একটি দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের রহস্য কি? এটা নিয়ে যদি আপনি একশ জনের ওপর একটি গবেষণা চালান তবে আপনি নিজেই নতুন অনেক তথ্যের সঙ্গে পরিচিত হবেন। এটি আসলে একটি বর্ণনামূলক প্রশ্ন যার কোনো সংজ্ঞা নেই।
তবে ভালো খবর এটা যে, এটি কোনো কঠিন কাজ নয়। আপনি চাইলেই আপনার এই পবিত্র সম্পর্কটিকে আরো দৃঢ় করতে পারেন। তার জন্য দরকার ইচ্ছা শক্তি এবং কিছু পদক্ষেপ।
সুসান উইন্টার, সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ এবং এই বিষয়ে সর্বাধিক বিক্রিত বইয়ের লেখক, তিনি ইনসাইডার এর সঙ্গে কথা বলেন সম্পর্ক দৃঢ় করার ব্যাপারে। সুসান সহজ ছয়টি উপায়ের কথা বলেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই ছয়টি উপায় কি কি।
* একসঙ্গে নতুন শখ বা প্রকল্প তৈরি : দুজন মিলে একসঙ্গে একটি নতুন প্রকল্প তৈরি করুন যাতে করে বেশ কিছু সময় একসঙ্গে কাটাতে পারেন। এজন্য নিজের বাড়ির সামনের বিরক্তিকর ঘাসের মাঠটিকে সুন্দর একটি ফুলের বাগান তৈরি করতে পারেন। একসঙ্গে সালসা নাচ শেখার পরিকল্পনা করতে পারেন।
সুসান বলেন, ‘কারো এমন দম্পতি হওয়া উচিত না যেন ২০ বছর পর খাবার টেবিলে বসে কোনো কথা না থাকে বলার মতো, কারণ বিগত দিনেই সব কথা বলা শেষ।’
তিনি আরো বলেন, ‘প্রত্যেক দম্পতির প্রতিদিন খাবার টেবিলে বসে অন্তত নতুন কথোপকথন হওয়া উচিত। হতে পারে সেটা ব্যবসা সম্পর্কিত অথবা অন্য কোনো দৈনিক কাজ সম্পর্কিত।’
* ন্যায্য লড়াই : রাগান্বিত না হওয়া বেশ ভালো এমনকি স্বাস্থ্যকরও বটে। তবে ব্যাপার হল, আপনি কতক্ষণ উচ্চস্বরে ঝগড়া না করে থাকতে পারেন তা। সুসান বলেন, ‘উৎপত্তি হওয়া তর্কের একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল সততা এবং খোলাখুলি কথা বলা।’
সুসান আরো বলেন, ‘যখনি আপনার এবং আপনার সঙ্গীর মধ্যে কোনো ব্যাপার উপস্থাপিত হয় তখন সেই সম্পর্কে খোলাখুলি কথা বলা ভালো।’
* একসঙ্গে ঘুরে বেড়ান : একসঙ্গে ঘুরে বেড়ানোর জন্য কোনো আন্তর্জাতিক ট্রিপের দরকার নেই। মাঝে মাঝে দুজনে একসঙ্গে কোনো আত্মীয়দের বাড়ি বা কোনো নতুন জায়গা থেকে ঘুরে আসুন। অথবা কোনো এক বিকেল হেঁটে আসুন দূর অজানায়।
লেখিকা সুসান এ ব্যাপারে বলেন, ‘আপনি হয়তো শুনে থাকবেন যে, আপনার আশেপাশের দম্পতিরা ঠিক কি করেন, তারা কিভাবে ঘোরাঘুরির পরিকল্পনা করেন। একটি দম্পতি বা পরিবার হিসেবে কিছু অভ্যাস পরিবর্তন করে নতুন নমুনা তৈরি করার হুজুগ ভালোই হয়।’
* ধন্যবাদ দিন একে অপরকে : সুসানের মতে, ‘কাউকে ভালোবাসি বলার সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হল ‘ধন্যবাদ’ বলা। একটি ছোট্ট ধন্যবাদ একটি সম্পর্ককে অনেক দূর নিয়ে যেতে পারে। সময় নিয়ে দেখুন আপনার সঙ্গী আপনাকে খুশি করার জন্য কি কি করেন, তা আপনার জন্য পর্যাপ্ত হোক বা না হোক, আপনি আপনার সঙ্গীকে সর্বদা ধন্যবাদ দিতে থাকুন। এতে আপনাদের সম্পর্ক আরো ভালো হবে।’
* মনোযোগ দিয়ে শুনুন সঙ্গীর কথা : সঙ্গীর প্রতি নিজের যত্ন প্রকাশের আরেকটি ভালো মাধ্যম হল, সঙ্গীকে আপনার সময় এবং মনোযোগ উপহার দেওয়া। সঙ্গীর কথা মনোযোগ দিয়ে শোনার মানে এই নয় যে, শুধু শুনে যাওয়া বরং তার প্রত্যেকটি কথা ভালো করে বোঝা এবং উত্তর দেওয়া।
সুসান বলেন, ‘একসঙ্গে বসে মনোযোগের সঙ্গে কথা বলা বা কোনো গল্প শোনা কিংবা বলা থেকে সম্পর্কের পারস্পরিক সংযোগ বাড়িয়ে তোলে। আমাদের সবারই উচিত সম্পর্কের মূল্য বোঝা এবং সম্পর্কের ভালো দিকগুলোকে উৎসাহিত করা।’
* একে অপরের সঙ্গে প্রেম করুন : বিয়ে করার মানে এই নয় যে, একে অপরের প্রতি আকর্ষণ এবং সম্পর্কের রহস্য শেষ হয়ে যায়। বরং তার সুযোগ আরো বেড়ে যায়। দম্পতিদের মধ্যে রাতের প্রেম সম্পর্ক আরো গভীর করে। তবে আপনাকে তা অবশ্যই বুঝতে হবে।
লেখিকা সুসান বলেন, ‘বিয়ের এক বছর যেতেই কি আপনি বিরক্তির সঙ্গে ঘরের দরজা লাগান? সেই সব ছোট ছোট কাজ করা ছেড়ে দেন যা আপনি আগে খুশি হয়ে করতেন? নাকি এখন আপনার সঙ্গীর ওপর থেকে আবেগি প্রেমের প্রভাব কমে গেছে? যদি এগুলো আপনার কাছে খুব স্বাভাবিক মনে হয় তাহলে আজই তা করা বন্ধ করুন। বরং মূল্য দিন সম্পর্কের। হাতের কাছের কাজগুলো একসঙ্গে করার চেষ্টা করুন।’