ফুটবল দুনিয়াতে চলছে সৌদি লিগের জোয়ার। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পথ ধরে সমসাময়িক অনেক তারকাই পাড়ি জমিয়েছেন সৌদি ফুটবলের অর্থের মায়ায়। যে তালিকায় থাকা নামগুলো সবারই পরিচিত। সম্প্রতি আফ্রিকান বর্তমান সেরা ফুটবলার ভিক্টর ওসিমেনও যোগ দিতে চেয়েছিলেন সৌদি ফুটবলের এই জোয়ারে। যদিও শেষ পর্যন্ত সেই দলবদল হয়নি।
তবে চলতি গ্রীষ্মে ইউরোপিয়ান ফুটবল ছেড়ে সৌদি লিগে গিয়েছেন ইংলিশ তারকা আইভান টনি এবং নেদারল্যান্ডসের মিডফিল্ডার স্টিভেন বার্গউইন। দুজনেই ইউরোতে খেলেছেন সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত। ইউরোপিয়ান ফুটবলে তাদের আরও অনেকটা দিনই সার্ভিস দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই পথে হাঁটলেন না তারা। ব্যাপক অর্থের বিনিময়ে পাড়ি জমালেন সৌদি ফুটবলে।
সৌদি ক্লাব আল আহলিতে যোগ দিয়েছেন আইভান টনি। তার এমন দলবদলের পর সাবেক ইংলিশ তারকা অ্যালান স্মিথ শঙ্কা প্রকাশ করেছেন, এমন সিদ্ধান্তের কারণে আইভান টনির জাতীয় দলের দরজাটাই বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তবে টনির বেলায় যা শঙ্কা, তা সত্য হয়েছে স্টিভেন বার্গউইনের বেলায়। সৌদি লিগে যোগ দেয়ার অভিযোগে নেদারল্যান্ডসের জাতীয় দলের দরজা তার জন্য বন্ধ করে দিয়েছেন কোচ রোনাল্ড কোম্যান।
গতরাতে নেদারল্যান্ডস ৫-২ গোলে একপ্রকার উড়িয়েই দিয়েছে প্রতিপক্ষ বসনিয়া হার্জেগোভিনাকে। এই ম্যাচে ছিলেন না বার্গউইন। এই মিডফিল্ডারের জাতীয় দলের দরজা কেন বন্ধ, সেই ব্যাখ্যা আগেই দিয়েছিলেন কোম্যান। তার ভাষ্য, মাত্র ২৬ বছর বয়সেই সৌদি ক্লাব আল ইত্তিহাদে যোগ দিয়ে বার্গউইন বুঝিয়েছেন তার কাছে খেলার চেয়ে অর্থই মুখ্য।
কোম্যানের ভাষ্য, ‘তার (স্টিভেন বার্গউইন) জন্য দরজা পারতপক্ষে বন্ধ। সে জানে আমি এই ব্যাপারে কেমন ধারণা রাখি। যখন তোমার বয়স ২৬, তখন মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত খেলা। টাকা নয়। এসব সিদ্ধান্ত খেলোয়াড়রাই নেয়।’
বার্গউইন তার নিজের ক্লাব আয়াক্সেই থাকতে পারতেন বলে মন্তব্য কোম্যানের, ‘আমি কখনোই এমন পরিস্থিতিতে পড়িনি। কারণ আমি বার্সেলোনায় চলে যেতে পারতাম। সে চাইলে আয়াক্সেই থাকতে পারতো। সেটা তো খারাপ ছিল না, তাই না? মানুষের পছন্দকে সম্মান করতে হয়। তবে দূর্ভাগ্যবশত আমি পারছি না (সম্মান জানাতে)।’
তবে সৌদি লিগে যোগ দেয়ার পরেও ৩৩ বছর বয়েসী জিমি উইনাল্ডামকে ইউরোর দলে ডেকেছিলেন কোম্যান। এক্ষেত্রে তার ব্যাখ্যা উইনাল্ডাম তার ক্লাব প্যারিস সেইন্ট জার্মেইনে সমস্যার মুখে পড়ছিলেন। আর তার বয়সও বেড়ে গিয়েছিল। যে কারণে উইনাল্ডামকে বিবেচনায় আনা হয়েছিল। তবে আগামীতে উইনাল্ডাম বা মার্টেন ডি রুনকে বিবেচনায় আনা হবে না– এমন আভাসও দিয়ে রেখেছেন সাবেক এই বার্সেলোনা কোচ।
স্টিভেন বার্গউইনের ভাগ্য আইভান টনিরও হতে পারে বলে মনে করেন সাবেক ইংলিশ তারকা অ্যালান স্মিথ। তার মতে, সৌদি লিগে থাকার কারণে টনির ওপর থেকে চোখ সরে যাবে ইংলিশ ম্যানেজারের। তবে পরের মৌসুমে অন্তত ৪০ গোল করলে ইংল্যান্ডের জাতীয় দলের বিবেচিত হতেও পারেন। যদিও সেই সম্ভাবনাও আপাতত খুবই কম।