বর্তমান সময়ে কর্মব্যস্ত জীবনে অনেকেরই নিজেদের প্রতি খেয়াল রাখা হয়ে ওঠে না সঠিক ভাবে। জন্মের পর থেকে একজন মানুষের জীবনের প্রতিটি অধ্যায় যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি ৩০-৪০ এর মধ্যেকার বয়সটিও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই বয়সী অধিকাংশ ব্যক্তিরা মনে করেন তারা এখনো তরুণ এবং তাদের রোগ হবার সম্ভাবনা কম। তবে এই বয়সে যদি সতর্ক না হন কিংবা নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি সচেতন না হন আপনার অজান্তেই জটিলতা বাড়বে সেই সাথে বাড়বে স্বাস্থ্যঝুঁকি। কর্মময় ব্যস্ত জীবনে তাই স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ছোট ছোট পরিবর্তন আনুন। সময় নিয়ে শুরু করুন স্বাস্থ্যকর অভ্যাস।
সারাদিনের খাবার সঠিক ভাবে বন্টন করুন
অধিকাংশ মানুষই দিনে ৩-৪ বার খাবার খান এবং পরিমানের বিষয় অসচেতন থাকেন। সারাদিনের ক্যালরি চাহিদা অনুযায়ী খাবারকে ছয় ভাগে ভাগ করে পরিমিতভাবে খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন।
প্রয়োজন অনুযায়ী পানি গ্রহণ করুন
মানব শরীরের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান পানি। আর প্রচন্ড গরমে ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে পানি বেরিয়ে যাবার ফলে এ সময়ে সবার সাধারণ যে সমস্যা দেখা দেয় সেটি হলো পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন। ব্যস্ততার কারনে অনেকেই সঠিক পরিমানে পানি পান করেন না, আবার অনেকেই শুধুমাত্র পিপাসা পেলে পানি পান করেন। ফলে দেখা দেয় পানিশূন্যতা। তাই পানিশূন্যতা রোধে অবশ্যই প্রয়োজনীয় পরিমাণে পানি গ্রহণ করতে হবে। প্রতিটা মানুষের শরীরের পানির চাহিদা আলাদা হয়। কারণ প্রত্যেকের বয়স, ওজন, উচ্চতা, কাজের ধরন আলাদা। সুতরাং শারীরিক অবস্থার উপর ভিত্তি করে প্রয়োজন অনুযায়ী পানি গ্রহণ করতে হবে।
জাংক ফুডকে না বলুন
ব্যস্ত সময়ে অনেকেই ঝুঁকে পড়েন অস্বাস্থ্যকর খাবারের দিকে। অল্প ক্ষুধায় বিভিন্ন ধরনের প্যাকেটজাত খাবার খেয়ে থাকেন। চিপস, চকোলেট, বিভিন্ন জাতীয় ফাস্টফুড, ভাজাপোড়া ও অতিরিক্ত তেল জাতীয় খাবার, কোমল পানীয় ইত্যাদি খাবার আস্তে আস্তে খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিন।
বাড়তি লবন এবং অতিরিক্ত চিনি বর্জন করুন
বাড়তি লবন শরীরে মারাত্মক ক্ষতি করে, তাই খাবার প্রস্তুতির সময় যতটুকু দরকার তার বাইরে সল্ট গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুন। অতিরিক্ত চিনি আমাদের রক্তে সুগার লেভেল শুধু বাড়ায় না বরং ক্যালরি ভ্যালুও বাড়ায়। তাই চা-কফি তে সামান্য চিনি ব্যবহার করুন কিংবা চিনি ছাড়া খাবার অভ্যাস করুন।
শারীরিক পরিশ্রম করুন
যারা সকালে হাঁটার বা এক্সারসাইজ করার সময় পান না, তারা অন্তত কাজ শেষে এক্সারসাইজ করার অভ্যাস করুন। অন্তত ৩০ মিনিট মডারেট এক্সারসাইজ। যারা হাঁটতে চান তারা অন্তত ২০০০ স্টেপ দিবেন কাজ শেষে একটি নির্দিষ্ট সময় নিয়ে এবং এটাতে সময় লাগবে ২০-৩০ মিনিট।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন
ওজন বাড়ার সাথে সাথে আপনার স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়বে সহজেই। তাই যাদের উচ্চতা এবং বয়স অনুযায়ী ওজন ঠিক আছে তারা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন৷ এবং ইতিমধ্যেই যারা ওভার ওয়েটের সমস্যায় ভুগছেন তারা একজন বিশেষজ্ঞ পুষ্টিবিদের পরামর্শ মোতাবেক আপনার বাড়তি ওজন কমানোর জন্য দৈনিক কতটুকু ক্যালরি প্রয়োজন জেনে সেই অনুযায়ী ডায়েট চার্ট মেনে চলবেন।
সুস্থতার জন্য একটি সঠিক নিয়ম অনুশীলন প্রয়োজন। আর তাই নিজের জীবন ধারায় স্বাস্থ্যকর অভ্যাস মেনে চলুন।