ভিপিএন VPN ( ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক) এটা আপনি আপনার ফোন,ডেস্কটপে বা ল্যাপটপে ব্যাবহার করতে পারেন। ফোনের ক্ষেত্রে আপনাকে যেকোনো একটি vpn অ্যাপস ইন্সটল করে ওটাকে আপনার ফোনের সঙ্গে কানেক্ট করতে হবে একবার কানেক্ট হয়ে গেলে আপনি আপনার ইচ্ছামত এর সুযোগ সুবিধা নিতে পারেন । ডেস্কটপ বা ল্যাপটপ এর ক্ষেত্রে আপনাকে নেটওয়ার্ক সেটিংসে গিয়ে কিছু সেটিং করতে হবে একবার এই সেটিংস্ করে নিলে আপনিও আপনার ডেক্সটপে এই সুযোগ সুবিধা পাবেন।
VPN (Virtual Private Network) একটি প্রযুক্তি যা ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তা এবং নিরাপত্তা সুরক্ষা করতে ব্যবহার করা হয়। এটি আপনার ইন্টারনেট সংযোগকে একটি সিকিউর টানেলে পরিণত করে যা আপনাকে আপনার ইন্টারনেট গোপনীয়তা রক্ষা করে এবং আপনাকে অন্যান্য ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের থেকে অপরিচিত করে তুলে ধরে।
১) প্রথমে আপনাকে একটি VPN পরিষেবা নিতে হবে । আপনি এটা ফ্রী অথবা মাসিক এবং বার্ষিক প্ল্যানের মাধ্যমে একটি VPN সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। অবশ্য আপনি এটা ফ্রিতেও নিতে পারেন অনলাইন সার্ভিস ব্যবহার করে তবে ফ্রীতে যে সব vpn পাবেন সে গুলোতে সুযোগ সুবিধা সীমিত ফিচারস খুব কম থাকে ।
২) VPN সফটওয়্যার ইনস্টল করুন:
আপনার ডিভাইসে vpn সফটওয়্যার বা অ্যাপস ইনস্টল করুন। আপনি এটা আপনার কম্পিউটার, স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যাবহার করতে পারেন।
৩) VPN কানেক্ট করুন:
অ্যাপস বা সফটওয়্যারটি ইনস্টল করার পর, এটি চালানোর সময় আপনার সাবস্ক্রিপশনে দেওয়া নাম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করুন । এরপর, আপনি আপনার ইচ্ছামত সার্ভার নির্বাচন করতে পারেন, যেই সার্ভারে গিয়ে আপনি কাজ করতে চান।
৪) ইন্টারনেট চালু রাখেন:
অনেক ক্ষেত্রে VPN কানেক্ট করার আগে আপনাকে আপনার ডিভাইসের ইন্টারনেট খোলা রাখতে হবে, এর পর আপনি ইন্টারনেট ব্রাউজ করতে পারবেন। আপনার সংযোগটি এখন একটি সিকিউর টানেলে সংক্রান্ত হয়েছে, যা আপনার ইন্টারনেট কমিউনিকেশন এনক্রিপ্ট (গোপন) করে এবং আপনার গোপনীয় তথ্যগুলির নিরাপত্তা সুরক্ষা করে।
এগুলো হলো VPN ব্যবহারের করার কিছু সাধারণ পদ্ধতি। তবে প্রতিটি VPN সফটওয়্যারের ইন্টারফেস আলাদা আলাদা হতে পারে । তাই, প্রতিটি VPN সফটওয়্যারের নির্দিষ্ট নির্দেশাবলী অনুসরণ করা উচিত।
Vpn ব্যাবহারের সুবিধা:
আজকাল আমরা অনেকেই আমাদের ফোনে, ডেস্কটপে বা ল্যাপটপে ভিপিএন ব্যবহার করে থাকি । এই ভিপিএন- এর মাধ্যমে আমরা একাধিক সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকি। যা নিচে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো
১) যদি আপনার ডিভাইসে ভিপিএন পরিষেবা চালু থাকে তাহলে আপনি বিভিন্ন পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহার করলে আপনার ডিভাইস বা সিস্টেম কেউ ট্র্যাক করতে পারবে না অর্থাৎ ইউজাররা হ্যাকার বা স্ক্যামারদের থেকে অনেক দূরে থাকবে । কেউ যদি আপনার ব্যাক্তিগত তথ্য লোকেশন চুরি করতে চায় তাহলে সে অসফল হবে।
২) VPN আপনাকে আপনার বর্তমান সার্ভার বা লোকেশন থেকে বিশ্বের যে কোনো লোকেশনে নিয়ে যেতে পারে । যেমন কোনো সাইট বা অ্যাপস যদি আপনার দেশে নিষিদ্ধ থাকে তাহলে আপনি এটা ব্যাবহার করে সেই সার্ভার বা অ্যাপসে প্রবেশ করতে পারেন। যেকোনো ব্লক কন্টেন্ট ব্যাবহার করতে পারেন ।
৩) আপনার ডিভাইসের সমস্ত ডেটা এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন পদ্ধতিতে সুরক্ষিত থাকবে। এর ফলে সাইবার প্রতারণার ঝুঁকি কমবে। হ্যাকাররা আপনার ডিভাইস থেকে দূরে থাকবে, সহজে আপনার ডিভাইসের অ্যাকসেস বা নাগাল পাবে না হ্যাকাররা।
৪) এর মাধ্যমে আপনি জরুরী ইন্টারনেট পরিষেবা বেবহার করতে পারেন । VPN খুব গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে যখন আপনার এলাকায় আপনার নিজস্ব নেটওয়ার্ক বন্ধ থাকে । VPN ব্যবহার করে আপনি যেকোনো উন্মুক্ত ওয়াইফাই হটস্পটে সুরক্ষিত ইন্টারনেট ব্যাবহার করে কাজ করতে পারেন।
৫) ইচ্ছামত আইপি অ্যাড্রেস পরিবর্তন। যখন আপনি ভিপিএন পরিষেবার মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্রাউজিং করবেন, তখন কোনওভাবেই আপনার লোকেশন অর্থাৎ কোথায় আপনি রয়েছেন তা ট্র্যাক করা যাবে না। ফলে হ্যাকাররা আপনার ডিভাইসের কোনওভাবেই নাগাল পাবে না। মূলত ভিপিএন চালু থাকলে ইউজারের আইপি অ্যাড্রেস বা ইন্টারনেট প্রোটোকল অ্যাড্রেস বারবার পরিবর্তন হয়। তাই ইউজারদের ট্র্যাক করা যায় না এবং তাদের গোপনীয়তা বজায় থাকে।
Vpn ব্যাবহারের ফলে আপনি যেমন উপরিক্ত সুযোগ সুবিধা গুলি পেয়ে থাকেন ঠিক তেমনি এর কিছু অসুবিধা রয়েছে যা নিচে সংক্ষেপে দেওয়া হলো…
VPN ব্যবহারের কিছু অসুবিধা:
১) ইন্টারনেট স্পীড পরিবর্তন:
VPN ব্যবহার করার ফলে ইন্টারনেটের স্পীড কম বেশি হতেই থাকে ফলে ইন্টারনেট ব্যবহারে গোলযোগ সৃষ্টি হয় যেমন স্ট্রিমিং ভিডিও, গেমিং ইত্যাদি বিষয়ে আপনি অসুবিধায় পড়তে পারেন।
২) সংযোগের স্থায়িত্ব: VPN সার্ভারের কাচে থেকে প্রাপ্ত সংযোগের স্থায়িত্ব বিপর্যয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। যখন একটি VPN সার্ভার বা কানেকশনে সমস্যা হয় তখন ইন্টারনেট সংযোগটিও পরিবর্তন হতে পারে এবং আপনি সংযোগ হারাতে পারেন।
৩) সার্ভার সংকট:
অনেক ক্ষেত্রে সার্ভার সংখ্যা সীমাবদ্ধতা থাকে । কিছু কিছু vpn সফটওয়্যার বা অ্যাপস VPN সার্ভারের সংখ্যা সীমিত করে দেয়। এটি সার্ভারের জন্য দেওয়া আপনার টাকায় অনিশ্চিততা তৈরি করতে পারে এবং আপনার পছন্দসই অবস্থানের সার্ভার পাওয়ায় সমস্যা সৃষ্টি করে।
৪) বাড়তি খরচ:
অনেক ক্ষেত্রে আপনাকে আপনার ডিভাইসে vpn সংযোগ করার জন্য সফ্টওয়ার বা অ্যাপস কিনে নিতে হয় তাদেরকে মাসিক কিছু অর্থ দিতে হয় । এবং এরা অনেক সময় অতিরিক্ত চার্জ ধার্য করে যেটা অনেকেরই পছন্দ হয় না।
আপনার ডিভাইসে vpn কানেক্ট করা বা মেম্বারশিপ নেওয়ার আগে তাদের নিয়ম নীতি , শর্তাবলী অবশ্যই ভালো করে পড়ে নিবেন না হলে পরবর্তীতে সমস্যায় পড়তে পারেন । মার্কেটে এখন অনেক থার্ড পার্টি ফ্রী vpn apps বা সফটওয়্যার পাওয়া যাচ্ছে এগুলো থেকে দূরে থাকবেন কারন এতে আপনার ব্যাক্তিগত তথ্য চুরি যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে । সব সময় ট্রাস্টেড সাইট প্লে স্টোর এবং অ্যাপল স্টোর থেকেই অ্যাপস ডাউনলোড করবেন ।