কম দামে স্মার্টফোনে ছেয়ে গিয়েছে বাজার। পকেট একটু ভারী হলেই, স্মার্টফোন আপনার সাধ্যে। কিন্তু কম দামের স্মার্টফোন কিনতে গিয়ে অনেক সময়েই ভুগতে হয় ক্রেতাদের। আসলে ‘সস্তার তিন অবস্থা’ বলে একটি বহুল প্রচলিত প্রবাদটি কয়েক মাসের মধ্যেই ফলতে শুরু করে। তবে একটু সজাগ থাকলে, কম দামের স্মার্টফোন কিনেও ঠকার কোনও ভয় থাকে না। বেশি নয়, মাত্র ৫টি বিষয় মাথায় রেখে বাজেট ফোন কিনতে যান। আর কোনও সমস্যাই হবে না।
১. বেশির ভাগ ব্যক্তিই স্মার্টফোন কিনতে গিয়ে ভাবেন, দামি স্মার্টফোনের থেকে সস্তার স্মার্টফোনের প্রযুক্তিগত হেরফের খুব একটা হবে না। এই আশা প্রথমেই ত্যাগ করতে হবে। সিয়াওমি রেডমি নোট বা ইউরেকার ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তিগত ফারাকটা কম থাকলেও, বেশির ভাগ স্মার্টফোনের ক্ষেত্রেই তা হয় না। মনে রাখতে হবে, বাজেট স্মার্টফোন মানেই দামের সঙ্গে প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও আপোষ করতে হবে। সাধারণত এই পার্থক্যটা চোখে পড়ে স্ক্রিন রেজলিউশন, প্রসেসর টাইপ ও স্পিড, র্যাম, ক্যামেরার গুণগত মান (নথিতে ১৩ মেগাপিক্সেল লেখা থাকলেও) এবং ব্যাটারি ব্যাক-আপে।
২. কম দামের স্মার্টফোনে এমন কিছু ফিচার থাকে না, যেগুলি কেনার সময় ক্রেতার চোখে পড়ে না। যেমন, যদি লেখা থাকে ৪জিবি ইন্টারনাল স্টোরেজ, তাহলে বুঝতে হবে, গ্রাহক ২জিবি-র বেশি ব্যবহার করতে পারবেন না। একই সঙ্গে ডিরেক্ট ওয়াইফাই ও ব্লু-টুথের নতুন ভার্সন ৪.০ পাওয়া যায় না। তাই বাজেট স্মার্টফোন কেনার সময় ফিচারগুলি ভালো করে দেখে নেওয়া উচিত।
৩. বাজেট স্মার্টফোনে আরেকটি লক্ষণীয় বিষয় হল, হার্ডওয়্যার। প্রায় সব স্মার্টফোনেই প্রাথমিক বা এন্ট্রি লেভেল হার্ডওয়্যার ব্যবহার করা হয়। তাই প্রথমেই খতিয়ে দেখে নিন, প্রসেসর, র্যাম ও এক্সপ্যান্ডেবল মেমরি। এছাড়াও ডিসপ্লে সাইজ, রেজলিউশন, কনেক্টিভিট অপশন, ব্যাটারির ক্ষমতা সম্পর্কে অবহিত হওয়া উচিত। এর জন্য ফোন কেনার আগে দোকানেই সংশ্লিষ্ট ফোনের ডেমো ব্যবহার করে দেখে নেওয়া উচিত।
৪. বাজারে এখন বহু স্মার্টফোনে অ্যান্ড্রয়েড, উইন্ডোজ ফোন, এমনকি ব্ল্যাকবেরি-র পুরনো ডিভাইসও পাওয়া যাচ্ছে। কম দামি স্মার্টফোন কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অপারেটিং সিস্টেম ভালো করে চেক করে নেওয়া উচিত। আপনি নিশ্চয়ই চাইবেন না, অ্যান্ড্রয়েড বা উইন্ডোজের পুরনো ভার্সন ব্যবহার করতে। মাথায় রাখতে হবে, বিভিন্ন অপারেটিং সিস্টেমের হার্ডওয়্যার ভিন্ন। যেমন, উইন্ডোজের সাম্প্রতিকতম ভার্সনের (উইন্ডোজ ৮ বা তার উপরে) জন্য র্যাম ও প্রসেসর স্পিড কম দরকার, আগের ভার্সনের তুলনায়। একই সঙ্গে কম দামের স্মার্টফোনে দেখবেন কিছু প্রি-ইনস্টল অ্যাপ বা থার্ড পার্টি অ্যাপ থাকেই। ওই অ্যাপ-গুলি অযথা জায়গা দখল করে থাকে। আন-ইনস্টল করলেই ফোনের উপর প্রভাব পড়ে। তাই এই বিষয়টা কেনার আগেই খতিয়ে দেখে নেওয়া উচিত।
৫. বেশির ভাগ স্মার্টফোনেরই ওয়্যারেন্টি পিরিয়ড এক বছরের হয়। তবে কাছাকাছি কোনও সার্ভিস সেন্টার না থাকলে, ওয়্যারেন্টির কোনও দাম নেই। তাই কোনও কোম্পানির স্মার্টফোন কেনার আগে অবশ্যই আপনার বাড়ির কাছে সেই সংস্থার সার্ভিস সেন্টার আছে কিনা, খোঁজ নিন। অনেকেই এই বিপদে পড়ে।