তথ্য প্রযুক্তির যুগে ইন্টারনেটের মাধ্যমে পৃথিবী একটি গ্লোবাল ভিলেজে রুপান্তরিত হয়েছে। ইন্টারনেট আমাদের দৈনন্দিন কাজ কর্মকে করে দিয়েছে সহজ। আমরা আমাদের ব্যক্তিগত কাজ থেকে শুরু করে অফিসিয়াল কাজ কর্ম, আর্থিক লেনদেন সহ অতিগুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে ইন্টারনেট ব্যবহার করছি। বাসায় খুচরো বিনোদন থেকে মহাকাশে নাসার গবেষণা বলেন সবকিছুর সাথেই ইন্টারনেট ওতপ্রোতভাবে জড়িত ।ইন্টারনেট ছাড়া আমরা আমাদের একটি মুহূর্ত কল্পনা করতে পারি না। বলতে পারেন ইন্টারনেট এখন আমাদের সেরা বন্ধুতে রুপান্তরিত হয়েছে।
কিন্তু একটু থামুন! ইন্টারনেট যেমন দৈনন্দিন কাজ কর্মকে করেছে সহজ, তেমন সামান্য অসাবধানতা বা কোন ভুলের কারণে আপনি হতে পারেন সর্বশান্ত। ইন্টারনেটে আমরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যুক্ত থাকি, কিংবা কেউ আবার ব্যবসায়িক কাজ কর্ম করে থাকি, কোন কারণে যদি এই সকল তথ্য অন্য কারো হাতে চলে যায় তাহলে বিপদের আর শেষ থাকে না। অনেক সময় প্রতারকের প্রতারনার ফাঁদ এমন হয় যে, না বুঝে আমরা সেই ফাঁদে পা দেই। যার ফলে আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য চলে যায় অন্যের কাছে।
এখন জানার বিষয় হলো কিভাবে আমরা আমাদের ব্যক্তিগত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হ্যাকিং বা এই সকল বিপদ থেকে দূরে রাখতে পারিঃ
ফ্রি ওয়াই ফাই ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্কতাঃ
আমরা অনেকেই ফ্রি ওয়াইফাই জোন পেলে আনন্দে আত্তহারা হয়ে যাই। কেউ কেউ এই ধরনের ফ্রি ওয়াইফাই জোনে গুরুত্বপুর্ণ বিষয় চেক করে থাকে যেমন, অনেকে মনে একটু ব্যংক একাউন্টটা চেক করে নেই বা একটা মেইলের আদান-প্রদান করে নেই। এই ধরনের কাজ গুলো করা থেকে বিরত থাকুন, কারণ এই ধরনের কাজের মাধ্যমে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য হাতছাড়া হতে পারে যখন তখন। এই অবস্থায় হ্যাকার কোন ধরনের পাসওয়ার্ড ছাড়াই আপনার ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করে নিতে পারে।
কোন সাইটে লগ ইন করার আগে সতর্ক থাকাঃ
অপিরিচিত কোন সাইটে লগ ইন করা থেকে বিরত থাকতে হবে। আপনি যদি ঠুস ঠাস যে কোন সাইটে লগ ইন করেন এবং সেখানে দেওয়া লিঙ্কে প্রবেশ করেন তাহলেও আপনি হ্যাকিং এর শিকার হতে পারেন। অনেক সময় অপরিচিত কোন সাইটে লগ ইন করার জন্য আপনাকে গুরুত্বপুর্ণ তথ্য দিয়ে লগ ইন করতে হয়, এ ক্ষেত্রে আপনাকে সাবধান থাকতে হবে।
অপরিচিত মেইলের লিঙ্কে ক্লিক না করাঃ
আপনার মেইলের স্প্যামে অপ্রয়োজনীয় / অপরিচিত মেইলের লিংকে ক্লিক করছেন তো একটা অহেতুক ঝামেলায় পড়েছেন। অনেকে বিরক্ত হয়ে আনসাবসক্রাইব বাটনে ক্লিক করেন রেহায় পেতে। কিন্তু ফলাফল হতে পারে উল্টো। যারা স্প্যাম দিচ্ছে আপনাকে তারা বুঝে গেল যে আপনার ই-মেইল আইডিটা জীবন্ত এবং কোন হিউম্যানই এটা ব্যবহার করছে। তাই আনসাবসক্রাইব না করে বরং ডিলিট করে দিতে পারেন।
শক্ত পাসওয়ার্ড ব্যবহার করাঃ
তথ্য প্রযুক্তির যুগে আমরা অনেক ধরনের সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম এবং নানা কাজে অনেক ধরনের অ্যাপস ব্যবহার করি। এই সকল সাইটের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে আমরা পাসওয়ার্ড ব্যবহার করি। ঘরে ঢুকবার জন্য যেমন চাবির প্রয়োজন হয় তেমনি এই সকল অন লাইন সাইটে প্রবেশের জন্য পাসওয়ার্ড এর প্রয়োজন হয়। তাই এই সকল পাসওয়ার্ড শক্ত হওয়া অনেকটা জরুরী।
এখন চলুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে একটা শক্ত পাসওয়ার্ড তৈরি করা যায়ঃ
ভালো পাসওয়ার্ড এ একগুচ্ছ শব্দের সাথে সাথে নাম্বার, কিছু সংকেত এবং শব্দগুলো যেন স্বাভাবিক ডিকশনারী ওয়ার্ড না হয়ে অন্য কিছু হয় তেমনটিই কাম্য।
সক্ত পাসওয়ার্ড তৈরীর জন্য কতগুলো টিপস:
১। শব্দকে উল্টো করে লিখুন। Bangladesh যেমন hsedalgnab ।
২। কিছু কিছু অক্ষরকে নম্বরে বদলে দিন। anluhke কে an1uhk3 লিখুন। লক্ষ্য করুন যেন এল অক্ষর 1 এবং ই অক্ষর 3 করা হয়েছে।
৩। র্যান্ডমলি যেকোন অক্ষরকে ক্যাপিটাল করুন, কেবল প্রথম অক্ষরকেই নয়। an1uhk3 না হয়ে হতে পারে, an1uHk3
কাজ কর্মের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ভার্চুয়াল জগতে না রাখাঃ
আপনার কাজের তথ্য ভার্চুয়াল জগতে যত কম রাখা যায় ততই ভালো। কারণ আপনার শত্রু কি ফাঁদ পাতছে তা বলা তো যায় না। কোন ভাবে আপনার নিরাপত্তা স্তর ব্রেক করতে পারলে হাতিয়ে নিয়ে যাবে আপনার গোপন তথ্য।
১/২ মাস পর পর পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করাঃ
আমরা যারা সাধারণ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী তাদের নিরাপত্তা বলতে থাকে একমাত্র এই পাসওয়ার্ড। এ দিকে আমাদের সকলের নজর দেওয়া উচিৎ।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপরিচিত কোন লোককে অ্যাড না করাঃ
এমন অনেক ব্যবহারকারী আছেন যারা প্রোফাইল ছবি দেখেই ফ্রেন্ড লিস্টে এড করে বসেন। কোন অপরিচিত রিকোয়েস্ট এলে তাদের ইনফো আগে যাচাই করে নিন। দেখুন তার ফ্রেন্ডলিস্টের সংখ্যা কেমন। তার অন্যান্য ইনফো সঠিক কিনা। তাছাড়া আপনাদের মাঝে কোন ফ্রেন্ড কমন আছে কিনা তাও দেখে নিন। তারপর সিদ্ধান্ত নিন। এমন কাউকে লিস্টে যুক্ত করবেন না যাদের প্রোফাইল ছবি পর্যন্ত নেই।
https://bangla-bnb.saturnwp.link/%e0%a6%a8%e0%a6%a4%e0%a7%81%e0%a6%a8-%e0%a6%ac%e0%a6%9b%e0%a6%b0%e0%a7%87-%e0%a6%85%e0%a6%aa%e0%a7%8b-%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%9f%e0%a6%ab%e0%a7%8b%e0%a6%a8/
আপনার প্রতিটি তথ্য আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্য প্রয়োজন সেই তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। নিরাপত্তার আগেও প্রয়োজন সচেতনাতা। তাই সচেতন হোন নিরাপদ থাকুন।