আজকাল ৫ ইঞ্চির ছোট ডিসপ্লের কোনো স্মার্টফোন বাজারে পাওয়া দুষ্কর। এমনকি আধুনিক স্মার্টফোন প্যান্টের পকেটে আঁটানোই কঠিন, ওজনও বেশি। ফলে দীর্ঘদিন ব্যবহারের পর বিরক্তি আসাটা স্বাভাবিক। যারা বড় ফোন নিয়ে বিরক্ত তাদের জন্য আছে ক্ষুদ্রাকৃতির স্মার্টফোন। এসব ফোনের সাধারণ কাজগুলো করা যায় অনায়াসেই। দামও বেশ কম। চাইলে মূল ফোনে পরিপূরক বা বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এমন কিছু ফোনের বর্ণনা দেয়া হলো:
ইউনিহার্টজ জেলি প্রো
বাজারে ক্ষুদ্রাকৃতির যেসব স্মার্টফোন পাওয়া যায় সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ইউনিহার্টজ জেলি প্রো। ৩.৬*১.৭*০.৫ ইঞ্চি আয়তনের ফোনটির ওজন মাত্র ২.১৩ আউন্স। জগিং বা জিমে ওয়ার্কআউটের সময় হাতের মুঠোয় রাখার জন্য উপযুক্ত ফোন। ফোনটি অ্যান্ড্রয়েড ৭.০ ন্যুগাট চালিত এবং ৪জি নেটওয়ার্ক সমর্থন করে। এতে রয়েছে ২ জিবি র্যাম ও ১৬ জিবি স্টোরেজ। স্ক্রিন সাইজ ২.৪৫ ইঞ্চি। ক্যামেরাও কিন্তু খারাপ না। পেছনের ক্যামেরাটিতে রয়েছে ৮ মেগাপিক্সেল সেন্সর এবং সামনেরটি ২ মেগাপিক্সেলের। বিল্টইন জাইরোস্কোপ ও হেডফোন জ্যাকও রয়েছে। দাম পড়তে পারে ১২৫ ডলার।
আইলাইট ৭এস
মাত্র ১.৮১*০.৩৯*৩.৭৪ ইঞ্চি আয়তনের স্মার্টফোনটি ইউনিহার্টজ জেলি প্রোর চেয়েও ছোট। তবে আকার ছোট হওয়ার কারণে কনফিগারেশনেও কিছুটা পিছিয়ে। এর রয়েছে ৮ জিবি স্টোরেজ এবং ২ জিবি র্যাম। এ ফোনে হোটসঅ্যাপও ব্যবহার করা যায়। ২.৪ ইঞ্চি স্ক্রিনের ফোনটি আইফোন এক্স আইওএস বা পাম প্রি মডেলকে অনুসরণ করে বানানো। স্ক্রিনের নিচে একটি গোলাকার হোম বাটন রয়েছে। এর ধাতব চেসিসটি পুরনো মডেলের আইফোনের মতো। তবে এটি অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম চালিত। দাম পড়বে ৮৫ ডলার।
সুড্রয়েড সোইয়েস সুপার মিনি
জনপ্রিয় মিনি স্মার্টফোনগুলোর অন্যতম এটি। ইউনিহার্টজ জেলি প্রোর মতো এটিও শুধু জিএসএম ক্যারিয়ার সমর্থন করে। ১.৬৯*৩.৩৯*০.৩৫ ইঞ্চি আয়তনের ফোনটিতে ডুয়াল সিম ব্যবহার করা যায়। বিদেশ ভ্রমণে ছোট অ্যান্ড্রয়েড ফোন সঙ্গে রাখতে চাইলে সুড্রয়েড সোইয়েস সুপার মিনি হতে পারে সর্বোত্তম বিকল্প। ২.৪ ইঞ্চি স্ক্রিনের ফোনটিতে রয়েছে ৫ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা। সামনেরটি ২ মেগাপিক্সেল। ৬০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার আওয়ার ক্ষমতার ব্যাটারি, ১ জিবি র্যাম এবং ৮ জিবি স্টোরেজ রয়েছে। এতে আরো রয়েছে কোয়াড কোর সিপিইউ। অ্যামাজন থেকে ৮৭ ডলারে কিনতে পারেন।
আনিকা আই৮
২.৫ ইঞ্চি স্ক্রিন সাইজ। ৩.৫*১.৭৭*০.৩১ ইঞ্চি আয়তন এবং ৭.০৫ আউন্স ওজনের ফোনটিতে কিছু বাড়তি সুবিধা পাওয়া যাবে। এতে রয়েছে ব্লুটুথ, ডুয়াল সিম এবং উন্নতমানের স্পিকার। অ্যান্ড্রয়েড ৬.০ সংস্করণ চালিত ফোনটির ক্যামেরা খুব একটা ভালো নয়। পেছনের ক্যামেরাটি মাত্র ২ মেগাপিক্সেল এবং সামনেরটি ০.৩ মেগাপিক্সেল। এ ফোনটিও অ্যাপলের আইফোনের মতো দেখতে। দাম পড়বে ৫৭ ডলার।
পাম
মিনি স্মার্টফোনের মধ্যে সবচেয়ে অদ্ভূত ফোন এটি। ৩৫০ ডলার মূল্যের ভ্যারাইজনের একটি সংস্করণ আপনার মূল ডিভাইসের চমৎকার বিকল্প হতে পারে। এ ফোনটি ডিজাইন করা হয়েছিল মূলত স্যামসাংয়ের নির্বাহীদের জন্য। মূল ফোনের ঝামেলা এড়ানোর জন্য এটি তারা ব্যবহার করতেন। তাছাড়া দীর্ঘ ছুটিতে বা অবকাশে দূরে কোথাও গেলে পাম ফোন নিতে পারেন। মূল ডিভাইসের সঙ্গে যুক্ত করতে একটি অ্যাপ ইনস্টল করে নিলেই চলে। কল রিসিভ করা, মেসেজ ও অন্যান্য অ্যালার্ট দেখা যায়। সম্পূর্ণ অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম এতে ইনস্টল করা থাকে। ফলে অ্যান্ড্রয়েডের সব ধরনের সেবাই পাওয়া যায়। এতে রয়েছে ১২ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা। এর আকার ১.৯৯*৩.৮ ইঞ্চি। ব্যাটারি ব্যাকআপ প্রায় সাড়ে ৭ ঘণ্টা।
এআইইকে এম৫
বলা যেতে পারে বিশ্বের ক্ষুদ্রতম ফোন এটি। এতোটাই ছোট ও পাতলা যে ক্রেডিট কার্ডের মতো ওয়ালেট বা পার্সের মধ্যে ঢুকানো যায়। এর আয়তন ৩.৩*২.১*০.২ ইঞ্চি। এর ওজন মাত্র ০.৬৪ আউন্স। ধাউস আকারের স্মার্টফোন নিয়ে বিরক্ত হয়ে পড়লে এআইইকে এম৫ ফোনটি ব্যবহার করতে পারেন। কারণ এটি মূলত একটি ফিচার ফোন। এটি ২জি নেটওয়ার্ক সমর্থন করে। কোয়াড ব্যান্ডের ফোনটিতে রয়েছে ৩২০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার আওয়ার ক্ষমতার ব্যাটারি। টানা তিনদিন ব্যাকআপ দেবে। তবে টক টাইম মাত্র তিন ঘণ্টা। এতো ক্ষুদ্র আকৃতির হলেও এর রয়েছে একটি লাউডস্পিকার, ব্লুটুথ সমর্থন করে। স্ক্রিন মাত্র এক ইঞ্চি। ইন্টারনেট সমর্থন করে না। এ ব্র্যান্ডের অনেকগুলো আকর্ষণীয় মডেল রয়েছে। দাম ১৫ ডলার।
আইফোন এসই
৪ ইঞ্চি ডিসপ্লের এ আইফোনের উৎপাদন বন্ধ করেছে অ্যাপল। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে এটি আর বানানো হচ্ছে না। তবে চাইলে অ্যামাজনে এখনো এর রিফারবিশড ভার্সন পেতে পারেন। আইফোনের ছোট সংস্করণের মধ্যে বর্তমানে অফিসিয়ালি বিক্রি হচ্ছে আইফোন ৭ । ৫.৪৪*২.৬৪*০.২৮ ইঞ্চি আয়তনের ফোনটির ডিসপ্লে মাত্র ৪.৭ ইঞ্চি।