চলছে পবিত্র রমজান মাস। এ মাসে দীর্ঘসময় না খেয়ে থাকতে হয় বলে পানিশূন্যতার আশঙ্কা থেকে যায়। আবার আবহাওয়া সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তপ্ত হয়ে উঠছে। এ অবস্থায় দিনে যেন পানি তৃষ্ণা না পায় বা পানিশূন্যতার সমস্যা দেখা না দেয়, এজন্য সেহরি বা ইফতারে বেশি পানি পান করা হয়।
স্বাভাবিকভাবেই সুস্থ থাকার জন্য প্রতিটি মানুষের ক্ষেত্রে পানির প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। কিন্তু রমজান মাসে কীভাবে বা কতটুকু পানি পান করতে হবে, সেটি অনেকেরই অজানা। সম্প্রতি এ ব্যাপারে দেশের একটি সংবাদমাধ্যমের কথা বলেছেন রাজধানীর ধানমন্ডির পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কনসালট্যান্ট ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. এম এস আলম। এবার তাহলে এ ব্যাপারে জেনে নেয়া যাক।
এ চিকিৎসকের ভাষ্যমতে, একজন মানুষের ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত অন্তত দুই লিটার পরিমাণ বিশুদ্ধ, নিরাপদ পানি পান করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। ইফতারের পর থেকে সেহরির আগ পর্যন্ত ৩০/৪০ মিনিট পরপর এক থেকে দেড় লিটার পরিমাণ পানি পান করা উচিত। তারাবিহ নামাজের সময় বোতলে পানি রেখে নামাজের আগে ও পরে পান করে মোট পানি পানের পরিমাণ পূর্ণ করা সম্ভব।
রোজা রাখলে শরীর হাইড্রেটেড রাখার জন্য, ত্বক বিবর্ণ বা মলিন না হয়, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা না হওয়া এবং গ্যাসের সমস্যা যেন সৃষ্টি না হয়- এজন্য যথেষ্ট পানি পান নিশ্চিত করতে হবে। পানি ছাড়া তরল জাতীয় অন্যান্য পানীয় পান করতে পারেন। এসবের মধ্যে ডাবের পানি, লেবুর শরবত ও মৌসুমি বিভিন্ন ফলের রস পানে প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাওয়া যায়।
কেউ চাইলে দুধও পান করতে পারেন। এতে প্রোটিন ও ফ্যাট রয়েছে। একইসঙ্গে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়ামসহ অন্যান্য খনিজ লবণের উৎস হিসেবে কাজ করে দুধ। পাশাপাশি সচেতনতার জন্য কোল্ড বা এনার্জি ড্রিংকস, রঙিন পানীয় এবং চা ও কফির মতো পানীয় এড়িয়ে চলা হবে ভালো কাজ। এসব পানীয় পানি শূন্যতার ঘাটতি মেটায় না, বরং শরীরের আরও ক্ষতি করে।
শিশু বা অল্প বয়সী ও বয়স্ক ব্যক্তিরা রোজা রাখলে তাদের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। ইফতার ও সেহরিতে যথেষ্ট পানি পানের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে তাদের। এছাড়া অতিরিক্ত গরমে বা রান্নাঘরে, শারীরিক পরিশ্রমের ক্ষেত্রে প্রতি এক ঘণ্টা থেকে দুই ঘণ্টা পরপর ১০-১৫ মিনিটের জন্য ছায়ায় বিশ্রাম নেয়া উচিত। সেহরিতে কিছু না খেয়ে রোজা রাখার অভ্যাস থাকলে সেহরিতে অন্তত পানি বা তরলজাতীয় কিছু অবশ্যই খাওয়া উচিত। এতে পানিশূন্যতার আশঙ্কা থাকবে না।