দীর্ঘ সময় ধরে বিশ্ব ক্রিকেটে বড় কোনো সাফল্য নেই পাকিস্তানের। চলমান আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও তারা ঘরের মাঠে দর্শকে পরিণত হয়েছে। কোনো ম্যাচ না জিতেই তারা বিদায় নিয়েছে টুর্নামেন্টের গ্রুপপর্ব থেকে। দলের এমন বিপর্যস্ত অবস্থা কাটাতে কিংবদন্তি ক্রিকেটার ওয়াসিম আকরাম কোচিংয়ের ভূমিকায় আসবেন কি না এমন প্রশ্ন করা হয়েছিল। জবাবে সাফ ‘না’ বলে দিয়েছেন সাবেক এই পেসার।
সম্প্রতি পাকিস্তানের একটি ক্রীড়াভিত্তিক অনুষ্ঠানে একজন ভক্ত ওয়াসিম আকরামকে জাতীয় দলের কোচ হওয়ার ব্যাপারে প্রশ্ন করেন। জবাবে সাবেক বাঁ-হাতি পেস কিংবদন্তি জাতীয় দলে সাবেক ক্রিকেটারদের যথাযথ সম্মান না পাওয়ার কথা উল্লেখ করেন। স্মরণ করিয়ে দেন আরেক কিংবদন্তি ওয়াকার ইউনিসের প্রধান কোচ পদে অসম্মানিত হওয়ার কথা। ওয়াসিম আকরাম বলেন, ‘সত্যি বলতে অনেক মানুষ এখনও আমার সমালোচনা করে কিংবা তোপ দাগিয়ে বলেন– ‘‘তাকে (আকরাম) শুধু কথা বলতে দাও, এর বাইরে সে কিছুই করতে পারবে না।’’’
এরপরই সাবেক সতীর্থ ওয়াকারের পরিণতি উল্লেখ করে আকরাম বলেন, ‘যখন আমি পাকিস্তানি কোচদের দেখি, এর মধ্যে ওয়াকারও (ইউনিস) আছেন, তিনি কোচের দায়িত্ব নিয়েছিলেন একাধিকবার এবং মানুষ তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছে। তখনই আমি ঠিক করেছি যে, এ ধরনের অসম্মান আমি সহ্য করতে পারব না।’ তবে দায়িত্বে না থেকেও বেতন ছাড়াই পাকিস্তানের ক্রিকেটীয় উন্নয়নে কাজ করতে রাজি ‘দ্য কিং অব সুইং’— ‘আমি পাকিস্তান ক্রিকেটকে সাহায্য করতে চাই, এর জন্য কেন আমাকে টাকা দিতে হবে? আমি বিনা-বেতনে কাজ করতে প্রস্তুত। যখনই কোনো ক্যাম্পে ডাকা হবে, আমি আসব। যদি টুর্নামেন্টের জন্য ডাকা হয়, তখনও আমি খেলোয়াড়দের সময় দেবো।’
৫৮ বছর বয়সী ওয়াসিম আকরাম পেশাদার ক্রিকেট ক্যারিয়ার চুকিয়েছেন ২০০৩ সালে। বর্তমানে তিনি পুরোদস্তুর ধারাভাষ্যকার ও ক্রিকেট বিশ্লেষক। পরিবারকে সময় বেশি দিতেই এটি বেছে নিয়েছেন বলে জানান আকরাম, ‘আমার বয়স ৫৮ বছর। আমার পরিবার আছে, ১০ বছর বয়সী মেয়ে ও দুটি ছেলে আছে। আমি তাদের সঙ্গে সময় কাটাতে চাই। তবে আমি এটিও বলছি যে, আমি (জাতীয় দলকে সময় দিতে) সবসময়ই এভেইলেবল, এমনকি বেতন ছাড়াই। যখনই ছেলেদের ক্যাম্পে যেতে হবে আমার সময় মিললে যাব।’
একইসঙ্গে এই বয়সে কোনো অসম্মানের ভারও কাঁধে নিতে চান না ওয়াসিম, ‘পাকিস্তানের টুর্নামেন্ট কিংবা ক্যাম্প যেখানেই হোক, তারা চাইলে আমি যাব। অবশ্যই তাদের কিছু দেওয়ার আছে। তবে এই বয়সে আমি কোনো অপমান নিতে পারব না। যাইহোক, এখনও আমি কম অসম্মানিত হচ্ছি না। আমরা এমন এক শ্রেণি, যারা সভ্য-আচরণকারী নই।’
সাবেক ক্রিকেটারদের মধ্যে পাকিস্তান জাতীয় দলের প্রধান কোচ হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে জাভেদ মিঁয়াদাদ, মিসবাহ-উল-হক ও ওয়াকার ইউনিসের। যাদের কারও অভিজ্ঞতাই সুখকর নয়। বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন কোচ হিসেবে আছেন আকিভ জাভেদ। তার অধীনেই অবশ্য পাকিস্তান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বিদায় নিয়েছে। গ্রুপপর্বে ভারত ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে কোনো লড়াই–ই দেখাতে পারেননি রিজওয়ান-বাবর-শাহিনরা। দুটি ম্যাচে হারের পরই তাদের বিদায় নিশ্চিত হয়, এরপর বাংলাদেশের বিপক্ষে আনুষ্ঠানিকতার ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয় বৃষ্টির কারণে।