ক্রীড়াঙ্গনে যেকোনো সিদ্ধান্ত নিখুঁত করতে নতুন নতুন নিয়ম প্রয়োগ করতে দেখা যায়। করা হয় প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার। তেমনই ভারতীয় প্রিমিয়ার লিগেও (আইপিএল) যেকোনো সিদ্ধান্ত দ্রুত ও নির্ভুলভাবে নেওয়ার জন্য নতুন স্মার্ট রিপ্লে পদ্ধতি চালু করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে রোমাঞ্চ আর উত্তেজনা আরও বাড়তে চলেছে জনপ্রিয় এই ফ্র্যাঞ্চাইজি আসরটিতে। আগামী ২২ মার্চ পর্দা উঠবে আইপিএলের সপ্তদশ আসরের।
ক্রীড়াভিত্তিক ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফো এক প্রতিবেদনে আইপিএলে নতুন পদ্ধতি চালুর খবর জানিয়েছে। তারা বলছে, স্মার্ট রিপ্লে সিস্টেমে টিভি আম্পায়ার এবং হক-আই অপারেটর একই রুমে বসবেন। যার ফলে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারবেন তারা। এছাড়া মাঠের মধ্যে থাকা হক-আইয়ের ৮টি দ্রুতগতির ক্যামেরা থেকে অনেক বেশি নিখুঁত ছবি পাবেন টিভি আম্পায়াররা। এর আগে হক-আই অপারেটর এবং টিভি আম্পায়ারের মধ্যে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করা টিভি ব্রডকাস্ট ডিরেক্টর আর নতুন সিস্টেমের অধীনে জড়িত থাকবেন না।
স্মার্ট রিপ্লে পদ্ধতিতে একসঙ্গে দুটি ছবি দেখার সুযোগ থাকছে আম্পায়ারদের সামনে। ফলে থার্ড আম্পায়ার আরও অনেক তাড়াতাড়ি বেশি তথ্য পাবেন, যা আগে সম্ভব হতো না। নতুন এই পদ্ধতির ব্যবহারে আরও দ্রুত এবং নির্ভুল সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হবে থার্ড আম্পায়ারের। স্টাম্পিং, ক্যাচ, রান আউট কিংবা বাউন্ডারিতে চার বাঁচানোর কঠিন সিদ্ধান্তগুলো এখন একাধিক ফুটেজ একসঙ্গে দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া অনেক সহজ হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এর আগে কোনো ফিল্ডার বাউন্ডারির কাছাকাছি ক্যাচ লুফে নিলে আলাদা করে ফিল্ডারের পা এবং হাতের ফুটেজ থাকতো না আম্পায়ারদের কাছে। নতুন স্মার্ট রিপ্লে সিস্টেমে সেটি থাকবে। যার ফলে বলটি ধরার সময় ফিল্ডারের পায়ের অবস্থানও একসঙ্গে দেখতে পাবেন টিভি আম্পায়াররা। যার ফলে সহজ হবে সিদ্ধান্ত নেওয়া। একইভাবে কোনো ওভারথ্রোতে চার রান হয়ে গেলে ফিল্ডারের থ্রো করার মুহূর্তের সঙ্গে ব্যাটারদের ক্রিজে দৌড়ানোর সময়ের ফুটেজ একসঙ্গে দেখা যাবে। ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপে বেন স্টোকসের ব্যাটে লেগে চার হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনার ক্ষেত্রে আরও নিখুঁতভাবে সিদ্ধান্ত দিতে পারবেন আম্পায়াররা।
প্রতি ম্যাচে হক-আইয়ের ৮টি ক্যামেরা থাকবে। দুটি করে চারটি থাকবে সোজা বাউন্ডারির দুই পাশে। দুটি করে চারটি থাকবে স্কয়ার অব দ্য উইকেটের দুই পাশে। আইপিএলের সর্বশেষ আসর পর্যন্ত মূলত বল ট্র্যাকিং এবং আল্ট্রাএজের ক্ষেত্রে হক-আই এর ক্যামেরা ব্যবহার করা হতো। এছাড়া স্টাম্পিং, রান আউট, ক্যাচ এসব ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা যেত ক্যামেরার ফুটেজ। নতুন এই নিয়মের সঙ্গে পরিচিত করানোর জন্য মুম্বাইয়ে স্থানীয় ও বিদেশি ১৫ জন আম্পায়ারের দুই দিনব্যাপী কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।