হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় উচ্চ রক্তচাপ। অনেকসময় তা উপসর্গহীন হতে পারে। সবসময় উল্লেখযোগ্য লক্ষণ দেখা যায় না। কিন্তু তাতে ঝুঁকি থেকেই যায়। তাই উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ জরুরি। কিছু অভ্যাস আপনার উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখতে পারে। স্বাস্থ্যকর কিছু অভ্যাস আয়ত্ত করতে পারলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াকার ফ্যামিলি কেয়ারের চিকিৎসক ডা. রজার্স ওয়াকার। আসুন জেনে নেওয়া যাক সেই অভ্যাস সম্পর্কে-
ফল, শাকসবজি খাওয়া : ফল এবং শাকসবজি খুবই উপকারী। উদ্ভিদে ভিটামিন, ফাইবার, ফাইটোকেমিক্যালস এবং বায়োফ্ল্যাভোনয়েডসহ অনেক যৌগ থাকে যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেমন কোয়েরসেটিন একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং বায়োফ্ল্যাভোনয়েড যা আপেল, পেঁয়াজসহ আরও অনেক ফল এবং সবজিতে রয়েছে। কোয়েরসেটিন রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া ফল ও সবজি প্রচুর ফাইবার সরবরাহ করে। ফাইবার রক্তচাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি হৃদযন্ত্র ভালো রাখে। মটরশুঁটি, নাশপাতি এবং মসুর ডালে পাবেন পর্যাপ্ত ফাইবার।
নিয়মিত ব্যায়াম করুন : প্রতি সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট ব্যায়াম করা জরুরি। আপনি এটিকে সারা দিনে ১০ মিনিটের ছোট অংশে ভাগ করে নিতে পারেন। ব্যায়াম কোলেস্টেরল এবং রক্তে শর্করার মাত্রাও নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়ক ভূমিকা রাখে। এমনটাই বলছে, আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন। সুস্থ থাকতে নিয়মিত রুটিন করে হাটতে হবে।
লবণ এড়িয়ে চলুন : রক্তচাপ বাড়ায় এমন খাবার খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। এর মধ্যে প্রক্রিয়াজাত এবং ভারী মিহি খাবার উল্লেখযোগ্য। সুপারশপগুলোতে থাকা স্বাস্থ্যকর টিনজাত স্যুপেও থাকতে পারে বাড়তি লবণ। এ ধরনের খাবার কেনার আগে সবসময় উপাদান লেবেল চেক করুন। লবন খাওয়া কমিয়ে দিন। টোকা লবনতো নয়ই।
বেশি করে পানি পান করা জরুরি : পানির অপর নাম জীবন। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানে যেমন শরীর ভালো থাকে, তেমনি রক্তচাপ স্বাভাবিক করতেও সহায়তা করে। পানি পানের অভ্যাস আপনাকে সুস্থ রাখবে। বাইরে বের হওয়ার সময় পানির বোতল সঙ্গে রাখার অভ্যাস করুন। অফিসে কাজের ডেস্কেও পানি ভর্তি বোতল রাখুন। কিছুক্ষণ পর পর পানি পান করুন। দেখবেন শরীর সতেজ লাগছে।
পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করা জরুরি : ঘুম কোনও বিলাসিতা নয়। শরীরের প্রতি রাতে ঘুমের প্রয়োজন, যদি আপনি ক্রমাগত কম ঘুমিয়ে থাকেন তবে এটি আপনার রক্তচাপকে অনিয়ন্ত্রিত করে দিতে পারে। প্রতি রাতে সাত থেকে নয় ঘন্টা ঘুমানোর জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করুন। একটি ঘুমানোর রুটিন তৈরি করুন।
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা : স্ট্রেস নানা ধরনের শারীরিক জটিলতার ঝুঁকি বাড়ায়। এতে কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস, ধ্যান, বই পড়া বা প্রকৃতিতে সময় কাটানোর মতো কাজগুলো করে স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন।