অনেকের যথেষ্ট মেধা এবং দক্ষতা থাকা সত্ত্বেও সঠিক দিক নির্দেশনার অভাবে এখনকার তরুন-তরণীদের অনেকের ক্যারিয়ার হয় অন্ধকারচ্ছন্ন। ব্যক্তিগত, প্রাতিষ্ঠানিক কিংবা রাষ্ট্রীয় কোন ক্ষেত্রেই আমাদের দেশে সুচারু পরিকল্পনার লেশমাত্র নেই। আবার পরিকল্পনা যাও আছে তার বাস্তব প্রতিফলন নেই। ঐতিয্যগত এবং গতানুগতিকভাবে পরিচালিত হওয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু শিল্প প্রতিষ্ঠান পর্যন্ত। পিতা-মাতা, অভিভাবক অথবা পরিবারের দ্বায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গের পক্ষ থেকেও সন্তানের মেধা, ইচ্ছা কিংবা সামাজিক অবস্থা বিচার বিবেচনা করে ছেলে মেয়েদের জন্য ক্যারিয়ার ভিত্তিক লেখাপড়ার যথাযথ চেষ্টা করা হয় না। চিন্তা-চেতনার সীমা সকলের মধ্যেই খুব সীমিত আকারে পরিলক্ষিত হয়। ফলে একটা পর্যায়ে উপনীত হয়ে ছেলে মেয়েরা তাদের ক্যারিয়ার নিয়ে দারুনভাবে হতাশ হয়ে পড়ে। এর দ্বায়ভার শিক্ষার্থীদের নিজেদের উপরে অনেকটা বর্তায়। রাষ্ট্র, প্রতিষ্ঠান কিংবা অবিভাবকরাও এ দ্বায় থেকে মুক্ত নয়।
বর্তমান সময়ে তরুন-তরুনীদের খাম খেয়ালীপনা তাদের সাবলীল ক্যারিয়ার গঠনের অন্যতম অন্তরায়। তাদের উদ্দেশ্যহীন চলার পথ কুসুম কোমল নয়, বেশিরভাগ সময় কাটাযুক্ত হতেই দেখা যায়। মূলত নিজের প্রতি আস্থাহীনতায় ভোগা, জীবনের লক্ষ্য নির্ধারনে ব্যর্থতা, সুপরিকল্পনার অভাব, অগ্রাধিকার নির্ধারনে ব্যর্থতা, সময়ের যথেচ্ছ ব্যবহার, অতীত থেকে শিক্ষা গ্রহন না করা ইত্যাদি কারনে এখনকার অধিকাংশ ছেলে মেয়েদের মান সম্মত ক্যারিয়ার গঠন সম্ভব হয় না। তার সাথে রয়েছে রাজনৈতিক এবং সামাজিক নানাবিধ সমস্যা যা যুব সমাজের ক্যারিয়ার ধ্বংসের শক্তিশালী প্রভাবক।
১. স্বীয় প্রতিভা এবং দক্ষতা শনাক্তকরন (Identification of own genius and skills)
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অনেকে নিজের মেধা এবং দক্ষতা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দে উপনীত হয়। বস্তুত নিজের উপর যথেষ্ট অনাস্থা থেকেই এ ধরনের দ্বিধাদ্বন্দের সৃষ্টি। এ থেকে উত্তরনের জন্য প্রয়োজন আত্মপর্যালোচনা (Self-evaluation) এবং তার উপর ভিত্তি করে নিজের অবস্থান (Positioning yourself) নির্ধারন করা, নিজের দক্ষতা এবং পারদর্শীতা শনাক্ত করা। আকাশ কুসুম স্বপ্ন কিংবা কল্পনা অবশ্যই পরিতাজ্য। অন্যের ক্যারিয়ার নিয়ে ঈর্ষান্বিত হওয়াটা অযৌক্তিক। তাতে আম ছালা দুটোই হারানোর সম্ভাবনা থাকে। স্বীয় মেধা, দক্ষতা এবং পারদর্শীতার উপর ভিত্তি করে সর্বপ্রথম প্রয়োজন নিজস্ব ক্যারিয়ার গঠনের এক বা একাধিক পথ আবিষ্কার করা। এক্ষেত্রে ক্যারিয়ার গঠনের সম্ভাবনাময় পেশা সম্পর্কে থাকতে হবে সুষ্পষ্ট ধারনা। পরিপূর্ণ ধারনা লাভে প্রয়োজনে ক্যারিয়ার বিশেষজ্ঞ কিংবা বিভিন্ন বিভাগের বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিবর্গের সাথে পরামর্শ করা যেতে পারে। নিজের আকাঙ্খা নয়, আগ্রহের উপর গুরুত্ব দেওয়াটাও অত্যন্ত জরুরী।
২. লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য প্রণয়ন (Setting goals and objectives)
নিজের অবস্থান নির্ধারন এবং ক্যারিয়ার গঠনের একাধিক পথ উদ্ভাবন করার পর, একজনের পরবর্তী কাজ হল জীবনের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য প্রনয়ন করা। যেমন একজন লোকের তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ে আগ্রহ এবং কিছুটা পারদর্শীতা আছে। এ পর্যায়ে তাকে নির্ধারন করতে হবে সে প্রোগ্রামার হবে, প্রকৌশলী হবে, না অন্য কিছু। যত ছোট ক্ষেত্রই হোক না কেন, তাকে তুচ্ছজ্ঞান না করে বরং সে ক্ষেত্রে একজন বিশেষজ্ঞ হওয়ার উদ্দেশ্য থাকাটা তোষামোদযোগ্য। সেই সাথে ব্যক্তিকেন্দ্রিক লক্ষ্য-উদ্দেশ্যের পাশাপাশি সমাজ এবং জনসাধারনের জন্য কিছু করারও একটা উদ্দেশ্য থাকা চাই। সর্বোপরি থাকা চাই শিক্ষা এবং পেশাগত জীবনসহ জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে নৈতিকতা ধরে রাখার অদম্য স্পৃহা যা নিশ্চিতভাবেই একটি সুন্দর চরিত্র এবং জীবন গঠনের মূল প্রতিপাদ্য।
৩. স্বল্প এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহন (Short and long-term planning)
লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য নির্ধারন করার পরের ধাপ স্বল্প এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহন করা। ধোঁয়াশাচ্ছন্ন নয়, পরিকল্পনা হতে হবে সুনর্দিষ্ট, যথাযথ এবং অর্থবোধক; ক্যারিয়ার গঠনের পথ পরিক্রমার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। এ ধাপে অন্তর্ভুক্ত থাকবে কি করতে চাই, কিভাবে করতে চাই, কখন করতে চাই, আগামী পাঁ বছর বা দশ বছর পর নিজেকে কোথায় দেখতে চাই ইত্যাদি। পরিকল্পনা গ্রহনের প্রাক্কালে যে বিষয়গুলো বিশেষভাবে বিবেচনা করা প্রয়োজন সেগুলো হল নিজের অবস্থান, নিজের বা পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা, রাজনৈতিক অবস্থান, পারিবারিক প্রয়োজন এবং সমস্যা ইত্যাদি। পরিকল্পনা গ্রহনের সময় তাড়াহুড়ো করা একেবারেই অগ্রহনযোগ্য। বরং এ ক্ষেত্রে কিছুটা নমনীয় মনোভাব পোষন সাফল্য লাভে অধিকতর কার্যকর হতে পারে। ক্যারিয়ার গঠন পরিকল্পনার পাশাপশি চরিত্র গঠন এবং উন্নয়নের জন্যও একটা আলাদা পরিকল্পনা থাকা বাঞ্চনীয়। কেননা চরিত্রহীন মানুষ পশুর সমতুল্য। আর সুন্দর চরিত্র ব্যতীত বিত্ত-বৈভবের সাময়িক মালিকানা লাভের সুযোগ আসলেও দীর্ঘ সময়ের জন্য তা সুখকর পরিনতি বয়ে আনতে চরমভাবে ব্যর্থ হয়।
৪. শিক্ষা অর্জন ও মেধার সর্বোচ্চ ব্যবহার (Education and maximum use of your head)
সাবলীল ক্যারিয়ার গঠনে শিক্ষার বিকল্প নেই। বিভিন্ন ক্ষেত্রে সম্ভাবনাময় এবং দক্ষ হওয়া সত্ত্বেও পরিপূর্ণ শিক্ষার অভাবে অনেকেই সে দক্ষতা সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারে না। পুথিগত বিদ্যার পাশাপশি প্রয়োজন প্রচুর পরিমানে ব্যবহারিক শিক্ষা গ্রহন করা। নিজেকে মেধাহীন কিংবা অন্যদের চেয়ে কম মেধাবী মনে করলে চলবে না, বরং যতটা সম্ভব লেখাপড়া করতে হবে নিঃসংকোচে। খাওয়া-দাওয়া ভুলে কিংবা ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোন কিছু করাই ফলদায়ক নয়, পড়াশুনাও। যতক্ষন শরীর এবং মন সায় দেয় ততক্ষন পড়াশোনার পেছনে সময় ব্যয় করা উচিত, তার বেশি নয়। একটা বিষয়ে ভাল মান অর্জন করার জন্য প্রতিদিন ২-৪ ঘন্টা পড়াশুনা করাই যথেষ্ট। তবে মুখস্ত কিংবা পরীক্ষায় পাশ করার জন্য নয়, সত্যিকারে কিছু শেখার জন্য, একটা বিষয় আয়ত্ত করার জন্যই পড়াশুনা করা উচিত। শিক্ষা অর্জনের ক্ষেত্রে কোনরুপ মান-অভিমান, লজ্জা, দম্ভ কিংবা অহংকার গ্রহনযোগ্য নয়। এসব বাধা পায়ে দুলে সত্যিকারের শিক্ষা লাভের অদম্য আকাঙ্কা থাকা চাই প্রতিটি তারুন-তরুনীর। নির্দিষ্ট বিষয়ে যথেষ্ট জ্ঞান অর্জের সাথে সাথে একজন নাগরিক হিসেবে অন্যান্য জীবনঘনিষ্ট বিষয়ে মৌলিক জ্ঞান থাকাটাও সময়ের দাবী।
৫. সময়ের যথাযথ ব্যবহার (Optimum use of time)
সময়ের গুরুত্ব সর্বসময়েই অনস্বীকার্য। তবে ছাত্রজীবনে সময় অন্যরকম গুরুত্ব বহন করে। বস্তুত এখানে সময়ের সদ্ব্যবহার করতে অপারগ হলে, না পাওয়ার বেদনায় বাকি জীবনটা ছারখার হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকে। যদিও ছাত্রজীবনেই সময়টা অধিকতর তাৎপর্যপূর্ন, দুঃখজনক হলেও সত্য জীবনের এই স্তরেই সময়ের সবচেয়ে যথেচ্ছ ব্যবহার হয়ে থাকে। অপরিপক্ক বয়স এবং তারুন্যের উচ্ছ্বাস গুরুত্বপূর্ণ এবং গুরুত্বহীন কাজের পার্থক্য নিরুপনের অন্তরায় হয়। যার কারনে মনের অজান্তেই অনেকে জড়িয়ে পড়ে অহেতুক সব অপ্রয়োজনীয় কর্মকান্ডে। তার সাথে বর্তমান সময়ে প্রযুক্তির সহজলভ্যতা সময়ের ব্যাপারে তরুন সমাজকে উদাসীন করতে ব্যাপক ভুমিকা রাখছে। উপরন্তু সময়ের কাজ যথা সময়ে না করে ভবিষ্যতের জন্য ফেলে রাখাটা ক্যারিয়ারে সফলতা লাভের বিরাট অন্তরায়। এর থেকে পরিত্রানের জন্য দরকার সময়ের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা। প্রতিদিনের পড়াশুনা এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজকর্ম সম্পাদন একটা পরিকল্পনার মাধ্যমে করা একান্ত প্রয়োজন। সেই সাথে খেলাধূলা এবং সুস্থ বিনোদনের জন্য নির্দিষ্ট সময় সীমা বরাদ্দ করাও অত্যাবশ্যক।
৬. অগ্রাধিকার নির্ধারন (Ascertaining priority)
সময়ের সাথে অগ্রাধিকার বিষয়টিও বেশ গুরুত্বের দাবী রাখে। সময় এং আগ্রাধিকার নির্বাচন বিষয় দুটি একে অপরের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ন। সঠিক সময়ে সঠিক কাজটা করতে পারার ভিত্তিটাই হল অগ্রাধিকার নির্বাচন করা। ছেলে মেয়েরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার নির্বাচন করতে ব্যর্থ হয়। ফলশ্রুতিতে সঠিক সময়ে সঠিক কাজ কিংবা সময়ের কাজ সময়ে করা কারো কারো পক্ষে কখনও কখনও সম্ভবপর হয় না। স্থান, কাল এবং পাত্রভেদে অগ্রাধিকার ভিন্নতর হতে পারে। অগ্রাধিকার নির্বাচনের সাথে চরিত্রগত ব্যাপারটিও ওতপ্রতভাবে জড়িত। অগ্রাধিকার নির্বাচনে হেয়ালীপনা চরিত্র ধ্বংসের কারনও হতে পারে; মূলত অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাই-ই হয়।
৭. সমাজের সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করা (Considering overall condition of the society)
সফলতা লাভে নিজের ইচ্ছা-অনিচ্ছার সাথে সাথে সমাজের অবস্থা এবং সময়ের দাবীর প্রতি লক্ষ্য রাখাটাও অত্যন্ত জরুরী। সমকালীন সময়ে প্রচলিত ধারাকে এড়িয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। তবে ক্ষেত্র বিশেষে চলমান ধারার বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে পারাটাও বিশেষ প্রশংসার দাবী রাখে। সফল ক্যারিয়ার গড়ার উদ্দেশ্যে হলেও নীতির বিষয়ে আপোসরফা কোনভাবেই গ্রহনযোগ্য নয়। এ ব্যাপারে শুধুমাত্র ক্যারিয়ার সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রকেই গুরুত্ব দিতে হবে। উদাহরনস্বরুপ, বর্তমান প্রযুক্তির যুগে যেকেউই এই ক্ষেত্রকে পেশা হিসেবে গ্রহন করতে পারে। তাই বলে এই পেশায় সুপ্রতিষ্ঠিত হতে অনৈতিক কোন কর্মকান্ডে জড়িত হওয়াটা মোটেই গ্রহনযোগ্য নয়। সমসাময়িক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়নও সফলতা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। স্থানভেদে এই সকল নিয়ামকগুলোর প্রভাব অভিন্ন নয়। সেজন্য সমসাময়িক সমাজিক এবং রাজনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে স্বচ্ছ জ্ঞান থাকা বাঞ্চনীয় যা ক্যারিয়ার পথ নির্ধারনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক।
৮. হতাশাগ্রস্থ না হওয়া (No disappointment)
যথেষ্ট মেধা এবং দক্ষতা থাকা সত্ত্বেও গৌরবময় ক্যারিয়ার গঠনের নিশ্চয়তা নেই। সেক্ষেত্রে বর্তমান অবস্থা মেনে নিয়ে আরও চেষ্টা সাধনা করাটাই অধিকতর যৌক্তিক। জীবনের যে কোন পর্যায়ে হতাশ হওয়ার কোন সুযোগ নেই, চাই সেটা ছাত্রজীবনই হোক কিংবা পেশাগত জীবন। হতাশা থেকে মানুষের মধ্যে আস্তে আস্তে নিজের উপর অনাস্থা বৃদ্ধি পেতে থাকে, স্বীয় মেধা এবং পারদর্শীতা নিয়ে নিজের মধ্যেই প্রশ্নের সৃষ্টি হয়। ফলে মানুষের স্বাভাবিক আচরন থেকে শুরু করে জীবনযাপনে লক্ষ্য করা যায় ব্যাপক পার্থক্য। অতিরিক্ত হতাশা মানুষকে ক্রমশঃ অপরাধপ্রবনতা এমনকি আত্মহত্যার দিকে নিয়ে যায়। নির্দিষ্ট সময়ে কাঙ্খিত অবস্থানে পৌছাতে না পারলেও হাল ছেড়ে দেওয়াটা চরম বোকামি। বরং বারংবার প্রচেষ্টা এবং অধ্যাবসায় একজনকে পৌছে দিতে পারে সাফল্যের স্বর্নশিখরে। এক্ষেত্রে ধৈর্য্যের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া চাই। মহামনীষিদের মূল মন্ত্রই ছিল চেষ্টা এবং অধ্যাবসায়।
৯. অতীত অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো (Utilization of experiences)
সফল ব্যক্তি কিংবা গোষ্ঠি অতীত নিয়ে নয়, অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে জীবন যাপন করে। যে ব্যক্তি, গোষ্ঠি কিংবা জাতি অতীত আকড়ে বাচতে চেয়েছে, তারা ব্যর্থতার তলানীতে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। তবুও অতীত ভুলে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। বরং সাফল্যমন্ডিত অতীত থেকে অনুপ্রেরনা এবং ব্যর্থতায় পর্যভূষিত অতীত থেকে শিক্ষা নেওয়াটাই হতে পারে ভবিষ্যত সাফল্যের অন্যতম চাবিকাঠি। অর্থাৎ অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে বর্তমানে কাজে লাগাতে হবে সুন্দর ভবিষ্যত গড়ার উদ্দেশ্যে। প্রথম কাজ হল অতীতের কর্মকান্ডের পুর্নাঙ্গ বিশ্লেষন করে ভুল ত্রুটিগুলো চিহ্নিত করা। অতঃপর ধাপে ধাপে সেগুলো সংশোধনের দিকে এগিয়ে যাওয়া। এবং সবশেষে ভবিষ্যতে যেন একই ধরনের ভুল ত্রুটির উদ্রেক না হয়, সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রেখে পথ চলা। এক্ষেত্রে ব্যক্তি এবং পেশাগত জীবনে সফল ব্যক্তিবর্গের জীবনচরিত হতে পারে অনুকরনীয় আদর্শ।
১০. নিয়তীর উপর নির্ভরশীলতা (Relying on fate)
প্রকৃতির নিয়ম-কানুন আর মানুষের চিন্তা-চেতনা কিংবা আশা-আকাঙ্খার মধ্যে অনেক সময় বিস্তর ফারাক লক্ষ্য করা যায়। ফলে অনেকেই নিয়তী কিংবা প্রকৃতিকে দোষারোপ করে থাকেন। বস্তুত কোন অবস্থাতেই প্রকৃতির সাথে বিবাদে লিপ্ত হওয়া কাঙ্খিত নয়। কোনরকম অধ্যাবসায় না করে শুধুমাত্র নিয়তীর উপর ভরসা করে বসে থাকলে যেমন সফল হওয়া যায় না, তেমনি একমাত্র চেষ্টা সাধনার মাধ্যমেও সফলতা লাভের কোন নিশ্চয়তা নেই। চেষ্টা সাধনার পাশাপশি সর্বাবস্থায় প্রয়োজন নিয়তীর উপর নির্ভর করা। তাতে পরিপূর্ণ সফলতা না আসলেও ভেঙ্গে পড়ারা কোন আম্ভাবনা থাকে না। বরং নতুন উদ্যমে নতুন করে শুরু করার তীব্র সাহস জাগ্রত হয় মনমগজে।
সফল ক্যারিয়ার গড়তে পারিপার্শ্বিক অবস্থা কিংবা বিভিন্ন পেশা সম্পর্কে যে ধরনের জ্ঞান থাকা দরকার, তা অনেকের মধ্যেই অনুপস্থিত। পারিবারিক চাহিদা এবং গোড়ামিও কারও কারও ক্ষেত্রে ঋনাত্বক ভুমিকা পালন করে। তাই আত্বসচেতনতা সৃষ্টি করাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।