বেশ অনেকগুলো বছর একজন মানুষের সঙ্গে থাকার পর হঠাৎ যখন জানতে পারেন তিনি আপনাকে ঠকিয়েছেন, তখনই মুহূর্তের মধ্য়ে বদলে যায় সব কিছু! আমরা কী করব না করব কিছুই বুঝে উঠতে পারি না। এরকমই ৫ জন মহিলা নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানালেন। যাঁদের স্বামী অন্য মহিলার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন কিংবা যাঁরা অন্য পুরুষের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে স্বামীকে ঠকিয়েছিলেন। পরকীয়া কীভাবে একটি সুখের সংসারকে নষ্ট করে দিতে পারে, তা নিজেই পড়ে দেখুন।
সম্পর্কের ভিত তৈরি হয় বিশ্বাস ও ভালোবাসার বন্ধনে। কিন্তু সেই বিশ্বাসেই যখন আঘাত লাগে, তখন সম্পর্ক বা সংসার তাসের ঘরের মতো ভাঙে! একে অপরের থেকে বিশ্বাস চলে যায়। মন খারাপ হতে থাকে। কী করা উচিত তখন, সেসব কিছুই যেন মাথায় আসে না। এরকম পরিস্থিতির মুখে অনেকেই পড়েছেন। অনেক মহিলাই এই অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করেছেন যে, তাঁদের স্বামী হয়তো জীবনের কোনও না কোনও সময়ে তাঁদের ঠকিয়েছেন। আবার এটাও হয়েছে যে, মহিলারাই হয়তো পরকীয়া করেছেন।
কিন্তু এই পরকীয়ার পর আর তাঁদের বিবাহিত জীবন একইরকম থাকেনি। আর তা না থাকাই স্বাভাবিক। পরকীয়া করলে কেমন হয় তার পরবর্তী বিবাহিত জীবন? শুনে নিন তাঁদের মুখেই।
“আমি আমার স্বামীর সঙ্গে প্রতারণা করেছিলাম। যদিও আমি তা করতে চাইনি। কিন্তু দিনের পর দিন সে আমাকে কোনও গুরুত্বই দিত না। যেন আমি তাঁর জীবনে কেউ নই। আমি তাঁকে অনেকবার বলেছিলাম। কিন্তু অনেক বলার পরেও যখন কোনও পরিবর্তনই হল না, আমি ভাবলাম যে আর নয়, এবার নিজের মতো করেই বাঁচতে হবে। আমি আর ভালোবাসার জন্য় বারবার তাঁর কাছে অনুরোধ করব না।
কিন্তু তাঁকে একবার ঠকিয়ে অন্য কারও সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার পরেই নিজের মধ্যে অনুতাপ হতে শুরু করে। নিজেকে দোষী মনে হতে থাকে। আমি তাঁকে সব কথা জানাই। আমাদের সম্পর্কে তারপর নানারকম টানা পোড়েন চলেছে। কিন্তু আমায় সে কখনও এই প্রশ্ন একবারও করেনি যে, আমি কেন তা করলাম। ”
“আমি সেই সময়ে বিজনেস ট্রিপে ছিলাম। তখনই আমি অন্য় কারও সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়ি ও আমার স্বামীকে ঠকাই। এরপর আমরা দুজন নিজেদের মতো আছি। ও তাঁর মতো কাজ করে। আমি আমার মতো অফিস নিয়ে ব্যস্ত। আমি স্বামীর জন্য কিছু অনুভবও করি না।
কিন্তু আমাদের একজন সন্তান আছে। তাঁর কথা ভেবে আমায় থাকতে হয়। তিনি আমার সন্তানের বাবা। আমাদের দুজনের সম্পর্ক ভাঙলে, সে একটি ভেঙে যাওয়া পরিবারে বড় হবে। আর আমি তা চাই না।”
“আমার স্বামী আমায় ঠকিয়েছিল। সেটা শুনে আমার ভীষণ ভীষণ খারাপ লেগেছিল। আমি ওর সঙ্গে কথা বলাও বন্ধ করে দিই। শুধুমাত্র মেসেজ পাঠিয়ে কথা বলতাম। সরাসরি সামনা সামনি কথা বলতাম না। সেই মানুষের সঙ্গে কথা বলতে আমার বাধত, যে আমায় ঠকিয়েছে। তারপর আমরা দুজনেই কাপল থেরাপি নেওয়ার কথা ভাবি। তাই করিও। এরপর ধীরে ধীরে আমি ওকে ক্ষমা করে দিই। এখন আমরা আগের থেকে ভালো পরিস্থিতিতে আছি। ”
“আমার স্বামী তাঁর সেক্রেটারির সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিল। তার সঙ্গেই ঘনিষ্ঠ হয় এবং আমায় ঠকায়। আমিও সে সময় ভাবি, আমি আর ‘ভালো স্ত্রী’ হয়ে থাকতে চাই না। কারণ সে আমার সব বিশ্বাস নষ্ট করেছে। আমিও অন্য় পুরুষের সঙ্গে ‘ওয়ান নাইট স্ট্যান্ড’ করি। সত্য়ি বলতে, এই কাজের জন্য় আমার মধ্য়ে আর কোনও অনুতাপ নেই। অনেক দোষারোপ করেছি একে অপরকে। অনেক চোখের জলও ফেলেছি। কিন্তু যে যার মতো আমরা আবার এগিয়ে গিয়েছি। ”
“আপনার সঙ্গী আপনাকে ঠকানোর পরে তাঁকে খুব সহজেই ছেড়ে চলে যাওয়া সম্ভব হয় না। কারণ তাঁর সঙ্গে দীর্ঘ বছরের সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন আপনি। অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। আমার স্বামীর সঙ্গে কলেজে আলাপ হয়। প্রায় ২০ বছরের বেশি সময় আমরা একসঙ্গে আছি। সেই সঙ্গী আপনাকে ঠকাচ্ছে এই কথা ভাবতেও কষ্ট হয়! যদিও সে এখন আমায় বারবার বলে যে, সে আমায় আর ঠকাচ্ছে না। কিন্তু আমি ওকে আর বিশ্বাস করি না। আমি সম্পর্ক ছেড়ে বেরোতে চাই, কিন্তু ভয় পাই। কারণ আমার মনে হয় আমি একা হয়ে যাব।”