বিদেশে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে প্রধান প্রতিবন্ধকতা আর্থিক সঙ্কট। ফলে যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও বিদেশে পড়তে যেতে পারেন না অনেকে। এ সমস্যার সমাধানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ, সংস্থা ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আর্থিক সহযোগিতা বা স্কলারশিপ প্রদান করে থাকে। স্কলারশিপ বা শিক্ষাবৃত্তির মাধ্যমে স্বল্প খরচে বা বিনা খরচেই পড়াশোনার জন্য বিদেশে যাওয়া যায়। স্কলারশিপের ধরন অনুযায়ী আবাসন ভাতা, যাতায়াত ভাতা, বিমানের টিকিটও অন্তর্ভুক্ত থাকে। জানুন বিদেশে স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়।
ফুলব্রাইট স্কলারশিপ, যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রের ফুলব্রাইট স্কলারশিপ ১৫৫টি দেশের ৪ হাজার শিক্ষার্থীকে দেওয়া হয়। প্রায় সব বিষয়ের এই স্কলারশিপ দেওয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া-আসার বিমান ভাড়া, টিউশনসহ সকল একাডেমিক ফি, আবাসন খরচ, খাওয়া খরচ, স্বাস্থ্য বিমা, ভ্রমণ ভাতা, ব্যক্তিগত খরচের জন্য মাসিক ভাতা ইত্যাদি এই স্কলারশিপের অন্তর্ভুক্ত।
ফুলব্রাইট স্কলারশিপ পেতে বাংলাদেশের যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকে প্রথম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি থাকা যাবে না। কমপক্ষে দুই বছর কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। আইইএলটিএস-এর ক্ষেত্রে ন্যূনতম স্কোর হতে হবে ৭। টোফলের ক্ষেত্রে ন্যূনতম স্কোর হতে হবে ৮০। সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হবে। এই যোগ্যতাগুলো থাকলেই এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
scholarshipশেভেনিং স্কলারশিপ ও কমনওয়েলথ মাস্টার্স স্কলারশিপ, যুক্তরাজ্য
শেভেনিং ও কমনওয়েলথ স্কলারশিপের মাধ্যমে আপনি যুক্তরাজ্যে যেতে পারবেন। ১৪৪ দেশ থেকে ১৫০০ শিক্ষার্থীকে এই স্কলারশিপ দেওয়া হয়।
শেভেনিং স্কলারশিপের আওতায় শিক্ষার্থী টিউশন ফি, মাসিক ভাতা, নিজ দেশ থেকে যুক্তরাজ্যে যাওয়া-আসার যাতায়াত ভাতা, একটি ভিসা আবেদনের খরচ, আগমন ভাতা, নিজ দেশে প্রস্থান ভাতা, যুক্তরাজ্যের শেভেনিং ইভেন্টগুলোতে অংশ নিতে ভ্রমণ অনুদানসহ ইত্যাদি সরবরাহ করা হয়। শেভেনিং স্কলারশিপ প্রতি বছর ৫ নভেম্বরের মধ্য আবেদন করতে হয়।
এই প্রোগ্রামে অ্যাপ্লাই করতে আপনার অনার্সে ন্যূনতম ৬০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে, মাস্টার্স কোর্সে আবেদন করার জন্য প্রয়োজনীয় সকল যোগ্যতা থাকতে হবে, আবেদন করার জন্য ২ বছর কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে, আইইলটিএস-এ ন্যূনতম ৬.৫ থাকতে হবে (প্রতি সেকশনে ন্যুনতম ৫.৫), কিন্তু এর পূর্বে ব্রিটেন সরকার-অর্থায়িত বৃত্তির তহবিলের সাহায্যে যুক্তরাজ্যে পড়াশোনা করলে, এই স্কলারশিপে আবেদন করা যাবেনা। আবার, আপনার যদি একটা মাস্টার্স ডিগ্রি কমপ্লিট করা থাকে, আপনিও এই স্কলারশিপে পুনরায় মাস্টার্স ডিগ্রির জন্য আবেদন করতে পারবেন।
কমনওয়েলথ স্কলারশিপ প্রোগ্রামের আওতায় ইংল্যান্ডে পড়াশোনার পাশাপাশি মাসে প্রায় ২ লাখ টাকাও পাবেন। তবে এর জন্য ২ বছর কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। একইসঙ্গে পড়াশোনা শেষে দুই বছরের মধ্যে আপনাকে দেশে ফিরে আসতে হবে।
বাংলাদেশের ইউজিসি এই স্কলারশিপের প্রাথমিক যাচাই-বাছাই করে। ইউজিসির ওয়েবসাইটে যেয়ে আবেদন করতে পারবেন। প্রতি বছর ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আবেদন করতে হয় এবং সার্টিফিকেটসহ সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ইউজিসির প্রধান কার্যালয়ে পৌঁছে দিতে হবে।
ডিএএডি স্কলারশিপ, জার্মানি
জার্মানভিত্তিক ডিএএডি স্কলারশিপের মাধ্যমে উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাওয়া যায়। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে এটি বেশ জনপ্রিয়। প্রতি বছর সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর মাসে এই স্কলারশিপের আবেদন চাওয়া হয়।
scholarshipইরাসমুস মুন্ডুস, ইউরোপ
ইরাসমুস মুন্ডুস স্কলারশিপের মাধ্যমে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকে। এই স্কলারশিপের আওতায় টিউশনসহ সকল একাডেমিক ফি, বিমান খরচসহ ৫০ শতাংশ আবাসন ও খাওয়া খরচ দেওয়া হয়। প্রতি বছর অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর–জানুয়ারি পর্যন্ত এই বৃত্তির জন্য করা যায়।
অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডস স্কলারশিপ
অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডস স্কলারশিপের আওতায় টিউশন ফি, ভ্রমণ ভাতা ও অন্যান্য সুবিধাসহ শিক্ষার্থীকে প্রতি মাসে পাঁচ হাজার ডলার দেওয়া হয়। প্রতি বছর ৩০ জুনের মধ্যে এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে হয়।
https://bangla-bnb.saturnwp.link/%e0%a6%95%e0%a7%83%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a6%ae-%e0%a6%ac%e0%a7%81%e0%a6%a6%e0%a7%8d%e0%a6%a7%e0%a6%bf%e0%a6%ae%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a6%be-ai-%e0%a6%a6%e0%a6%bf%e0%a6%af/
এই স্কলারশিপগুলো ছাড়াও জাপানের মনবুকাগাকুশো বা মেক্সট বৃত্তি, বেলজিয়াম, তুরস্কের বুর্সলারি বৃত্তি, চীনের সিএসসি স্কলারশিপ, রাশিয়া, কোরিয়ার কেজিএসপি স্কলারশিপগুলোও বেশ জনপ্রিয়। এই স্কলারশিপগুলোর তথ্য আপনি পাবেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে।