অনেকেই স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য কিংবা অভ্যাসের কারণে অন্তর্বাস পরেই ঘুমাতে যান। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, অন্তর্বাস পরে ঘুমালে কিছু শারীরিক সমস্যার ঝুঁকি বাড়তে পারে। এই অভ্যাসের ফলে দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাবও পড়তে পারে। এই প্রতিবেদনে অন্তর্বাস পরে ঘুমানোর সম্ভাব্য ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরা হলো।
রক্ত সঞ্চালনে বাধা: চাপযুক্ত অন্তর্বাস (যেমন টাইট ব্রা বা টাইট আন্ডারওয়্যার) পরলে শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাধাপ্রাপ্ত হতে পারে। ঘুমের সময় শরীর সম্পূর্ণ শিথিল অবস্থায় থাকার প্রয়োজন কিন্তু টাইট অন্তর্বাসে রক্ত সঞ্চালন বাধা পেলে শরীর ঠিকমতো বিশ্রাম নিতে পারে না। এই অবস্থার কারণে অস্থিরতা, পেশির ক্লান্তি এবং ব্যথা অনুভূত হতে পারে।
ত্বকে র্যাশ এবং অস্বস্তি: অন্তর্বাসের সঠিক বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা না থাকলে, বিশেষ করে টাইট অন্তর্বাস পরলে, ত্বকে র্যাশ ও চুলকানি সৃষ্টি হতে পারে।
ঘুমের সময় অন্তর্বাসের কারণে ত্বক ঘামতে শুরু করে, যার ফলে ছত্রাক এবং ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ সহজেই হতে পারে। দীর্ঘসময় এই সমস্যা চলতে থাকলে ত্বকে দাগ এবং প্রদাহ সৃষ্টি হতে পারে।
প্রজনন স্বাস্থ্য সমস্যা: অন্তর্বাস পরে ঘুমানোর অভ্যাস প্রজনন স্বাস্থ্যেও প্রভাব ফেলতে পারে। পুরুষদের ক্ষেত্রে, টাইট আন্ডারওয়্যার বা প্যান্টস ঘুমের সময় পরা হলে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের অভাব দেখা দিতে পারে, যা শুক্রাণুর সংখ্যা এবং মানে প্রভাব ফেলতে পারে।
নারীদের জন্যও টাইট অন্তর্বাসের কারণে প্রজনন অঙ্গে ব্যাকটেরিয়ার প্রবেশের ঝুঁকি বেড়ে যায়, যা বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ এবং প্রদাহের কারণ হতে পারে।
শ্বাসকষ্টের সমস্যা: ব্রা পরে ঘুমানো অনেকের কাছে স্বাভাবিক মনে হলেও, এটি শ্বাসকষ্ট এবং বুকের ব্যথার কারণ হতে পারে। বিশেষ করে, টাইট বা ওয়্যারযুক্ত ব্রা পরে ঘুমালে শ্বাসপ্রশ্বাসে বাধা সৃষ্টি হতে পারে। এমনকি এর ফলে ফুসফুসের কার্যকারিতায় প্রভাব ফেলতে পারে, যা দীর্ঘমেয়াদে শ্বাসজনিত সমস্যা তৈরির আশঙ্কা বাড়ায়।
ঘুমের মান কমে যাওয়া: ঘুমের সময় শরীরের পূর্ণ শিথিলতা এবং আরাম প্রয়োজন। অন্তর্বাসের চাপ ও অস্বস্তির কারণে অনেকের ঘুমের মান কমে যেতে পারে। বিশেষ করে যারা কোমরের বা পিঠের দিকের টাইট অন্তর্বাস পরে ঘুমান, তাঁদের ঘুমের গুণগত মান নষ্ট হতে পারে। এর ফলে ঘুম থেকে ওঠার পর ক্লান্তি, মুড সুইং এবং অস্থিরতা দেখা দিতে পারে।
কীভাবে এড়ানো যায় এই সমস্যাগুলো? স্বাস্থ্যকর এবং আরামদায়ক ঘুমের জন্য বিশেষজ্ঞরা অন্তর্বাস ছাড়া ঘুমানোর পরামর্শ দেন। তবে যদি পুরোপুরি ছেড়ে না দেওয়া যায়, তাহলে ঢিলেঢালা এবং প্রাকৃতিক কাপড়ের অন্তর্বাস পরার চেষ্টা করা উচিত, যা শরীরকে আরাম দেয় এবং ত্বকে পর্যাপ্ত বায়ু চলাচল নিশ্চিত করে।
সংক্ষিপ্ত পরামর্শ: শরীরের আরামের জন্য ঘুমের সময় অন্তর্বাস পরা থেকে বিরত থাকাই সর্বোত্তম। এভাবে ঘুমালে শরীর সম্পূর্ণ শিথিল থাকতে পারে এবং স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে বিশ্রাম নিতে পারে।