আসন্ন ছবি ‘দরদ’-এর নির্মাতা অনন্য মামুনের বিরুদ্ধে পারিশ্রমিক না মেটানোসহ বেশ কিছু অভিযোগ এনেছেন অভিনেত্রী এলিনা শাম্মী। প্রাথমিকভাবে বিষয়টি নিয়ে সরাসরি অনন্য মামুনের নাম জড়াতে না চাইলেও পরোক্ষভাবে বোঝানোর চেষ্টা করিয়েছিলেন অভিনেত্রী।
কিন্তু অভিনেত্রীর এমন অভিযোগের জেরে বিষয়টি গায়ে নিয়ে বসেন অনন্য মামুন; এলিনাকে নিয়ে দেন নানান বিস্ফোরক মন্তব্য। এক পর্যায়ে বাধ্য হয়েই অনন্য মামুনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক তথ্য ফাঁস করলেন এলিনা।
এলিনা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ভারতে ‘দরদ’ সিনেমায় ১৯ দিন শ্যুটিং করেছি। মামুন আমাকে মাত্র ১৬ হাজার টাকা দিয়েছেন। বাকি টাকা চাইলেই ক্রাইসিসের কথা জানান। “রেডিও” সিনেমাতেও আমাকে কোনো পারিশ্রমিক দেননি। এমনকি কয়েক বছর আগে মুক্তি পাওয়া “কসাই” সিনেমার সব পারিশ্রমিক বুঝে পাইনি।’
এলিনা শাম্মী গণমাধ্যমকে আরও বলেন, ‘এবারই প্রথম নয়। পারিশ্রমিক নিয়ে অনন্য মামুন কী করেন, তা প্রায় সব শিল্পীরই জানা। উনি এসব জেনেবুঝেই করেন। তিনি আপাদমস্তক একজন ব্যবসায়ী। আমি অন্য পরিচালকদের সঙ্গেও কাজ করেছি। অনন্য মামুনের মধ্যে পরিচালকের কোনো ছাপ পাই না। তার মধ্যে সব সময় ধান্দাবাজি করার পাঁয়তারা কাজ করে।’
গত বুধবার রাতে প্রথমে ফেসবুকে নাম প্রকাশ না করে একজন নির্মাতার বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে আসেন এলিনা। সে সময় এলিনা লিখেছিলেন, ‘যে নির্মাতা সাবেক সরকারের আমলে দালালি, চাটুকারিতা, তোষামোদি করে টিকে থেকেছে, শিল্পীদের দিয়ে কাজ করিয়ে পারিশ্রমিক দেয়নি, তার মুখে নীতিবাক্য মানায় না। কথার ফুলঝুরি ছড়িয়েছে সব সময়, চাপাবাজিতে সে বদ্ধপরিকর।’ এছাড়াও নির্মাতাকে ‘চাটুকার’, ‘দালাল’ উল্লেখ করে সাবধান হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন অভিনেত্রী।
এলিনা শাম্মীর এমন পোস্টের পর মন্তব্যের ঘরে সেই পরিচালকের নাম জানতে চান অনেকে। এদিকে ওই রাতেই অনন্য মামুন লেখেন, ‘একজন অদক্ষ অভিনেতা আমার সিনেমায় কাজ না করতে পেরে এখন গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। টিজারে নিজের মুখটা না দেখতে পারাই কি কষ্ট?’
এরপরেই অনেকে ধারণা করেন অনন্য মামুনের বিরুদ্ধেই এমন পোস্ট দিয়েছেন এলিনা।
এদিকে মুক্তির অপেক্ষায় আছে মামুনের ‘দরদ’। তাই তো সিনেমাটি মুক্তি হবে চিন্তা করে বিষয়টি নিয়ে চুপ ছিলেন এলিনা।
এ বিষয়ে এলিনা বলেন, ‘এতদিন দরদ সিনেমার জন্য কোনো কথা বলিনি। ভেবেছি কথা বললে সিনেমার ক্ষতি হবে। এ ছাড়া অনন্য মামুনকে আমার নিজের ভাইয়ের মতো মনে করি। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে তিনি আমাকে ন্যায্য পাওনাটুকু দেননি। উল্টো ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জানান, আমি নাকি অদক্ষ অভিনেতা। অথচ আমি কখনওই লবিং করে কাজ করিনি। আমার যোগ্যতা বলেই তিনি তার কয়েকটি সিনেমায় অভিনয় করিয়েছেন। আর টিজারে দেখা যায়নি বলে আমার কষ্টের কথা বললেন। হ্যাঁ, আমি কষ্ট পেয়েছি। আমি গুরুত্বহীন কোনো চরিত্রে অভিনয় করিনি যে আমাকে রাখা যাবে না। আমি তো নায়িকা নই, চরিত্রাভিনেতা। আমার তো কাজ দিয়েই এগিয়ে যেতে হয়।’
এলিনা এও জানান, ফেসবুকে স্ট্যাটাসের পর পাওনা বুঝে নেওয়ার জন্য ডেকেছেন মামুনের সহকারী। এলিনা বলেন, ‘তার অফিসে গিয়ে টাকা আনতে আমি নিরাপদ বোধ করছি না। এ ছাড়া স্ট্যাটাস দেওয়ার পর অনেকেই আমার সঙ্গে যোগাযোগ করছে। তারাও মামুনের কাছে টাকা পায়। আমাদের সবার পারিশ্রমিক বুঝিয়ে দিতে হবে।’