মুক্তার সৌন্দর্য্য যে কাউকে আকৃষ্ট করে। মুক্তার তৈরি বিভিন্ন গয়না পরতেও পছন্দ করেন অনেকেই। একটা ঝিনুক যাকে বাইরে থেকে দেখতে মোটেই অবাক করার মতন কিছু মনে হয় না। কিন্তু তার ভেতর থেকেই বেরিয়ে আসে ঝলমলে মুক্তা। সব ঝিনুকেই যে মুক্তো থাকবে, তা কিন্তু নয়। তবে ঝিনুকের মধ্যে কীভাবে ধীরে ধীরে জন্ম নেয় মুক্তা, তা জানেন কি? ঝিনুকের ভেতরে মুক্তা তৈরির প্রক্রিয়াটি জানলে অবাক হতে পারেন।
ঝিনুকের পেটে যেভাবে তৈরি হয় মুক্তা-
সাগরে শামুকের বিভিন্ন প্রজাতি আছে। যার পেটে মুক্তা থাকে, কিন্তু তা থেকে কীভাবে মুক্তা উৎপন্ন হয়, তা হয়তো জানেন না অনেকেই। শামুক নিজেকে রক্ষা করার জন্য একটি খুব শক্তিশালী খোসার মধ্যে বাস করে এবং এই খোলসটিকে ঝিনুক বলা হয়। যখন হাজার হাজারের মধ্যে একটি বা দুটি ঝিনুকের খোসার মধ্যে একটি ছিদ্র থাকে, তখন বালির কণা তার ভেতরে যায়। এমন অবস্থায় ঝিনুকের ভেতরে বালির কণাগুলোকে এক বিশেষ ধরনের পদার্থ লেপ দিতে শুরু করে।
এই বিশেষ পদার্থটিকে ক্যালসিয়াম কার্বনেট বলা হয় এবং এটি সেই জীবের ভিতরেই উৎপন্ন হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি একটি সাদা রঙের চকচকে গোলাকার আকৃতির পাথরে পরিণত হয় যাকে মুক্তা বলে। ঝিনুকের অভ্যন্তরে থাকা বালির কণা যখন শামুককের মধ্যে বিক্রিয়া করে, তখন তা থেকে এক ধরনের তরল চর্বিযুক্ত পদার্থ বের হয়। মুক্তা গঠন একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া।
বাংলাদেশের গবেষকরা বলছেন অনুকূল আবহাওয়া, দেশজুড়ে অসংখ্য পুকুর জলাশয় থাকায় আর উৎপাদন খরচ খুব কম হওয়ায় মুক্তা চাষে আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের মধ্যে।
মুক্তা একটি মূল্যবান রত্ন হিসেবে পরিচিত যা সাধারণত গহনা তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। তবে এর বাইরেও কিছু রোগের চিকিৎসায় এটি ব্যবহৃত হয় বলে জনশ্রুতি আছে।
মুক্তার একমাত্র উৎস হলো ঝিনুক। এক সময় প্রাকৃতিকভাবে ঝিনুকে মুক্তা উৎপন্ন হতো আর সেগুলো আহরণ করে মুক্তা সংগ্রহ করত জেলে বা চাষিরা।
কিন্তু পরে মুক্তা উৎপাদন কৌশল উদ্ভাবিত হওয়ায় বিশ্বব্যাপী এর উৎপাদন ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়।