আন্তর্জাতিক বাজারে গতকাল রেকর্ড উচ্চতায় উঠেছে স্বর্ণের দাম। যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতি কমে আসা এবং জুনে প্রথমবারের মতো ফেডের সুদহার কমার সম্ভাবনা ধাতুটির দাম বাড়াতে ভূমিকা রেখেছে। খবর রয়টার্স।
স্পট মার্কেটে গতকাল স্বর্ণের দাম ১ দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে। আউন্সপ্রতি মূল্য স্থির হয়েছে ২ হাজার ২৫৮ ডলার ১২ সেন্ট, আগের সেশনে যা ছিল সর্বকালের সর্বোচ্চ ২ হাজার ২৬৫ ডলার ৪৯ সেন্ট।
অন্যদিকে নিউইয়র্ক মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জে (নিমেক্স) স্বর্ণের ভবিষ্যৎ সরবরাহ মূল্য আগের দিনের তুলনায় ১ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে। মূল্যবান ধাতুটির প্রতি আউন্সের দাম স্থির হয়েছে ২ হাজার ২৭৯ ডলার ১০ সেন্টে।
এদিকে স্পট মার্কেটে গতকাল স্বর্ণ ছাড়াও অন্যান্য মূল্যবান ধাতুর দামও ঊর্ধ্বমুখী ছিল। এদিন রুপার দাম দশমিক ৯ শতাংশ বেড়েছে। আউন্সপ্রতি মূল্য স্থির হয়েছে ২৫ ডলার ১৯ সেন্ট। প্লাটিনামের দাম বেড়েছে দশমিক ৫ শতাংশ। ধাতুটি প্রতি আউন্স কেনাবেচা হয়েছে ৯১২ ডলার ৯০ সেন্টে। এছাড়া প্যালাডিয়ামের দাম দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে। আউন্সপ্রতি মূল্য দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২১ ডলার ৭৭ সেন্ট।
তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে ফেব্রুয়ারিতে ভোক্তা ব্যয় সূচক বাড়লেও তা ছিল খুবই সীমিত আকারের। দেশটির ভোক্তাব্যয়ে অপ্রত্যাশিত কোন পরিবর্তন না ঘটায় জুনের মধ্যে ফেডের সুদহার কমানোর সম্ভাবনা আরো দৃঢ় হয়েছে বলে মনে করছেন বাজার পর্যবেক্ষক ও বিনিয়োগকারীরা। এ অবস্থায় স্বর্ণের বিনিয়োগ চাহিদাও এখন ঊর্ধ্বমুখী। মূল্যবান ধাতুটির বাজার দরে এরই মধ্যে প্রতিফলন দেখতে পাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
পিসিই প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে আইজির বাজার বিশ্লেষক ইয়াপ জুন রোং বলেন, ‘ব্যক্তিগত ভোক্তা ব্যয় সূচক কমার বিষয়টি প্রত্যাশিত ছিল, যা স্বর্ণের দাম বাড়ার পেছনে ভূমিকা রেখেছে। সামনে আরো বাড়তে পারে।’
জুন রোং আরো বলেন, ‘ব্যক্তিগত ভোক্তা ব্যয়ের সূচক বর্তমানে প্রায় দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন স্তরে। ফলে ফেডের সুদহার কমানোর প্রক্রিয়া শিগগিরই শুরু হতে পারে।’
মধ্যপ্রাচ্যে হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধের পর থেকে এখন পর্যন্ত ধাতুটির দাম আউন্সে প্রায় ৩০০ ডলার বেড়েছে। তবে তিন বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে মাসিক হিসেবে স্বর্ণের দাম সবচেয়ে বেশি বেড়েছে মার্চে।
ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ার জেরেমি পাওয়েল আগেই জানিয়েছিলেন, ফেডের মূল্যস্ফীতি ২ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য শিগগিরই অর্জিত হতে যাচ্ছে। এতে সফল হলেই সুদহার কমিয়ে আনা হবে।
সম্প্রতি তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক মূল্যস্ফীতির অবস্থা আমরা যেমনটি দেখতে চেয়েছিলাম, ঠিক তেমনই।’ এ সময় আগামী জুনে ফেডের সুদহার কমানোর দিকে ইঙ্গিত করেন তিনি।
শিকাগো মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জের (সিএমই) ফেডওয়াচ টুলের তথ্যানুযায়ী, ব্যবসায়ীরা মনে করছেন আগামী জুনে সুদহার কমানোর ৬৯ শতাংশ সম্ভাবনা রয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে এ সম্ভাবনা ৬৪ শতাংশ ছিল বলে জানিয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা।