ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. খালেদা ইসলামের কাছ থেকে চলুন জেনে নিই। পেয়ারা ও আপেল ফল খেতে কম-বেশি সবাই পছন্দ করে। দুটি ফলেই নানা ভিটামিনের উৎস। খেতেও বেশ সুস্বাদু।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. খালেদা ইসলামের কাছ থেকে চলুন জেনে নিই আপেল ও পেয়ারা পুষ্টিগুণ কেমন এবং তুলনা করলে কোনটি খাওয়া বেশি ভালো হবে।
আপেলের পুষ্টিগুণ
আপেল খুবই পরিচিত একটি ফল। বিদেশি ফল হলেও আমরা অনেকেই নিয়মিত খাই এটি। নানা কারণে মানুষ আপেল পছন্দ করে। এটি অনেক বেশি সহজলভ্য, সব ঋতুতেই পাওয়া যায়, আর খাওয়াটাও সহজ। যদিও আপেল বিদেশি ফল, বাংলাদেশেও আপেলের চাষ হচ্ছে কিছু কিছু জায়গায় স্বল্প পরিসরে।
আপেলে পানির পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। ফলটির ৫০ থেকে ৬০ শতাংশই পানি। ফাইবার থাকে অনেক বেশি।
আপেলে রয়েছে ভিটামিন সি। ভিটামিন বি কমপ্লেক্সও আছে।
সবুজ আপেলে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে প্রচুর পরিমাণে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। যদি কেউ দিনে একটা করে আপেল খায় তাহলে দেখা যায়, জটিল বা বয়সজনিত রোগব্যাধি বাদে মোটামুটি সব ধরনের অসুখ-বিসুখ থেকে তার শরীর রক্ষা পায়।
অন্যান্য ফলের তুলনায় আপেলে কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট অল্প পরিমাণে আছে, বলা যায় না থাকার মতই।
আপেলে থাকা ফাইবার শরীর থেকে খারাপ ফ্যাট বের করে দিতে সাহায্য করে। হার্টের রোগ, হাই ব্লাডপ্রেশার থেকে রক্ষা করে আপেল।
আপেলে চিনির পরিমাণ কম থাকে। সেকারণে যাদের ডায়াবেটিস আছে তারা অন্যান্য মিষ্টি ফলের তুলনায় আপেল একটু বেশি পরিমাণে খেতে পারেন।
পেয়ারার পুষ্টিগুণ
পেয়ারায় প্রচুর পানি থাকে, যা আপেলের চেয়েও বেশি। এর প্রায় ৭০ শতাংশ পানি। ফাইবারের পরিমাণও অনেক বেশি।
প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে পেয়ারায়। আর ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি, ভিটামিন ই, ভিটামিন কে থাকে অল্প পরিমাণে। ফ্যাট নেই পেয়ারায়।
পেয়ারা কম মিষ্টি আপেলের তুলনায়, এর চিনি কম। এই কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি খুব ভালো।
পানির পরিমাণ, ফাইবার, ভিটামিন এই উপাদানগুলো আপেল ও পেয়ারায় প্রায় সমান। কিন্তু আপেলের তুলনায় পেয়ারায় অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সির পরিমাণ অনেক বেশি। আপেলের চেয়ে পেয়ারায় ভিটামিন সি কয়েকগুণ বেশি পাওয়া যায়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন সি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেদিক থেকে আপেলের চেয়ে পেয়ারার পুষ্টিগুণ অনেক বেশি জানান পুষ্টিবিদ ড. খালেদা ইসলাম।
আপেল নাকি পেয়ারা
পুষ্টিবিদ খালেদা ইসলাম বলেন,’ সব ধরনের ফল খাওয়া উচিত। আপেলের কিছু কিছু পুষ্টিগুণ আছে যা পেয়ারাতে নেই। আবার পেয়ারা একটু শক্ত হয় যেহেতু প্রচুর দানা থাকে। তাই অনেকে খেতে পারেন না। শিশু এবং বয়স্কদের খেতে অসুবিধে হয় অনেক সময়। বিপরীতে আপেল সব বয়সীরাই সহজে খেতে পারেন।’
পরিস্থিতি বিবেচনায় যার যেমন সামর্থ্য সেই অনুযায়ী আপেল ও পেয়ারা দুটোই খাওয়ার পরামর্শ পুষ্টিবিদের।
https://bangla-bnb.saturnwp.link/coffe-naki-green-tea/
তবে খালেদা ইসলাম বলেন, ‘আমরা বিদেশি ফলের দিকে অনেক বেশি ঝুঁকে থাকি। দেশি ফলের পুষ্টিগুণ ভালো। এটা বলা হয়, যে দেশে যেমন পুষ্টির চাহিদা সেই দেশের ফলে সেটাই বেশি থাকে। সেই হিসেবে আপেলের তুলনায় পেয়ারাকেই আমাদের সবার বেশি গ্রহণ করা উচিত। আমাদের দেশের ফলকেই আমাদের প্রাধান্য দেয়া উচিত। শুধু এই কারণে নয় যে এটা দেশি ফল, এর পুষ্টিগুণও কিন্তু আপেলের তুলনায় অনেক বেশি। পেয়ারা থেকে ভিটামিন সিও আপেলের চেয়ে অনেক বেশি পাওয়া যায়।’