বিশ্বে প্রথমবার হীরার মতো দামি পাথর দিয়ে তৈরি হলো এমন এক ব্যাটারি, যা একবার চার্জ করলেই চলবে হাজার বছর। এই যুগান্তকারী উৎস শুধু চিকিৎসা সরঞ্জাম আর মহাকাশযানে ব্যবহারের জন্য নয়, এটি পাল্টে দেবে ভবিষ্যতের প্রযুক্তির দিকনির্দেশনা ।
এই অসাধারণ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে যুক্তরাজ্যের অ্যাটমিক এনার্জি অথরিটি (ইউকেএইএ) এবং ইউনিভার্সিটি অব ব্রিস্টলের বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীরা। কার্বন-১৪ নামে এক তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ দিয়ে তৈরি এই ব্যাটারিকে বলা হচ্ছে ডায়মন্ড ব্যাটারি। এটি সৌর প্যানেলের মতো কাজ করে, তবে আলোর পরিবর্তে কার্বন-১৪ এর ক্ষয় থেকে পাওয়া ইলেকট্রনকে বিদ্যুতে রূপান্তরিত করে।
আরও মজার বিষয় হলো এটি শুধু দীর্ঘস্থায়ী নয়, অত্যন্ত নিরাপদ। এটি স্মার্টফোন, গৃহস্থালি যন্ত্রপাতি থেকে শুরু করে চিকিৎসা সরঞ্জাম যেমন পেসমেকার, শ্রবণ সহায়ক যন্ত্র এবং চোখের ইমপ্ল্যান্টে এই ব্যাটারি ব্যবহার করা যাবে। রোগীদের জন্য এটি হবে একটি বিশাল সুবিধা, কারণ একবার ব্যাটারি লাগানোর পর আর বদলানোর প্রয়োজনই হবে না।
মহাকাশ গবেষণার জন্যও এটি হতে পারে একটি গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার। চরম পরিবেশে সাধারণ ব্যাটারি যেখানে কাজ করে না, সেখানেও ডায়মন্ড ব্যাটারি কাজ করতে সক্ষম। মহাকাশযান, স্যাটেলাইট এবং পেলোডের মতো ডিভাইসগুলোতে এটি কয়েক দশক ধরে শক্তি সরবরাহ করতে পারবে। কারণ, একবার চার্জ দিয়ে এটি মহাকাশযানে কয়েক শ বছর কাজ চালিয়ে যেতে সক্ষম।
তবে, এর দাম নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। হীরার মতো ব্যাটারির মূল্য সাধারণ মানুষের জন্য কতটা সাশ্রয়ী হবে, সেটি নিয়ে এখনো বিতর্ক চলছে। তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভবিষ্যতে এর উৎপাদন প্রক্রিয়া উন্নত হলে খরচ কমে আসবে।
এই ব্যাটারির প্রযুক্তি আরও একটি বিশেষ দিক তুলে ধরে—এটি পরিবেশবান্ধব। তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ হলেও, কার্বন-১৪ এর ক্ষুদ্র পরিমাণ কৃত্রিম হীরায় সুরক্ষিতভাবে স্থাপন করা হয়। তাই এটি ব্যবহারে কোনো ঝুঁকি নেই।
শীতের সন্ধ্যায় নাস্তা হিসেবে তৈরি করে ফেলুন ক্ষীরের পাটিসাপটা
গবেষকদের মতে, এই ব্যাটারি শুধু শক্তি খাতে নয়, প্রযুক্তির অন্যান্য ক্ষেত্রেও বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে। এটি এমন এক সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে, যা ভবিষ্যতের অনেক জটিল সমস্যার সমাধান দেবে।