সৌদি আরবের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে একটি চমৎকার মরুদ্যানে প্রায় ৪,০০০ বছর পুরনো দুর্গ শহরের ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কার করেছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। এই প্রাচীন শহরটি ঐতিহাসিক খাইবার অঞ্চলে অবস্থিত, যেখানে সবুজ বেষ্টনী ঘিরে এক মনোরম মরুদ্যান রয়েছে। আল-নাতাহ নামে পরিচিত এই স্থানটি খাইবারের প্রাচীরবেষ্টিত মরুদ্যানে দীর্ঘদিন ধরে লুকিয়ে ছিল।
ফরাসি প্রত্নতাত্ত্বিক গুইলোম শারলু ও তার দলের নেতৃত্বে এই গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারটি হয়েছে, যেখানে ১৪.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রাচীর রয়েছে। গবেষণা অনুযায়ী, প্রাচীন ব্রোঞ্জ যুগে, খ্রিষ্টপূর্ব প্রায় ২৪০০ অব্দে নির্মিত এই দুর্গ শহরটি ৫০০ জন বাসিন্দার ধারণক্ষমতা ছিল। এর মধ্যে রয়েছে বসতিগুলোকে রক্ষাকারী প্রাচীর, যা সুশৃঙ্খল জনবসতির ইঙ্গিত দেয়।
গবেষণার প্রধানরা বলেন, প্রাথমিক প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধানে প্রায় ২.৬ হেক্টর এলাকাজুড়ে এই দুর্গ শহরটি আবিষ্কার হয়, যা ২৪০০-২০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে নির্মিত এবং অন্তত খ্রিষ্টপূর্ব ১৫০০ অব্দ পর্যন্ত টিকে ছিল। সেখানে আবাসিক এলাকা, সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্থান এবং সমাধিক্ষেত্রের মতো এলাকা চিহ্নিত হয়েছে।
এই শহরের ঘরগুলো একটি মানক পরিকল্পনা অনুসরণে গুচ্ছাকারে নির্মিত, যা ছোট ছোট রাস্তা দ্বারা সংযুক্ত। গবেষকরা ধারণা করেন, ব্রোঞ্জ যুগে উত্তর-পশ্চিম আরব অঞ্চলে এ ধরনের দুর্গ শহরগুলো ছিল একটি ধীর গতির নগরায়নের উদাহরণ। খাইবারসহ অন্যান্য দূর্গকেন্দ্রিক শহরগুলো স্থানীয় যাযাবর সম্প্রদায়ের জন্য আদান-প্রদান ও বসবাসের কেন্দ্র হিসেবে কাজ করতো।
মেসোপটেমিয়া বা মিসরের প্রাচীন শহরগুলোর তুলনায় আকারে ছোট হলেও এ ধরনের দূর্গময় মরুদ্যানগুলো উত্তর আরবে প্রাচীন সমাজগুলোর ধীরে ধীরে নগরায়নের পথে এগিয়ে যাওয়ার প্রমাণ দেয়।