বাংলাদেশ ইসলামিক স্টাডিজ সোসাইটি (বিআইএসএস) এর উদ্যোগে শিক্ষার সকল স্তরে ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বাধ্যতামূলককরণ শীর্ষক মতবিনিময় সভা গত শনিবার রাত ৯০টায় অনলাইন জুমের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ ইসলামিক স্টাডিজ সোসাইটি (বিআইএসএস)-র আহ্বায়ক, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক মো. রাশেদুল আলম এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত ভিসি প্রফেসর ড. মো. শামছুল আলম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ বেলাল হোসেন।
অনুষ্ঠানে আলোচিত বিভিন্ন এজেন্ডার মধ্যে ছিলো, ১. প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ-মাধ্যমিকের সকল বিভাগে ইসলাম শিক্ষা বাধ্যতামূলককরণ। ২. সকল সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ চালু। ৩. ইসলামিক স্টাডিজ ব্যতীত অন্যান্য বিভাগে ইসলামিক স্টাডিজকে এঊউ এর অন্তর্ভুক্তকরণ। ৪. ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের গ্রাজুয়েটদের মানসম্মত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা। মাদ্রাসার এমপিও নীতিমালা পরিবর্তন সংক্রান্ত সমস্যাসহ শিক্ষাব্যবস্থার বিভিন্ন সমস্যা ও সমাধান সংশ্লিষ্ট বিষয়।
অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি), জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি), ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি), জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ, উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের ইসলামিক স্টাডিজ সংশ্লিষ্ট প্রায় সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ডিন, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, প্রফেসরবৃন্দ, শিক্ষকম-লী ও শিক্ষার্থী প্রতিনিধিগণ উপস্থিত থেকে ❝বাংলাদেশ ইসলামিক স্টাডিজ সোসাইটি❞ কর্তৃক উত্থাপিত এজেন্ডার সাথে ঐক্যমত পোষণ করে ইসলাম শিক্ষার যাবতীয় সমস্যা সমাধানে মতামত পেশ করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো. শামছুল আলম বলেন, আমরা ইসলামিক স্টাডিজকে ঈমানের কারণে বুকে ধারণ করি। সারা দেশে যত অপরাধ সংগঠিত হয় তার অন্যতম কারণ হলো ইসলামিক শিক্ষা না থাকা। তাই শিক্ষার সকল স্তরে ইসলাম শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক বিষয় করতে হবে। এর জন্য যা প্রয়োজন তা করা দরকার।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর ড. মো. তাজাম্মল হক বলেন, সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো থেকে ইসলাম শিক্ষাকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। এ বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া সময়ের দাবি। এছাড়াও তিনি প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ চালু করার জোর দাবি জানান।
সভায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি প্রফেসর আ.ন.ম আব্দুল মাবুদ বলেন, শিক্ষা কারিকুলামে অন্তর্ভুক্ত কোর্সসমূহের পরিমার্জন করতে হবে, শিক্ষার প্রতিটি স্তরে ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার জন্য উর্ধতন মহলে জোর দাবি জানাই।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, মাদরাসাসমূহে আলিম পর্যায়ে ইসলামিক স্টাডিজ এর গ্রাজুয়েটদেরকে প্রভাষক পদে যোগদানের পথ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। মাদ্রাসায় আরবী প্রভাষক নামটি সংস্কার করে যেখানে আরবি শিক্ষক প্রয়োজন সেখানে আরবি আর যেখানে ইসলামিক স্টাডিজের শিক্ষক প্রয়োজন সেখানে ইসলামিক স্টাডিজ প্রভাষক পদ সংযোজন করতে হবে। কেননা আলিম পর্যায়ে পঠিতব্য, আল কুরআন, আল হাদিস, ফিকহ ১ম ও ২য় পত্র এসকল বিষয়সমূহ ইসলামিক স্টাডিজ এর অন্তর্ভুক্ত। অথচ পদটির নাম আরবি প্রভাষক রাখায় বিভিন্ন জটিলতা তৈরি হচ্ছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর ড. মাসুদ আলম বলেন, ইসলামী ব্যাংকসমূহে যেভাবে বিভিন্ন উপায়ে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীদের বঞ্চিত করা হয়েছে তা ফিরিয়ে আনতে হবে।
অনুষ্ঠানের সভাপতি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. বেলাল হোসেন বলেন, ইসলাম ও ইসলামী শিক্ষার উপর বিগত সালগুলোতে যে বৈষম্য তৈরি করা হয়েছে তা দূর করার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে হবে। উপস্থাপিত দাবিসমূহ আদায়ে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সুনিপুণভাবে কাজ করতে হবে। সময়ের চাহিদার আলোকে এমন আয়োজন করার জন্য সোসাইটির দায়িত্বশীলদের তিনি ধন্যবাদ জানান।
বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউসুফ, প্রফেসর ড. মোস্তফা মঞ্জুর, ড. আমীর হোসেন, আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের শরীয়া অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোস্তফা কামিল মাদানী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. শাহ মুখতার আহমেদ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের, ড. ইবরাহিম খলিল, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়ার প্রফেসর ড. আখতার হোসাইন, প্রফেসর ড. কামরুজ্জামান, প্রফেসর ড. রহীম উল্লাহ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।