।
মেরী স্টোপস বাংলাদেশের লিড অ্যাডভোকেসি মনজুন নাহার বলেন, ‘ইমার্জেন্সি পিল কখনোই রেগুলার পিলের বিকল্প হতে পারে না। যখন-তখন এটা খেয়ে ফেলা ঠিক না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, কোনো চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীর পরামর্শ ছাড়া ফার্মেসি থেকে এগুলো কেনা হয়। ফার্মেসিতে যাঁরা থাকেন, তাঁরা যেন এই পিল সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করতে পারেন, তাঁদের সেই প্রশিক্ষণটা থাকা উচিত।’
https://bangla-bnb.saturnwp.link/biya-ar-aga-mayara-sobchaya-bashi/
ইমার্জেন্সি পিল কখনোই রেগুলার পিলের বিকল্প হতে পারে না। যখন-তখন এটা খেয়ে ফেলা ঠিক না।
মনজুন নাহার, লিড অ্যাডভোকেসি মেরী স্টোপস বাংলাদেশ