ফেসবুক, মেইল, ব্যাংক, ই-কমার্স সাইটসহ নানা ধরনের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার এখন আমাদের নিত্যদিনের কাজেরই অংশ এবং আমরা অনলাইনের ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল হয়ে পড়ছি। ব্যবহার বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে অনলাইন নিরাপত্তাও হয়ে উঠছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা অনলাইন অ্যাকাউন্টগুলোকে নিরাপদ রাখতে শুধুমাত্র পাসওয়ার্ডের ওপর নির্ভরশীলতা এখন পুরোপুরি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে না। থেকে যায় হ্যাক হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি। অনলাইনের এসব অ্যাকাউন্ট নিরাপদ রাখার জন্য প্রয়োজন টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন বা সংক্ষেপে টুএফএ সিস্টেম।
টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন: নিরাপত্তার অতিরিক্ত স্তর
আপনার অনলাইন অ্যাকাউন্টে টুএফএ চালু থাকলে শুধুমাত্র পাসওয়ার্ড দিয়ে সেখানে লগইন করা সম্ভব হবে না। এর সঙ্গে প্রয়োজন হবে টুএফএ কোডের। অর্থাৎ, কেউ যদি কোনোভাবে আপনার অ্যাকাউন্টের ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড জেনেও যায়, তারপরও তিনি আপনার ওই অ্যাকাউন্টে লগইন করতে পারবেন না। লগইন করার চেষ্টা করলে আপনার মোবাইল ফোন বা ইমেইলে আসা টুএফএ কোডটিও তাকে জানতে হবে। ফলে, আপনার অ্যাকাউন্ট থাকবে আরও সুরক্ষিত।
চলুন একটু বিস্তারিত জেনে নেই টুএফএ সম্পর্কে।
স্বাভাবিক নিয়মে ফেসবুক, ইমেইল বা অনলাইনে কোনো অ্যাকাউন্টে লগইন করতে শুধুমাত্র ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড প্রয়োজন। কিন্তু পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করার পর যদি দ্বিতীয় স্তরে নিরাপত্তা যাচাই করে তাহলে তাকে বলা হয় টুএফএ।
অনলাইনে নিরাপত্তা বাড়াতে টুএফএ বা মাল্টি-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন (এমএফএ) ব্যবহার করা হচ্ছে। এখন বেশিরভাগ অনলাইন প্লাটফর্মেই এই বাড়তি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সুযোগ রয়েছে।
টুএফএ কীভাবে কাজ করে
কোনো অনলাইন অ্যাকাউন্টে লগইন করার জন্য প্রথমে ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড দিতে হবে। এরপর দ্বিতীয় ধাপে আরেকটি কোড চাওয়া হয় ব্যবহারকারীর কাছ থেকে, যেটি তার ফোনে আগে থেকে ইন্সটল করা টুএফএ অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার থেকে পাওয়া যায়। কিংবা কল, মেসেজ, ইমেইল বা মোবাইলে আসা নোটিফিকেশনের মাধ্যমেও তাৎক্ষনিকভাবে কর্তৃপক্ষ ব্যবহারকারীর টুএফএ সম্পন্ন করতে পারে। দ্বিতীয় নিরাপত্তা স্তর সম্পন্ন করতে পালেই কেবল ওই অ্যাকাউন্টে লগইন করা সম্ভব হয়। প্রতিবার লগইন করার সময় টুএফএ পদ্ধতিতে নতুন নতুন কোড আসবে, যা কিছু সেকেন্ডের জন্যই কার্যকর থাকে। একবার ব্যবহার করার পর এই কোড আর ব্যবহার করা যায় না। প্রত্যেকবার পরিবর্তনশীল এই পাসওয়ার্ডকে ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড বা ওটিপি বলা হয়।
টুএফএ অ্যাপ্লিকেশন
বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় ২টি টুএফএ অ্যাপ্লিকেশন হলো গুগল অথেনটিকেটর ও মাউক্রোসফট অথেনটিকেটর। গুগল প্লে স্টোর ও অ্যাপল অ্যাপ স্টোর ফ্রিতেই পেতে পারেন এই সফটওয়্যারগুলো।
এ ছাড়া, ‘সিকিউরিটি কী’র মাধ্যমেও টুএফএ সিস্টেমটি ব্যবহার করা যায়। টুএফএ ব্যবহার করার জন্য অবশ্যই আপনাকে অনলাইন অ্যাকাউন্টগুলোর সেটিংস থেকে এই অপশনটি চালু করে নিতে হবে।
এই অ্যাপ্লিকেশনগুলো ব্যবহারের পাশাপাশি মোবাইল ফোন নম্বর বা ইমেইল ঠিকানা যুক্ত করবেন আপনার অ্যাকাউন্টগুলোতে। কোনো কারণে এসব অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করতে সমস্যা দেখা দিলে মোবাইল ফোন বা ইমেইলের মাধ্যমে ওটিপি পাবেন এবং অ্যাকাউন্টে লগইন করতে পারবেন।