আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) টার্মটি প্রথম ব্যবহার করা হয় ১৯৫৫ সালের দিকে। তবে স্মার্ট মেশিনের ধারণা আরও পুরনো। প্রাচীন গ্রিস, ভারত ও চীনের পুরাণে এই ধারণার অস্তিত্ব পাওয়া যায়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। পাশাপাশি আমাদের ওপর প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে এই প্রযুক্তি।
প্রযুক্তি বিষয়ক সংবাদমাধ্যম দ্য ভার্জ বলছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পৌরাণিক কাহিনী নয়, নয় কোনও ম্যাজিক্যাল মেশিন। এটিও অন্য অনেক প্রযুক্তির মতোই একটি প্রযুক্তি। দশকের পর দশক ধরে গবেষণার ফসল হিসেবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে আমরা পেয়েছি। এটি উৎপাদনশীলতাকে নতুন একটি অবস্থানে নিয়ে গেছে। মূলত স্বল্পমূল্যের প্রসেসিং সক্ষমতা এবং প্রচুর তথ্য-উপাত্তের কারণে এটি সম্ভব হয়েছে।
বর্তমানে এআই এবং মেশিন লার্নিং বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বের সঙ্গে ব্যবহৃত হচ্ছে। এসব ক্ষেত্রের মধ্যে আছে জ্যোতির্বিজ্ঞান, স্বাস্থ্যসেবা, পরিবহন ব্যবস্থা, মিউজিক ইত্যাদি। সব ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে আগের চেয়ে ভালো এবং খারাপ দুভাবেই ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বর্তমানে মানুষকে মিউজিক এবং বই তৈরিতে সাহায্য করছে। এমনকি জীবনবৃত্তান্ত বিশ্লেষণেও ব্যবহার করা হচ্ছে এটি।
আমরা এখন অনেক কিছু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ওপর ছেড়ে দিচ্ছি। জেনে, না জেনে নির্ভরশীল হয়ে উঠছি এই প্রযুক্তির ওপর। কোনও লেখায় প্লেজারিজম চেক করা, অনলাইন শপিং, ভয়েস মেসেজ, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অনেক ফিচার ইত্যাদি ক্ষেত্রে প্রযুক্তিটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। সব মিলিয়ে বর্তমানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এমন সব সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, যা আমাদের সামগ্রিক জীবনকে প্রভাবিত করছে।
অন্যদিকে মেশিন লার্নিং হলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার একটি উপক্ষেত্র।বর্তমান বিশ্বে মেশিন লার্নিংয়ের প্রভাব সবচেয়ে বেশি বলে মনে করা হচ্ছে। মেশিন লার্নিং কীভাবে কাজ করে? এটি মূলত কম্পিউটারের নিজস্ব জ্ঞান অর্জন পদ্ধতি। অর্থাৎ, বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে কম্পিউটার নিজেই একটা বিষয় সম্পর্কে শিখবে বা জানবে। অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে, কীভাবে এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয়?
ধরা যাক, আপনি একটি প্রোগ্রাম তৈরি করবেন, যার সাহায্যে একটি বিড়ালকে সহজে চিহ্নিত করা যাবে। পুরনো পদ্ধতি অনুসরণ করলে আপনি হয়তো বিড়ালের অনেক বর্ণনা সেখানে যুক্ত করবেন। কিন্তু সাধারণ বর্ণনা একটি বিড়াল ও বাঘের মধ্যে কোনও পার্থক্য তৈরি করবে না। এজন্য বিড়ালের আরও সূক্ষ্ম অনেক বিষয় বর্ণনায় যুক্ত করতে হবে, যা সময়সাপেক্ষ। এর চেয়ে ভালো হয় মেশিনকে এমন সুযোগ করে দেওয়া যেন সে নিজেই বিড়াল চিনে নিতে পারে। এজন্য আপনাকে বিড়ালের অসংখ্য ছবি দিতে হবে। সেসব ছবি সূক্ষ্মভাবে বিশ্লেষণ করে মেশিন নিজের মতো করে বিড়াল চিনে নেবে। তখন মেশিন সহজে বলতে পারবে কোনটি বিড়াল আর কোনটি বিড়াল নয়।
মেশিন লার্নিংয়ের সুবিধা যেমন আছে তেমনি রয়েছে অসুবিধাও। কম্পিউটারের নিজস্ব বুদ্ধি নেই এটা কারও অজানা নয়। ফলে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা মেশিনের ওপর ছেড়ে দিয়ে তেমন কোনও সুবিধা পাওয়া যাবে না। মেশিন যেন সহজে সিদ্ধান্ত নিতে পারে সেই পথটা তৈরি করে দিতে হবে মানুষকেই। আমরা বর্তমানে মেশিন লার্নিংয়ের বেড়ে ওঠার যুগে আছি। ধীরে ধীরে মেশিন লার্নিং এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আরও এগিয়ে যাবে এবং নিজেদের জায়গা পাকাপোক্ত করবে।
https://bangla-bnb.saturnwp.link/%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a6%b2-%e0%a6%a4%e0%a7%88%e0%a6%b0%e0%a6%bf-%e0%a6%b8%e0%a6%b9%e0%a6%9c-%e0%a6%a8%e0%a6%a4%e0%a7%81%e0%a6%a8-%e0%a6%ab%e0%a6%bf%e0%a6%9a%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%a8%e0%a6%bf/
বর্তমানে মেশিন লার্নিং এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সমন্বয়ে বিভিন্ন বিষয় দেখা যাচ্ছে। তবে এটি একটা আইসবার্গের ওপরের অংশ মাত্র। এখনও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অনেক কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার বাইরে রয়ে গেছে। কিছু কিছু জিনিসের পরীক্ষা চলছে। বর্তমান সময়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাবও ব্যাপক। ভবিষ্যতে এটি আরও বেশি জায়গা দখল করবে এবং মানুষের ওপর নিশ্চিতভাবে আরও বেশি প্রভাব ফেলবে বলে উল্লেখ করছেন প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা।