হাসপাতালে যেতে হয়না এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম। হাসপাতালে গেলেই দেখতে পাওয়া যাবে অস্ত্রোপচারের ঠিক আগে ডাক্তাররা একটি সবুজ পোশাক পরে থাকেন। তবে লাল-নীল বা হলুদ পোশাক পরতে খুব কম ডাক্তারকেই দেখা যায়। নিশ্চয়ই মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে কেন এমন হয়? আসলে এর পিছনে রয়েছে বিজ্ঞান। খবর- নিউজ ১৮, আনন্দবাজার পত্রিকা’র।
একটু লক্ষ্য করলে বোঝা যাবে, যে যখনই কোনো আলোকিত জায়গা থেকে সামান্য অন্ধকার ঘরে প্রবেশ করা হয় তখনই চোখের সামনে অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। এই পরিস্থিতিতে সবুজ বা নীল রংয়ের সংস্পর্শে এলে বেশ স্বস্তি পাওয়া যায়। অপারেশন থিয়েটারে ডাক্তারদের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে। মেগা ওয়েবসাইট Quora-তে অনেকেই এমন প্রশ্ন করেছেন, যার উত্তর দিয়েছেন বিকাশ মিশ্র নামের এক ব্যক্তি
সেন্ট ফ্রান্সিস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করেছেন বিকাশ। এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানিয়েছেন যে, সবুজ এবং নীল রং আলোর বর্ণালীতে লালের বিপরীতে অবস্থিত। সার্জারির সময় সার্জনের মনোযোগ বেশিরভাগ লাল রংয়ের দিকেই থাকে। কাপড়ের সবুজ এবং নীল রং থাকলে সার্জনের দৃষ্টিশক্তি বাড়ে এবং চোখকে লালের প্রতি আরো সংবেদনশীল করে তোলে।
সম্প্রতি, ‘টুডে সার্জিক্যাল নার্স’ নামক একটি পত্রিকার ১৯৯৮তম সংখ্যায় একটি প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছিল। যেখানে বলা হয়েছে যে, সবুজ কাপড় অস্ত্রোপচারের সময় চোখকে বিশ্রাম দেয়।
BLK সুপারস্পেশালিটি হাসপাতাল (BLK হাসপাতাল) দিল্লিতে কর্মরত অঙ্কো সার্জন ডা. দীপক নাইনের মতে, বিশ্বের প্রথম সার্জন হিসেবে বিবেচিত সুশ্রুত আয়ুর্বেদে অস্ত্রোপচারের সময় সবুজ রংয়ের ব্যবহার সম্পর্কে লিখেছেন। তবে এর কোনো নির্দিষ্ট কারণ নেই।
অনেক জায়গায়, সার্জনরা অস্ত্রোপচারের সময় নীল এবং সাদা পোশাকও পরেন। তবে সবুজ রংই সবচেয়ে উপযুক্ত কারণ এতে রক্তের দাগ বাদামি দেখা যায়। ডাক্তারদের নীল বা সবুজ পোশাক পরার রেওয়াজ যে শুরু থেকেই ছিল তা নয়।
গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, আগে চিকিৎসক ও হাসপাতালের সব কর্মীরা সাদা পোশাক পরতেন। কিন্তু ১৯১৪ সালে এক ডাক্তার এটিকে সবুজে পরিবর্তন করেন। তারপর থেকেই সবুজ পোশাক পরার প্রবণতা বাড়তে দেখা যায়। অবশ্য আজকাল কিছু ডাক্তাররা নীল পোশাকও পরে থাকেন।