নিজ দেশের নাগরিকদের বাংলাদেশে চলাফেরায় সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া। বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান বিক্ষোভের প্রেক্ষাপটে এ পরামর্শ দিচ্ছে দেশ দুটি।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তাদের ওয়েবসাইটে এই সতর্কতা জারি করে। এর আগের দিন সোমবার বাংলাদেশে চলাফেরার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়ে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের ওয়েবসাইটে একটি বার্তা দেওয়া হয়।
মার্কিন দূতাবাস বলছে, সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে ঢাকা, আশপাশের এলাকা ক্রমেই অস্থিতিশীল হয়ে পড়ছে। ছাত্রদের এ আন্দোলন স্থানীয়ভাবে পরিবহনসেবায় প্রভাব ফেলতে পারে, যা ঢাকায় আসা-যাওয়া কঠিন করে তুলবে।
সতর্কবার্তায় চলমান বিক্ষোভ সংঘর্ষ ও সহিংসতায় রূপ নিতে পারে উল্লেখ করে বলা হয়েছে, মার্কিন নাগরিকদের সতর্কতা পালন করা উচিত। বিক্ষোভ এড়িয়ে চলার পাশাপাশি কোনো বড় সমাবেশের আশপাশে থাকলে সতর্কতা অবলম্বন করুন।
এ ছড়া সতর্কবার্তায় অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকদের বিক্ষোভসহ সব ধরনের বড় মিছিল-সমাবেশ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বেশ সহিংস রূপ নেয়। এ দিন ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে ছয়জন মারা যান। আহত হন কয়েকশ’ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মী।
গত রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা প্রসঙ্গে কথা বলার সময় মন্তব্য করেন ‘মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধার নাতিপুতিরা কিছুই পাবে না, রাজাকারের নাতিপুতিরা সব পাবে?’
প্রধানমন্ত্রীর এ মন্তব্যে ক্ষিপ্ত হন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা। তাদের দাবি, ‘রাজাকারের নাতিপুতি’ তাদেরকেই বলা হয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য প্রত্যাহারের দাবিতে এবং কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে রোববার মধ্যরাত থেকেই আন্দোলনে নামেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। সেই আন্দোলন এখনও চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজধানী ঢাকাসহ ৬ জেলায় মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।