বর্তমানে আমাদের সব বয়সী মানুষেরই প্রথম পছন্দ একটি ভালো মানের স্মার্টফোন। কেননা একটি স্মার্টফোন হাতে থাকা মানে সারা বিশ্বের খবর হাতে থাকা। আর এজন্য আমরা চাই আমাদের স্মার্টফোনটি যেন দীর্ঘদিন ভালোভাবে সার্ভিস দেয়। কিন্তু আমাদের নিজেদের কিছু ভুলের কারণে স্মার্টফোন দীর্ঘদিন ভালো থাকে না। কেনার কিছুদিন পরেই দেখা দেয় ব্যাটারির সমস্যা। স্মার্টফোন ব্যবহারের ধরণের উপরই নির্ভর করে ব্যাটারির আয়ু , যেটা আমরা অনেকেই জানিনা। তাই বন্ধুরা, আজ আমি আপনাদের জানাব কিভাবে দীর্ঘদিন স্মার্টফোনের ব্যাটারি ভালো রাখা যায়-
স্মার্ট ফোন ব্যাটারি
স্মার্টফোনের ব্যাটারি ভালো রাখতে চাইলে আপনাকে কিছু নিয়ম কানুন মেনে চলতে হবে। নইলে দ্রুত আপনার মোবাইলের ব্যাটারি খারাপ হয়ে যাওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। আজ আপনারা জেনে নিন কিভাবে স্মার্টফোনের ব্যাটারি অনেকদিন ভালো রাখবেন –
স্মার্টফোনের নিজস্ব চার্জার ব্যবহার করুন:
প্রতিটি ফোনের ব্যাটারির একটি নির্দিষ্ট ক্যাপাসিটি থাকে, সেই ক্যাপাসিটি অনুযায়ী ফোনটির সাথে একটি উপযুক্ত চার্জার প্রোভাইড করা হয়। তাই তৃতীয় পক্ষের চার্জার বা নকল চার্জার ব্যবহার না করে স্মার্টফোনের সাথে থাকা চার্জারটিই ব্যবহার করা উচিত। এতে ফোনের ব্যাটারি দীর্ঘদিন ভালো থাকে।
স্মার্টফোনে ১০০ ভাগ চার্জ দেবেন না:
এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, স্মার্টফোনে সম্পূর্ণ ১০০ ভাগ চার্জ না দিয়ে ৯০-৯৫ ভাগ চার্জ দিলে ফোনের ব্যাটারি ভালো থাকে। তবে সাপ্তাহে ১-২ বার ১০০ ভাগ চার্জ করা যেতে পারে। এই প্রক্রিয়ার সাহায্যে ব্যাটারি রিক্যালিব্রেট হবে।
চার্জিং এর সময় স্মার্টফোন ব্যবহার করবেন না:
মোবাইল ফোন চার্জে দিয়ে অনেকে ফোনে কথা বলে আবার অনেকে গেমস খেলে। যেটা খুবই খারাপ একটি অভ্যাস। এর ফলে অনেক সময় ফোন অতিরিক্ত গরম হয়ে যায় এবং এর থেকে ব্লাস্টের মত ভয়াবহ দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। তাই ফোন চার্জে দিয়ে কখনোই ব্যবহার করবেন না।
রাতভর স্মার্টফোনে চার্জ দেবেন না:
অনেকেই ফোন চার্জে লাগিয়ে রাতে ঘুমিয়ে যায়। যেটা করা একেবারেই ঠিক নয়। অতিরিক্ত চার্জে ব্যাটারির ভেতরে তাপ উৎপন্ন হয়, যা তড়িৎ বিশ্লেষ্য সংমিশ্রনকে পরিবর্তন করে ফেলে। এতে ব্যাটারি অতিরিক্ত গরম হয়ে যায় এবং চার্জের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।
২০ ভাগ চার্জ থাকতে স্মার্টফোন চার্জে দিন:
ব্যাটারির পুরো চার্জ ক্ষয় করে চার্জে না দেয়াই ভালো। গবেষণায় দেখা গেছে যে, মোবাইল ফোনে ২০ ভাগের নিচে চার্জ থাকলে তা পুরো ডিভাইসকে দুর্বল করে দেয় এবং ব্যাটারির ভেতরে রাসায়নিক ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়। যা ব্যাটারির জন্য খুবই খারাপ। তাই ২০ ভাগের কম চার্জ হওয়ার আগেই আপনার ফোনটি চার্জে দিন।
নিয়মিত স্মার্টফোন রিস্টার্ট করুন:
আমরা অনেকেই মোবাইল ফোন মাসের পর মাস বিনা অফ-অন না করেই চালিয়ে যাই। কিন্তু এটা মোটেও ঠিক নয়। ফোনকে নিয়মিত রিস্টার্ট দেওয়া উচিত। প্রতিদিন না হলেও সপ্তাহে ৩-৪ দিন একবার করে ফোন রিস্টার্ট দেওয়া জরুরী। এতে ব্যাটারি ভালো থাকে এবং ফোনের অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।
যখন তখন স্মার্টফোন চার্জে দেওয়া থেকে বিরত থাকুন:
অনেককেই দেখা যায় ফোনের চার্জ একটু শেষ হতে না হতেই বারবার ফোন চার্জে দেয়। তারা জানেনা যে এখনকার দিনে বেশিরভাগ ফোনই লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি থাকে। আর সেই ব্যাটারিকে দীর্ঘদিন ভালো রাখতে যখন তখন চার্জ না দিয়ে যথাসময়ে চার্জ দেওয়া একান্ত প্রয়োজন। এজন্য ফোনে ৫০ ভাগ চার্জ কমে গেলে তখন ফোনে চার্জ দিতে পারেন।
স্মার্টফোনের ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ গুলো অফ রাখুন:
স্মার্টফোনের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হল বিভিন্ন অ্যাপ। আমরা প্রয়োজনে বা অপ্রয়োজনে অনেক অ্যাপ ব্যবহার করি। কিন্তু ব্যবহার শেষে আমরা সেগুলো বন্ধ করতে ভুলে যাই। ফলে সেগুলো ব্যাকগ্রাউন্ডে চলতে থাকে ও ফোনের ব্যাটারি ক্ষয় করে। তাই যেসব অ্যাপের ব্যাকগ্রাউন্ড এক্টিভিটির প্রয়োজন নেই, সেগুলো অফ রাখুন।
স্মার্টফোনে ফার্স্ট চার্জার ব্যবহার করবেন না:
এখন মার্কেটে এমন অনেক চার্জার পাওয়া যায় যেগুলো ব্যবহার করলে মোবাইল ফোন খুব তাড়াতাড়ি চার্জ হয়ে যায়। তবে এতে স্বাভাবিকের চেয়ে মোবাইলের ব্যাটারি বেশি গরম হয়ে যায়। ফলে ব্যাটারির কর্মক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। সেই সঙ্গে ফোনের চার্জ ধরে রাখার ক্ষমতাও কমে যায় এবং আস্তে আস্তে ফোন দিও খারাপ হয়ে যায়। তাই এই ধরনের চার্জার ব্যবহার না করে, দ্রুত চার্জের জন্য প্রয়োজনে ফোনের পাওয়ার সেভিং ও এয়ারপ্লেন মোট অন করে দিতে পারেন।
https://bangla-bnb.saturnwp.link/e-commerce-site/
স্মার্টফোনে ব্রাইটনেস কমিয়ে রাখুন এবং ফোনে ডার্ক মোড চালু রাখুন:
প্রয়োজন ছাড়া আপনার স্মার্টফোনের ব্রাইটনে কমিয়ে রাখুন। কারণ এতে ফোনের ব্যাটারির প্রচুর শক্তি ব্যয় হয়। এজন্য আপনি অটো ব্রাইটনেস অপশনটি চালু রাখতে পারেন। এছাড়া আপনি ফোনে ডার্ক মোড চালু করতে পারেন। এতে ফোনের ব্যাটারির শক্তি কম ব্যয় হয়। তাছাড়া স্কিনের ব্লু লাইট চোখের জন্য ক্ষতিকর। তাই ডার্ক মোড ব্যবহার করাই উত্তম।