আমরা বর্তমানে যে ক্যালেন্ডার ব্যবহার করি সেটি হল গ্রেগরিয়ান যুগের ক্যালেন্ডার। এটিকে আমরা ইংরেজি বর্ষপুঞ্জি হিসেবে অভিহিত করি। বছরের অন্য মাস ৩০ বা ৩১ দিনের হয়ে থাকে। কিন্তু ফেব্রুয়ারি মাস এলেই তা ২৮ বা ২৯ দিনে নেমে আসে। এর মধ্যে চার বছর পরপর আসে ২৯ দিন। যাকে বলা হয় লিপ ইয়ার। আর এই লিপ ইয়ার হওয়ায় এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাস ২৯ দিনের। একবারও কী ভেবে দেখেছেন কেন এই ফেব্রুয়ারি মাস ২৮ দিনের?
জানা গেছে, রোমনরা গ্রিক পঞ্জিকা অনুযায়ী বছর ধরত ৩০৪ দিনের। মাস ছিল দশটি। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসের সে সময় কোনো অস্তিত্বই ছিল না। মার্চ ছিল প্রথম মাস। রাজা নূমা পম্পিলিয়াস জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসকে বছরের ক্যালেন্ডারে যোগ করেন। ফেব্রুয়ারি ছিল বছরের শেষ মাস। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি দুই মাসকেই ৩১ দিন হিসাবে ধরা হত সেই সময়। কিন্তু তা নিয়ে প্রবল সমস্যা দেখা দেয়।
মূলত, ঋতুর সঙ্গে সময়ের তারতাম্য না মেলায় সমস্যা পোহাতে হচ্ছিল। পরে ক্ষমতায় আসার পর বছরকে ঢেলে সাজালেন জুলিয়াস সিজার। নতুন দু’টি মাস, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিকে এগিয়ে আনলেন তিনি। যেহেতু ফেব্রুয়ারি মাস একেবারে নতুন ছিল, তখনকার দিনে সুবিধার জন্যই ২৮ দিনে ধরা হত। সেই থেকে আজও এটি প্রচলিত।
এক প্রতিবেদনে বলা হয়, তখন বিজোড় মাসকে অসুখী হিসেবে ধরা হতো। রোমানদের বিশ্বাস ছিল, বিজোড় সংখ্যায় থাকলে ভূতের উপদ্রব হতে পারে। তাই নূমা পম্পিলিয়াস ফেব্রুয়ারি মাসকে ২৮ দিনের করেন। তবে প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাস ২৮ দিনের হয় না।
সূর্যের চারদিকে পৃথিবী প্রদক্ষিণ করতে সময় নেয় ৩৬৫ দিন ৬ ঘন্টা। সেই হিসাবে প্রত্যেক ৪ বছর পর ২৪ ঘন্টা, অর্থাৎ একটি দিন অতিরিক্ত থেকে যায়। সেই দিনটি যোগ করা হয় ফেব্রুয়ারি মাসে। তাই চার বছর পর ফেব্রুয়ারি মাসের দিনসংখ্যা দাঁড়ায় ২৯ দিন।