আমেরিকান কোম্পানি টেসলা খুব শীঘ্রই ভারতের মাটিতে নিজেদের গাড়ি তৈরির কারখানা খুলতে চলেছে। এই বিষয়ে ভারত সরকারের সঙ্গে ইতিমধ্যেই তাদের বৈঠক সম্পন্ন হয়ে গেছে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ভারতের মাটিতে তৈরি হওয়ার ফলে আকাশছোঁয়া টেসলার ইলেকট্রিক গাড়ির দাম অনেকটাই সস্তা হয়ে যাবে। এ ছাড়া দেশের কর্মসংস্থানের নতুন দিক খুলে যাবে। টেসলার এই পদক্ষেপ ভবিষ্যতে বহু গাড়ি নির্মাতা কোম্পানিকে অনুপ্রাণিত করবে এদেশে কারখানা খোলার জন্য।
একটি রিপোর্টের মাধ্যমে জানা যাচ্ছে যে, টেসলার পরিকল্পনা হল প্রতিবছর ৫ লক্ষ ইউনিট ইভি উৎপাদন করা। যদি টেসলা ভারতে নিজের গাড়ি নির্মাণের কারখানা তৈরি করতে পারে তাহলে অনেকাংশে লাভবান হবে। ভারতের কর্মীদের মাইনের পিছনে খরচ অনেক কম এবং শুল্কে ছাড় পাওয়ার ফলে গাড়ির দাম কমে যাবে, ফলে চাহিদাও বৃদ্ধি পাবে। ভবিষ্যতে টেসলার গাড়ির দাম হবে ২০ লক্ষ টাকা যা বর্তমানে ৩০ লক্ষ টাকারও বেশি। কুড়ি লক্ষ টাকা দিয়ে একটি ইলেকট্রিক গাড়ি কেনার সামর্থ্য ভারতের সাধারণ মধ্যবিত্তের নেই কিন্তু এই পদক্ষেপ গাড়ির দুনিয়াতে এক নবজাগরণ সৃষ্টি করবে।
সূত্রের মাধ্যমে জানা গেছে যে, পাশ্চাত্য এর এই কোম্পানি ভারতকে গাড়ির রপ্তানি কেন্দ্র হিসেবে পরিণত করতে চাইছে। এমনকি এখানকার তৈরি গাড়ি কিংবা গাড়ির পার্টস চীনে রপ্তানি করা হবে। এই পরিকল্পনা সত্যিই খুব উচ্চাভিলাষী কিন্তু স্থানীয় উৎপাদন এবং রপ্তানির দিক থেকে বিচার করতে গেলে এর ইতিবাচক ফলাফল সুদূরপ্রসারী।
টেসলা খুব তাড়াতাড়ি এইদেশের ক্রমবর্ধমান গাড়ির বাজারে নিজের জায়গা কায়েম করতে পারবে। এই পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্য হলো চীনের প্রতি নির্ভরশীলতা কমানো। লকডাউনের সময় থেকেই চীনের প্রতি নির্ভরশীলতার পরিণাম বুঝে গেছে বিভিন্ন সংস্থা। সেই কারণেই ভারতের প্রতি ঝুঁকে পড়ছে বিশ্বের বড় বড় সংস্থা। এই সুযোগ ভারত কোনোভাবেই হাতছাড়া করতে চায়না, তাই বিভিন্ন করপ্রদানে ছাড় দিয়েছে ভারত। ভারতের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এই সিদ্ধান্ত।
টেসলার এই বড় পদক্ষেপ ভারতের ক্ষেত্রেও যথেষ্ট লাভজনক। এর ফলে ভারতের রাস্তায় ইভি গাড়ির সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাবে। গাড়ির মূল্য কিছুটা হলেও হ্রাস ভাবে এবং সাধারণ মানুষের পক্ষে কর্মসংস্থান বেড়ে যাবে। টেসলাকে দেখাদেখি বিশ্বের বড় বড় গাড়ির সংস্থা এদেশে নিজেদের ব্যবসা বিস্তার করার চেষ্টা করবে। টেসলা এই পদক্ষেপ আগেও নেওয়ার চেষ্টা করেছিল কিন্তু উচ্চ করের কারণে তাদের পিছিয়ে যেতে হয়। এবার কেন্দ্রীয় সরকার পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে, তাদের ভারতেই গাড়ি উৎপাদন করতে হবে এবং প্রয়োজনে সমস্ত রকম সাহায্য করবে ভারত সরকার।